
নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা যারা দেবেন তারাই নেমেছেন অনৈতিক কাজে। কুষ্টিয়ায় শিক্ষা দেবার কারিগর শিক্ষক অভিযুক্ত হয়েছেন এমনই এক ভয়ংকর অভিযোগে। জেলার কুমারখালীতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে (১২) যৌ’ন হেনস্থার অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. আব্দুল হালিম। তিনি উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
আজ (১১ অক্টোবর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোয় কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হালিমকে ওইদিন থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত সোমবার (১০ অক্টোবর) সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি হাতে পেয়েছি।
শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই শিক্ষক গত ৬ অক্টোবর জামিন পেয়েছেন বলে জেনেছি। তবে যতদিন মামলা চলমান থাকবে, ততদিন তিনি বরখাস্ত থাকবেন। বরখাস্তের এই সময় তিনি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে হাজিরা দেবেন।
এদিকে পুলিশ ও মামলার বাদী সূত্রে জানা যায়, টিসি দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই প্রধান শিক্ষক শিশুটিকে একাধিকবার যৌ’ন হেনস্থা করেন। সবশেষ গত ২৩ আগস্ট দুপুরে বিদ্যালয়ের স্টোররুমে নিয়ে শিশুটির স্প’র্শকাতর স্থানে হাত দেন তিনি। ওইদিন বাড়িতে এসে ওই ছাত্রী খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং কান্নাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে পরিবারের কাছে সে বিষয়টি জানায়। পরে এ ঘটনায় গত ২ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কুমারখালী থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা।
আরও পড়ুন : ধ’র্ষ’ণের মামলায় ৪ ফাঁসির আসামি হাইকোর্টে খালাস!
এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী ও শিক্ষার্থীর মা বলেন, লম্পট ওই শিক্ষক আমার মেয়ের সঙ্গে একাধিকবার অনৈতিক কাজ করেছে। থানায় মামলা করেছি। এমন প্রধান শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি। ঘটনার পর থেকে মেয়ে ভয়ে আর স্কুলে যায় না।
ঘটনার বিষয়ে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামান বলেন, ঘটনা জানাজানির পর গত ২৯ আগস্ট থেকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন না। ওই ছাত্রীও আসে না। প্রধান শিক্ষক দোষী হলে তার শাস্তি দাবি করছি।
অন্যদিকে এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমের মোবাইলফোনে কয়েকবার কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে তার স্ত্রী ও উত্তর মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিলকিস খাতুনের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনিও করেছেন একই রকম আচরণ।
কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লিটন দাস জানান, শিক্ষার্থী ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্তে জবানবন্দির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।