ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রকৌশল বিদ্যা কেন পড়বেন!

প্রকৌশল বিদ্যা বা ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অধ্যয়ন আমাদের দেশের ছাত্রদের জন্যে একটি স্বপ্নের নাম। এই দেশে প্রকৌশল বিদ্যা বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকে বেশ গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করা হয়। সামাজিকভাবে একজন প্রকৌশলী বা ইঞ্জিনিয়ার অনেক বেশি গুরুত্ব পান অন্য যেকোনো পেশায় কর্মরত মানুষদের থেকে। শুধু কি তাই? বিদেশের মাটিতেও ইঞ্জিনিয়ারদের দেখা হয় আলাদা দৃষ্টিতে। কাজের ক্ষেত্রেও দেওয়া হয় বাড়তি সুযোগ সুবিধা। চলুন আজ জেনে নিই, ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রকৌশল বিদ্যা নিয়ে পড়াশোনার কিছু সুযোগ সুবিধা নিয়ে।
ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রকৌশল বিদ্যা কী?
ইঞ্জিনিয়ার অর্থ প্রকৌশলী। আর ইঞ্জিনিয়ারিং মানে হচ্ছে প্রকৌশলের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করা। বিশ্বায়নের এই যুগে ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। আর এ কারণেই বাড়ছে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার গুরুত্ব। নিশ্চিত কর্মসংস্থানের একমাত্র এবং পরীক্ষিত মাধ্যম হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা। সারা বিশ্বে জেনারেল শিক্ষার চেয়ে কারিগরি শিক্ষা বেশি জনপ্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ। কারণ একজন প্রকৌশলীই পারেন আমাদের জীবনের বড়ো বড়ো সমস্যাগুলোর স্মার্ট এবং সহজ সমাধান করতে। আমাদের জীবনের জন্যে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি সবই মূলত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফসল! উঁচু উঁচু দালান, গাড়ি, বাড়ি, ফ্রিজ, টিভি, লাইট, ফ্যান, কম্পিউটার থেকে শুরু করে পরনের কাপড়, সবকিছুর পেছনেই আছে প্রকৌশল বিদ্যার অবদান।
প্রকৌশল বিদ্যা ও বাংলাদেশ :
১৮৭৬ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ রাজ ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে। এর উদ্দেশ্য ছিল সেই সময়কার ব্রিটিশ ভারতের সরকারি কাজে অংশগ্রহণকারী কর্মচারীদের কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা। ঢাকার তৎকালীন নওয়াব খাজা আহসানউল্লাহ এ বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহী হন এবং মুসলমানদের শিক্ষাদীক্ষায় অগ্রগতির জন্য তিনি ঢাকার সার্ভে স্কুলটিকে ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বার্থে এক লক্ষ ১২ হাজার টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
তার জীবদ্দশায় তা সম্ভব হয়নি। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র নওয়াব সলিমুল্লাহ ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। তার অনুদানে এটি পরবর্তীতে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষালয় হিসেবে প্রসার লাভ করে এবং তার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯০৮ সালে বিদ্যায়নটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল।
আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স দিতে শুরু করে পুরকৌশল, তড়িৎকৌশল এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগে। শুরুতে একটি ভাড়া করা ভবনে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলার শিল্পায়নের জন্য তৎকালীন সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
তৎকালীন সরকার নিযুক্ত একটি কমিটি যন্ত্র, তড়িৎ, কেমি ও কৃষি প্রকৌশলে ৪ বছর মেয়াদী ডিগ্রি কোর্সে ১২০ জন ছাত্রের জন্য ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপন এবং স্কুলটিকে তৎকালীন পলাশী ব্যারাকে স্থানান্তর করে পুর, যন্ত্র, ও তড়িৎ কৌশলে ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সে ৪৮০ জন ছাত্র ভর্তির সুপারিশ করেন।
১৯৪৭ সালের মে মাসে সরকার ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন ও ছাত্র ভর্তির জন্য বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের শিবপুরস্থ বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ঢাকায় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ১৯৪৭ এর আগস্ট মাসে এটিকে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রূপে উন্নীত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ হিসেবে। জনাব হাকিম আলী এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন।
আরও পড়ুন# গুচ্ছে সাবজেক্ট চয়েজ দেবেন যেভাবে!
১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকার এই কলেজটিকে অনুমোদন দেন এবং এটি তখন পুরকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল, যন্ত্র প্রকৌশল, কেমিকৌশল, কৃষি প্রকৌশল ও টেক্সটাইল প্রকৌশল বিভাগে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং পুরকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল ও যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা প্রদান করতে শুরু করে। তবে শেষ পর্যন্ত কৃষি ও টেক্সটাইলের পরিবর্তে ধাতব প্রকৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৫৬ সালে কলেজে সেমিস্টার প্রথা চালু হয় ও নতুন পাঠ্যক্রম অনুমোদিত হয়। ১৯৫৭ সালে ডিগ্রি কোর্সে আসন সংখ্যা ১২০ থেকে বাড়িয়ে ২৪০ করা হয়। ১৯৫৮ সালে কলেজ থেকে ডিপ্লোমা কোর্স বন্ধ করে দেয়া হয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালের ১ জুন তারিখে এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করে নাম দেয়া হয় পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (East Pakistan University of Engineering and Technology, or EPUET)। তৎকালীন কারিগরি শিক্ষা পরিচালক ড. এম. এ. রশিদ প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরে এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমানের নাম, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) রাখা হয়।
কম্পিউটার প্রকৌশল:
বর্তমান বিশ্বকে বলা হয় কম্পিউটারের বিশ্ব। আজকের এই যুগে কম্পিউটার ছাড়া একটি মুহূর্ত আমরা চলতে পারি না। অফিসিয়াল কাজ থেকে শুরু করে যে কোন গুরুত্বপূর্ণ জটিল জটিল সব কাজের সহজ সমাধান হিসেবে আছে কম্পিউটার!
১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি চালু করে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে সাধারণ ও বিশেষ কম্পিউটারের জন্য সফটওয়ার তৈরি করা, এমবেডেড মাইক্রোকন্ট্রোলারের জন্য ফার্মওয়ার লিখা, বিভিন্ন ভিএলএসআই চিপ ডিজাইন, বিভিন্ন এনালগ সেন্সর ডিজাইন, বিভিন্ন সার্কিট বোর্ড ডিজাইন এবং অপারেটিং সিস্টেম ডিজাইন ইত্যাদি। এর প্রধান কোর্স হচ্ছে প্রোগ্রামিং।
কম্পিউটার প্রকৌশল বললে অবধারিত ভাবে প্রথমেই চলে আসে প্রোগ্রামিং। প্রোগ্রামিং হলো কম্পিউটারকে কথা শুনানোর উপায়। কম্পিউটার যেহেতু মানুষের ভাষা বুঝেনা তাকে বোঝাতে হয় বিশেষ ভাষায় যাকে বলে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। তবে, এই কোর্সটি এতটা সহজ নয়। আপনাকে এই কোর্সটি যত্নবান হয়ে করতে হবে, তবেই আপনি এই ক্ষেত্রে নিজের উন্নতি করতে পারবেন। উল্লেখ যোগ্য কাজের ক্ষেত্র সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
- সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান
- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
- আইটি কনসাল্টেন্ট
- সফটওয়্যার ডেভেলপার
- ডাটাবেজ পরিচালক
- কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- কম্পিউটার সিস্টেম বিশ্লেষক
- কম্পিউটার নেটওয়ার্ক নির্মাতা
- ওয়েব ডেভেলপার
- তথ্য নিরাপত্তা বিশ্লেষক
- কম্পিউটার সিস্টেম ও ইনফরমেশন ম্যানেজার
- কম্পিউটার প্রোগ্রামার
তড়িৎ প্রকৌশল:
বর্তমান সময়ের বিদ্যুৎ শক্তির ওপর সবকিছু নির্ভরশীল। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা বিদ্যুৎ উৎপাদন সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিক মোটর, রাডার এবং ন্যাভিগেশন সিস্টেম, যোগাযোগ ব্যবস্থা, অটোমোবাইল, জাহাজ ও বিমানের বৈদ্যুতিক সিস্টেম প্রভৃতি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উৎপাদনের সাথে জড়িত থাকেন। পাওয়ার প্ল্যান্ট, শিল্প কারখানার যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক মোটর, অটোমোবাইল, এয়ারক্র্যাফ, স্পেস ক্র্যাফের ইগনিশন সিস্টেম এবং সব ধরণের ইঞ্জিনের ডিজাইন, উৎপাদন এবং পরিচালনা করে। এরা বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহারের উন্নত পদ্ধতি গবেষণা ও ডিজাইন করে। সাধারনত ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির সাথে তড়িৎচুম্বকীয়তত্ত্বের প্রয়োগ। উল্লেখ যোগ্য কাজের ক্ষেত্র সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
আরও পড়ুন# উদ্বোধনের অপেক্ষায় যেসব মেগা প্রজেক্ট!
সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ বিভাগ, সশস্ত্র বাহিনী, রেলওয়ে হাসপাতাল ইত্যাদিতে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য চাকুরীর সুযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ সংস্থা, টেলিযোগাযোগ ও অপটিক্যাল ফাইবার শিল্প, ন্যাভিগেশনাল সরঞ্জাম উৎপাদন শিল্প, এরোস্পেস শিল্প, অটোমোবাইল শিল্প, নিমার্ণ ও স্থাপত্য সংস্থা ইত্যাদিতে চাকুরির সুযোগ রয়েছে।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং:
বাংলাদেশে চাকরির বাজারে বর্তমানে যে কয়টি বিষয়ের গ্রাজুয়েটদের সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশে রয়েছে চাকরির বড় বাজার। সরকারের বিভিন্ন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে স্থাপিত দেশী-বিদেশী টেক্সটাইল মিল, বিভিন্ন বায়িং অফিস, বুটিক হাউস, ফ্যাশন হাউস, গার্মেন্ট শিল্পে ও টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে বিভিন্ন পজিশনে কাজের সুযোগ রয়েছে। আর যারা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ কে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করেছেন তারা এই দেশের ই টেক্সটইল ইঞ্জিনিয়াররা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশ কে টেক্সটাইল সেক্টরের পরবর্তি চীন হিসেবে ঘোষনা করেছে। তাই এই ক্ষেত্রটি আমাদের দেশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা। উল্লেখ যোগ্য কাজের ক্ষেত্র সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি দুজায়গাতেই রয়েছে চাকরির সুব্যবস্থা।
- সরকারি বিভিন্ন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ তো আছেই সাথে বেসরকারি পর্যায়ে স্থাপিত টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছে অবারিত সুযোগ।
- গার্মেন্টস শিল্পেও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা রয়েছে।
- বিভিন্ন বায়িং অফিসে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করে চলেছে। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের মূল জায়গা হিসেবে বিভিন্ন টেক্সটাইল শিল্প প্রতিষ্ঠানকেই বিবেচিত করা হয়।
পুরকৌশল বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং:
আমাদের সামনে আমরা যা কিছু দেখছি প্রায় সবই আসলে পুরকৌশলের অংশ। পুরকৌশলী বা সিভিল ইঞ্জিনিয়াররাই আমাদের সভ্যতার কারিগর। মানুষের বসবাসের অনুপযোগী একটি জায়গাকে বাসোপযোগী করে তোলার মূল কাজ পুরকৌশলীদের। মূলত চারটি ভাগে পড়ানো হয় এই বিষয় স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং। একটি ভবনের নকশা করা থেকে শুরু করে নকশা বাস্তবায়ন সবকিছু শেখানো হয় স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।
নিচে পুরকৌশলীদের কাজের ক্ষেত্র নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক!
আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে অল্প কিছুদিন হলো। আমাদের দেশ দ্রুত উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নগর ও ভৌত কাঠামোগত উন্নয়নে আমরা জোর দিয়েছি। বিভিন্ন স্ট্রাকচারাল মেগা প্রজেক্ট যেমন মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু আমরা প্রায় তৈরি করে ফেলেছি। এসব ছোটো-বড়ো প্রজেক্ট সামলানোর ভার কিন্তু পড়বে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের ঘাড়েই! কাজেই পুরকৌশল বিদ্যা বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হতে পারে প্রকৌশল বিদ্যার অন্যতম সেরা অপশনটি!
প্রকৌশল বিদ্যা নিয়ে পড়বেন কোথায়?
বাংলাদেশের প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনার জন্যে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ নিঃসন্দেহে বুয়েট (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) এছাড়াও দেশের তিনটি বিভাগীয় শহরে আছে তিনটি স্বতন্ত্র প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় যথাক্রমে-
- রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট।
- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুয়েট।
- চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চুয়েট।
এছাড়াও রয়েছে গাজিপুরে অবস্থিত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের আঁতুড়ঘর খ্যাত ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ডুয়েট। আছে ৮ টি টেক্সটাইল কলেজ, ৪ টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ৬ টি মেরিন অ্যাকাডেমি। এছাড়াও দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ। এসব অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে প্রতি বছর ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানো হয়। সরকারির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্বদ্যালয়েও ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়।
শেষ কথা:
এই দেশ এখনো উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের স্বপ্ন যাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা। একজন ইঞ্জিনিয়ার শুধুই একজন ইঞ্জিনিয়ার নন, বরং স্বপ্নদ্রষ্টা হয়ে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নতির ধাপগুলো পেরিয়ে। আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ তাই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। দেশে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে দেশকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন!