জাতীয়সন্দেশ

চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু, উঠতে হয় মই বেয়ে!

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে কাঠের মই বেয়ে সেতুটি পারাপার হতে হচ্ছে। প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুটি এখন দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠেছে।

উপজেলা এলজিইডির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে মিয়ারহাট বাজারে। এর পাশে থাকা আড়িয়াল খাঁ নদের ওপরে চরদৌলতখান ও শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য নির্মাণ করা হয় ব্রিজটি। ‘অনূর্ধ্ব একশ মিটার ব্রিজ উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় প্রায় চার কোটি টাকা খরচে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সরদার এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণের চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। যা এই বছরের জুনের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেতুটির তিনটি স্প্যানসহ মূল অবকাঠামো গত বছরই নির্মাণ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করেই ফেলে রাখা হয়। এতে দুই পাড়ের দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকায় কাঠের মই ব্যবহার করে চলাচল শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন# মানিকগঞ্জে গাঁজাসহ ১ যুবক আটক!

স্থানীয়রা জানান, দুর্ভোগ নিয়েই তারা কাঠের মই ব্যবহার করে ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হচ্ছেন। সম্প্রতি মই বেয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে এক শিশু নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। এতে ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী আঘাতের ভয় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন জানান, তিনি মোক্তারহাট এলাকা থেকে প্রতি সপ্তাহের দুই দিন মিয়ার হাটে মালামাল বেচাকেনা করতে আসেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই সেতুটির কাঠের মই বেয়ে ওপরে উঠতে খুব কষ্ট হয়। তাই এখন সপ্তাহে মিয়ারহাটে একবার আসেন।

মিয়ার হাট এলাকার বাসিন্দা হাদিয়া বেগম বলেন, সেদিন আমার তিন বছরের বাচ্চা নিয়ে আমি সেতু থেকে মই দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। সেতুর গোড়ায় মাটি না দেওয়ায় কারণে সেতুতে উঠতে অনেক কষ্ট হয়। যারা বয়স্ক তাদের আরও বেশি কষ্ট হয়।

মিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, মাটি থেকে সেতুর উচ্চতা প্রায় ১২ ফুটের বেশি। তাই সেতু দিয়ে উঠতে কষ্ট হয় বলে ঠিক মতো স্কুলে আসতে চায় না অনেক শিক্ষার্থী।

সেতুর সংযোগ সড়ক কেন নির্মাণ করা হচ্ছে না জানতে চাইলে কালকিনি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব এই সেতুর দুই পাড়ে মাটি ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।