বিদেশি জাহাজ, অন্যের জমি নিজের বলে বিক্রি এবং হীরার লোভ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাট করাসহ নানাভাবে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া মেজবাহ নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় র্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রতারক মেজবাহর বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাটে। তার বাবা স্থানীয় একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। মেজবাহ গত কয়েক বছরে নানা ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
প্রতারণার বর্ণনা দিয়ে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক বলেন, ২০০৮ সালে ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হন মেজবাহ। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন, তা ফেরত দিতে না পেরে চাপে পড়েন। তখনই তার মাথায় প্রতারণার বিষয়গুলো আসে। এরপরই প্রতারণার শুরু করেন মেজবাহ। এ সময় লোকজনকে জাহাজের ছবি দেখিয়ে নিজে সেটি কিনেছেন বলে তাদের জানান। এরপর জাহাজের স্ক্র্যাপ ব্যবসায় অংশীদার করার কথা বলে অনেক টাকা হাতিয়ে নেন।
আরও পড়ুন# ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা!
এর মধ্যে আব্দুল হাকিম নামে একজনের কাছ থেকে ২ কোটি ২০ লাখ, আজগর আলীর কাছ থেকে ৭০ লাখ, মো. রেজওয়ানের ৪০ লাখ, ইব্রাহিমের ২০ লাখ, মো. রুমানের ৬৩ লাখ, শহিদুল ইসলামের ৯০ লাখ, জাহিদুল ইসলামের ৫০ লাখ, আসাদের ৫০ লাখ, বেলালের ৫০ লাখ ও শাহজাহানের ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মেজবাহ।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব আরও জানায়, মেজবাহকে যেন ভুক্তভোগীরা সহজে খুঁজে না পান, সেজন্য তিনি নিজ জেলার স্থায়ী ঠিকানায় অবস্থান না করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতেন। এভাবে তিনি বেশ কয়েকবার জায়গা বদল করেছেন।
এছাড়াও তিনি তার মোবাইল সিম ঘন ঘন পরিবর্তন করতেন, যাতে তার সঙ্গে কেউ সহজে যোগাযোগ করতে না পারে। এমনকি কিছুদিন আগে তিনি হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছেন যেন তাকে কেউ চিনতে না পারে। মেজবাহর ২০০৮ সালের চেহারার সঙ্গে বর্তমান চেহারার অনেক পার্থক্য বিদ্যমান বলেও জানান র্যাব ৭ এর অধিনায়ক।
তার বিরুদ্ধে নানা সময় একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মেজবাহর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের হাটহাজারী এবং কোতোয়ালি থানায় প্রতারণার মোট ২২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া আদালত ১১টি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন।