
পরপুরুষ দেখবে, তাই গুরুতর অসুস্থ অবস্থাতেও নেওয়া হলো না হাসপাতালে। হবিগঞ্জের মাধবপুরে পুলিশের হস্তক্ষেপে জন্মদাতা বাবা ও সৎমায়ের নিষ্ঠুর আচরণ থেকে মুক্ত করে তাকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে শেষ রক্ষা হলো না ফাহমিদার (১৮)। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মাধবপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক শাহজিবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোয়ার্টার গোমতি বিল্ডিংয়ে স্টাফ আলী আকবরের বাসার একটি কক্ষ থেকে পাঁচ মাস ধরে অবরুদ্ধ থাকা ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন।
সামান্য জ্বর হওয়ার অজুহাতে ১৮ বছরের মেয়েটিকে বিনাচিকিৎসায় একটি কক্ষে অনাহারে-অর্ধাহারে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে জন্মদাতা পিতা আলী আকবর ও সৎ মায়ের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন# সরিষাবাড়িতে সমকামী বিয়ে হওয়া নিয়ে তোলপাড়!
সেবা-যত্ন না থাকায় ফাহমিদার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে গিয়েছিল বলে জানান ডাক্তার সাবরীনা সুলতানা। মেয়েকে পরপুরুষ দেখে ফেলবে- এই জন্য চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে ঘরে রেখে চিকিৎসা করানোর কথা জানিয়েছেন ফাহমিদার বাবা আলী আকবর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেশী বলেন, ‘ফাহমিদার বাবা আলী আকবর একাধিক বিয়ে করেছে এবং সৎ মা ছিলো মেয়েটির প্রতি পুরোপুরি উদাসীন। সে কোনো খবরই নিতো না ফাহমিদার। ’
মাধবপুর থানার ওসি এই অমানবিকতার খবর পেয়ে চিকিৎসক ডা. সাবরিনা সুলতানাসহ ওই বাসায় উপস্থিত হয়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুল্যান্স এনে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট উসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এতে সহযোগিতা করেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থানীয় মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হুমায়ুন কবীর, ডা. সাবরিনা ও স্থানীয় প্রশাসন।