কেন আকাশ বা সূর্যের দিকে তাকালে হাঁচি আসে?

হাঁচি খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। আমাদের সর্দি-ঠান্ডা লাগলে হাঁচি কাশি দেই। ঘরে মরিচ পুড়লে হাঁচি দেই। আবার ধোঁয়া হতে কেমিক্যাল, ধুলোবালি হতে পরাগ রেণু, জীবাণু হতে ড্রপলেটা, গন্ধ হতে রান্না, অনেক কিছুতেই আমাদের হাঁচি আসে। তবে অনেকের আবার, সূর্য বা আকাশের দিকে তাকালেও হাঁচি আসে?
আর এই হাঁচিকে বলা হয় সূর্য-হাঁচি। আর একে ইংরেজিতে বলা হয় Autosomal Compelling Helio-Ophthalmic Outburst (ACHOO) syndrome।
তো এই সমস্যা যাদের আছে তারা সূর্যের দিকে তাকালে বা চোখের চারপাশে কোনো ইনজেকশন দেওয়া হলে এই হাঁচির উদ্দীপনা হয়। তবে এখনো এর নেপথ্যের সঠিক পদ্ধতি ভালোভাবে বোঝা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা যায়, ১৮-৩৫ শতাংশ লোক এই সমস্যায় ভোগেন।
আবার অনেকের ক্ষেত্রে অন্ধকার হতে আলোতে গেলে কিংবা সূর্যের দিকে তাকালে হাঁচি হয়! আর এই রকম আলো দেখে হাঁচি দেওয়াকে ফোটিক স্নিজ রিফ্লেক্স বলা হয়। বিজ্ঞানী এরিস্টটল এইজন্য নাকের উপর সূর্যের তাপকে দায়ী করতেন। আবার, ইংরেজ দার্শনিক ফ্রান্সিস বেকন ভেবেছিলেন সূর্যের আলোয় যে চোখের পানি হয়, তা নাকে গিয়ে হাঁচির উদ্রেক করে। কিন্তু ফিজিওলজি বা শারীরবিদ্যা অনুযায়ী তা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন# আবিষ্কার হলো ১৮ লাখ বছর আগেকার মানুষের দাঁত!
নতুন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুসারে— ট্রাইজেমিনাল নার্ভ হাঁচির স্টিমুলেশন বহন করে। ব্রেইনের ভেতর তা অপটিক বা চোখের নার্ভের কাছাকাছি থাকে। তীব্র আলোর অনুভূতি অপটিক নার্ভ দিয়ে বাহিত হবার সময় তা ট্রাইজেমিনাল নার্ভকেও স্টিমুলেট করে, ফলে হাঁচি হয়।
তবে এর ফলে কোনো গুরতর অসুস্থতা না হওয়ায় এই বিষয়ে তেমন বিশদ গবেষণা হয়নি। তারপরও ১৯৬০ সালে এক গবেষণায় দেখা যায়, এই হাঁচির বৈশিষ্ট্য আমাদের জিন বা বংশগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি অটোজোমাল প্রকট বৈশিষ্ট্য। তাই বাবা-মা যে কোনো একজনের থাকলে অর্ধেক সন্তানে এই বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পাবে।