জাতীয়সন্দেশস্বাস্থ্য

গিয়েছিল হাত ভাঙার চিকিৎসা করতে, ফিরল লা’শ হয়ে!

সম্প্রতি ঢাকার সাভারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে হাত ভাঙার চিকিৎসা করতে গিয়ে, লা’শ হয়ে ফিরল এক কিশোর। এছাড়া অভিযুক্ত হাসপাতাল কতৃপক্ষ ভুক্তভোগীর পরিবারকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার অভিযোগও ওঠেছে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরের নাম তাপস মণ্ডল (১৪)। সে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার কান্দাপারা গ্রামের শশী মন্ডলের ছেলে এবং সে স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। গত শুক্রবার বিকেলে তাপস ফুটবল খেলতে গিয়ে তার হাতের হাড় ভেঙে ফেলে।

পরে তাপসকে নিয়ে স্থানীয় ফার্মাসি ব্যবসায়ী আবুলের কাছে যায় এবং আবুল তাকে নিয়ে সাভারের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেয়। এরপর স্বজনরা আবুলের পরামর্শে সেন্ট্রাল হাসপাতালে যায় এবং সেখানে ৩৫ হাজার টাকাতে তাপসের হাতের অপারেশন এর সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর চুক্তি অনুসারে শনিবার রাত ১০ টার দিকে অপারেশনের জন্য তাপসকে অ্যানেস্থেসিয়া পুশ করা হলে তাপস অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর মারা যায় সে।

আরও পড়ুন# পঞ্চগড়ে উদ্ধার করা হয়েছে ১৬ কেজির কষ্টিপাথর সদৃশ একটি মূর্তি!

নিহত তাপসের মামা উত্তম কুমার বলেন— ‘আমার ভাগ্নের ফুটবল খেলতে গিয়ে হাত ভেঙে গেছে। হাতের অপারেশন করতে মানুষ মারা যায় কীভাবে? কালিয়াকৈরের পার্শ্ববর্তী থানা ধামরাইয়ের আইঙ্গন বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী আবুল এই হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেয়। আমাদের সঠিক পরামর্শ দেওয়া হলে আমরা পঙ্গু হাসপাতালে নিতাম। তাহলে হয়তো আমার ভাগ্নে বেঁচে থাকত। আর ডাক্তার আসার আগেই রাত ১০টার দিকে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয়। পরে রাত ১২টার দিকে অপারেশনের ডাক্তার এলে তিনি বলেন অপারেশন করা যাবে না, সমস্যা আছে। পরে ডাক্তার চলে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে আইসিইউতে নিতে হবে। পরে তাপসের অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সাভারের সুপার ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানেই তাপস মারা যায়।’

তাছাড়াও কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহত তাপসের বাবা শশী মন্ডল বলেন, ‘আমার ছেলে আমার কাছে যা চাইত কষ্ট হলেও দিতাম। কোনো কাজ করতে দিতাম না। বলতাম তুই শুধু লেখাপড়া কর। আমার আদরের ছেলেটাকে ওরা ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলল। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’

এই বিষয়ে সাভার সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. অহিদ জানান, তিনি তখন হাসপাতালে ছিল না। আর এই বিষয়ে তিনি কিছু জানেও না। তাপসকে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়েছেন ডা. কামরুজ্জামান। তবে ডা. কামরুজ্জামানের পক্ষ হতে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ‘বিষয়টির কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ না পেলেও আমরা প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।’

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।