
এক নারী শিক্ষার্থীর শরীরে গরম চা ঢেলে ও হাতে মোচড় দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আয়শা ইসলাম মীমের বিরুদ্ধে। তিনি ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার অনুসারী বলে জানা গেছে।
ইডেন কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী নিবাসের ৩১৩ নম্বর কক্ষে গতকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার সকালে ওই ছাত্রী নিবাসের রিডিং রুমে পড়তে যান ঐশী। সেখানে গিয়ে দেখেন প্রবেশমুখে একটি টেবিল বসানো রয়েছে। টেবিলটি বসিয়েছে অন্য একটি মহিলা কলেজের অবৈধ কয়েকজন ছাত্রী, যারা মীমের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ইডেন কলেজের ছাত্রীনিবাসে বসবাস করে আসছেন। প্রবেশমুখে টেবিল বসানোর কারণে রিডিং রুমে ঢুকতে অন্য ছাত্রীদের সমস্যা হচ্ছিল। তা দেখে ঐশী বহিরাগত ছাত্রীদের টেবিলটি সরাতে বলেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি তারা।
এরপর ঐশী তাদের বলেন, ‘আপনারা অবৈধ হওয়ার পরও ইডেনের হলে থাকেন কেন? আবার টেবিল সরাতে বললেও সরান না।’ এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীরা ঐশীকে ‘দেখে নেওয়া’র হুমকি দিয়ে চলে যান।
আরও পড়ুন# চাকরির কথা বলে তরুণীকে গণধ’র্ষণ, গ্রেফতার ৩
সন্ধ্যায় হলের ৩১৩ নম্বর কক্ষে বসে চা পান করছিলেন ঐশী। এসময় ওই (বহিরাগত) ছাত্রীদের নিয়ে তার কক্ষে আসেন অভিযুক্ত আয়শা ইসলাম মীম। কেন তার মেয়েদের (অনুসারীদের) সঙ্গে তর্কে জড়ালো, এ নিয়ে ঐশীকে বকাঝকা ও গালাগাল করতে থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে গায়ে গরম চা ঢেলে দেন ও হাতে মোচড় দিয়ে তিনিও ‘দেখে নেওয়ার হুমকি’ দিয়ে চলে যান।
কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্রলীগ নেত্রী আবার ঐশীর কক্ষে আসেন এবং জানিয়ে যান, এ ঘটনা বাইরে জানাজানি হলে তিনি ঐশীকে দেখে নেবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আয়শা ইসলাম মীম বলেন, আমার একজন মেয়ের (অবৈধভাবে থাকা ছাত্রী) সঙ্গে লিগ্যাল একজনের (সাধারণ ছাত্রী) কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর বেশি কিছু হয়নি। গরম চা ঢেলে দেওয়ার মতো কিছুই ঘটেনি।
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, আমি সন্ধ্যার পরে (মঙ্গলবার) ইডেন কলেজে যাবো৷ বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সাংগঠনিক নেওয়া হবে৷
ইডেন কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী নিবাসের হল সুপার নাজমুন নাহার বলেন, এ বিষয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আজ আমাদের মিটিং আছে। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আগামীকাল বিস্তারিত জানা যাবে।