খবরশিক্ষা

রাবিতে শেখ কামালের জন্মদিন পালন!

আজ ৫ আগস্ট শুক্রবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামালের জন্মদিন পালিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আধুনিক খেলাধুলার পথিকৃৎ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১টায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল আলোচকের বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান বলেন, ২৬ বছর বয়সে শেখ কামাল নিষ্ঠুর হত্যাকানণ্ডের শিকার হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে একজন দেশের জন্য কতটুকু করতে পারেন? আমরা তার জীবনভিত্তিক আলোচনায় গেলে বুঝতে পারবো, এই সময়ের মধ্যে তার অর্জনগুলো কী?

আরও পড়ুন# প্রক্সি পরীক্ষার্থী প্রথম হলেন রাবিতে!

তিনি বলেন, শেখ কামাল ভালো খেলোয়ার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং একজন সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। এই কথাগুলো সবসময় বললেও, আমরা একটা কথা বলতে সবসময় ভুলে যাই যে, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন।

সামরিক বাহিনীতে শেখ কামালের বর্ণাঢ্য ও বিচিত্র সামরিক জীবনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত ৬১ জন সামরিক কর্মকর্তার মধ্যে শেখ কামাল ছিলেন একজন। পরবর্তীকালে প্রথম ব্যাচে তাদেরকে কমিশন দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শেখ কামাল সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হয়েছিলেন। ওই ৬১ জনের প্রশিক্ষণ শেষে যখন তাদের পোস্টিং দেওয়া হয়, তখন শেখ কামালের পোস্টিং হয়েছিলো সেনাবাহিনী প্রধানের এডিসি হিসেবে। তিনি এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছিলেন।

তিনি আরো বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে যোগদানকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। সেনাবাহিনীর চাকুরি তার জন্য উপযুক্ত নয় এমনটি  মনে করে তিনি ১৯৭২ সালের মাঝামাঝি সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ফেরত আসেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। শেখ কামাল সেনাবাহিনীতে না থাকলেও তার ভাই শেখ জামাল সেনাবাহিনীতেই ছিলেন এবং সেনাবাহিনীতে থাকাকালীনই তাকে হত্যা করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর পরিবার সম্পর্কে রটানো গুজবের বিষয়েও ব্যাখ্যা দেন তিনি।

আরও পড়ুন# পরীক্ষা দিলো বহিষ্কৃত দুই চবি শিক্ষার্থী!

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এই নশ্বর পৃথিবীতে সবকিছু শেষ হয়ে গেলেও মানুষের স্বপ্ন বেঁচে থাকে। আমি মনে করি, স্বপ্ন, সভ্যতা এবং ভবিষ্যৎ হচ্ছে মানুষের মনের গন্তব্য। কিছু মানুষ তাদের সময়কে অতিক্রম করে মানুষের মনে চিরস্থায়ী আসন করে নেন। সেরকমই একজন মানুষ হলেন আমাদের শেখ কামাল। মাত্র ২৬ বছর বয়সী একজন যুবক তার সময়কে অতিক্রম করে নিজেকে একটা অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

উপাচার্য আরও বলেন, ক্রীড়া, সংস্কৃতি এবং রাজনীতির মিশেল ঘটেছে শেখ কামালের জীবনে। তাই অল্প সময়ে তাকে ব্যাখ্যা করা কঠিন একটি কাজ। শেখ কামালকে জানতে হলে তাকে নিয়ে পড়াশোনা করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের আমি শেখ কামাল সম্পর্কিত তিনটা বই পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। প্রথমটি হলো, আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ‘শেখ কামাল যদি আজ বেঁচে থাকতেন’, দ্বিতীয়টি হলো, সুজাত মনসুরের লেখা ‘একজন শেখ কামাল’ এবং তৃতীয়টি হলো শরৎ বাবলার লেখা ‘শেখ কামাল: ক্রীড়াঙ্গনের ধূমকেতু’।

শারীরিক শিক্ষা ও ক্রিড়া বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. সালাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল- ইসলাম এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক (অবঃ) অবাইদুর রহমান প্রামানিক।

এসময় বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক- শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।