
‘সামান্য একটি মোবাইলের জন্য আমার একমাত্র বড়ো ছেলে পৃথিবী থেকে চলে গেল। এখন কাকে বাবা বলে ডাকব আমি?’ এমনই আর্তনাদ করছিল স্কুলছাত্র ফরহাদ হোসেনের বাবা আশরাফুল হক। নিজের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার বুক চাপড়ানো কান্না যেন কিছুতেই থামছে না।
সম্প্রতি একটি ফোন কিনে না দেওয়ার জন্য কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার দক্ষিণ কামালপুরে বাবা-মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আ’ত্ম’হ’ত্যা করে স্কুলছাত্র ফরহাদ হোসেন।
এই বিষয়ে মৃত ফরহাদ হোসেনের বাবা আশরাফুল হক জানান— ফরহাদ দীর্ঘদিন ধরে একটি মোবাইল কেনার জন্য তার কাছে টাকা চেয়ে আসছিল। তিনি ছেলেকে বলেছেন তার কাছে এখন টাকা নেই। সামনের কার্তিক মাসে কাজের উদ্দেশে তিনি ঢাকা যাবে। আর সেখানে কাজ করে টাকা উপার্জন করে তাকে ফোন কিনে দেবে। কিন্তু তার এই কথা ছেলে ফরহাদ কর্ণপাত না করে তার মায়ের (ফরহাদের মা) কাছে আবদার করে। বৃহস্পতিবার সকালেও সে মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য আবদার করে আর তাই তিনি তার স্ত্রীকে বলে ছেলেকে বোঝাতে।
তিনি এই কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং এর কিছুক্ষণ পর এলাকাবাসী তাকে জানায়, তার ছেলে ফরহাদ ফাঁস দিয়েছে। এই কথা শুনে তিনি দৌড়ে বাড়িতে যান এবং দেখেন ছেলেকে ফাঁস থেকে নামিয়ে এলাকাবাসী মাথায় পানি ঢালতেছে। পরে তাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান এবং সেখানে চিকিৎসক ফরহাদকে মৃ’ত ঘোষণা করে।
উল্লেখ্য, ফরহাদ বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার দক্ষিণ কামালপুর গ্রামের কৃষক আশরাফুল হকের ছেলে। সে কামালপুর মইনুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
এই ব্যাপারে ফুলাবাড়ী থানার ওসি ফজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, স্কুলছাত্রের লা’শ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে।