নিজেরাই আত্মসাৎ করল যমুনা ব্যাংকের সাড়ে ১১ কোটি টাকা!
১২ জনকে আসামী করে চার্জশিট

চট্টগ্রামে অবস্থিত নুর চেম্বার নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ব্যাংকটিরই সাত কর্মকর্তা ও পাঁচ দালাল মিলেমিশে হাতিয়ে নিয়েছে সাড়ে এগারো কোটি টাকা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চালালে বিষয়টি প্রকাশিত হয়। ১২ জনকে আসামি করে সম্প্রতি চার্জশিট অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করে।
দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর। এরপর তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা শেষে চার্জশিট দেয় কমিশন। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক শিগগিরই চার্জশিট আদালতে দাখিল করবেন বলে জানা গেছে।
অনুমোদিত চার্জশিটে যারা আসামি
যমুনা ব্যাংক লিমিটেডেরই ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী, ফাস্ট এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রায়হান, ব্যাংকটির চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আজম, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অপর শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের ভাটিয়ারী শাখার সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার সাহাব উদ্দিন, সুব্রত সেবক বড়ুয়া ও মো. গোলাম সরোয়ারুল হক, গ্রাহক নুর চেম্বারের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, তার ভাই মো. মজিবুর রহমান মিলন, সীতাকুন্ডের সলিমপুর এলাকার মৃত মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিন কুসুম, কদমরসুল এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে মো. আজাদ রহমান এবং একই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ জানে আলম।
আরও পড়ুন: হুন্ডিতে এক বছরে পাচার ৭৫ হাজার কোটি টাকা!
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে প্রকাশ হয়, ২০০৬ সালে ভাটিয়ারীর শীতলপুর এলাকায় সরকারের ৫৪.৬৯ শতক জমি যমুনা ব্যাংকের ভাটিয়ারী শাখায় বন্ধক রাখেন নগরীর ডবলমুরিং এলাকার নুর চেম্বার নামে একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি জমি বন্ধক রাখার নিয়ম নেই। তা সত্ত্বেও ব্যাংকটির তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আজমসহ সাত কর্মকর্তার যোগসাজশে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৮ টাকা ঋণ পাইয়ে দেন তারা। এসব টাকা পরিশোধের নির্ধারিত সময় থাকলেও তা না করে বরং এই সাত কর্মকর্তাসহ ১২ জন মিলে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ বিষয়ে ২০১৬ সালে দুদকে একটি অভিযোগ জমা হয়। এরপর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এ অনুসন্ধানের জন্য পাঠানো হয়। পরে দুদকের তিন সদস্যের গঠিত টিম দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পায়।
মামলা হবার পর ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে দুদক। তারা হলেন— যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের ভাটিয়ারী শাখার সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার সাহাব উদ্দিন, সুব্রত সেবক বড়ুয়া, মো. গোলাম সরোয়ারুল হক, মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী ও মোহাম্মদ রায়হান। বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছেন।
আরও পড়ুন : রিজার্ভ ঠেকেছে ৩৭ বিলিয়ন ডলারে!