টিপস এন্ড ট্রিকসফিচারলাইফস্টাইলস্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল

পুত্রবধূর সাথে সম্পর্ক ভালো রাখার জাদুকরী উপায়!

আমাদের বাঙালি সমাজে একটি সাধারণ সমস্যা হলো শাশুড়ি-পুত্রবধূর সম্পর্ক। যে সম্পর্কের সাথে উভয়কেই কাটাতে হয় জীবনের অনেকটা সময়। অথচ, বেশিরভাগ শাশুড়ি ও পুত্রবধূর সম্পর্কই হয় সাপে-নেউলে। একজনের অন্যদের ওপর তুমুল ক্ষোভ। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুত্রবধূর চেয়ে শাশুড়ির ভূমিকাই বেশি। যেন নিজের ছেলের জীবনে অন্য মেয়ের উপস্থিতি মানতেই পারেন না। তবে পুত্রবধূদেরও রয়েছে নানা সমস্যা। সেসব নিয়ে অন্য একদিন বলব। আজকে বরং একজন শাশুড়ি কীভাবে পুত্রবধূর সাথে সু-সম্পর্ক রাখবেন সেই আলোচনাই করি।

একটি মেয়ের বিয়ের পর মা-বাবার ঘর খালি হয়, অন্যদিকে পুত্রবধূর আগমনে ঘর ভর্তি হয়। কিন্তু, তা সব শ্বাশুড়ির ক্ষেত্রে সুখের হয় না। এর অন্যতম কারণ নিজের সংসারে অন্য নারীর প্রবেশ খুব সহজে না মানতে পারা। আর দ্বন্দ্বটা মূলত এখান হতেই শুরু হয়। তবে, এই গতানুগতিক আক্রোশের সম্পর্ক হতে বের হয়ে এসে পুত্রবধূর সাথে সু-সম্পর্ক গড়া খুব একটা কঠিন নয়। পুত্রবধূ আপনার মেয়ে নয়, আবার আপনি তার মা নয়। এছাড়াও আপনারা একে অপরের প্রতিযোগীও নয়। পুত্রবধূ ভালো থাকলে আপনার আদরের ছেলেও ভালো থাকবে। আর শ্বাশুড়িরা সংসারে তুলনামূলক পুত্রবধূর তুলনায় অভিজ্ঞ হয়। একজন মা বাবা ছেড়ে আসা মেয়ের হুট করে নতুন পরিবেশে মানাতে সময় লাগে। আর এই সময়টা শ্বাশুড়ি সহায়তা করলে সম্পর্ক মধুর হয়। তাই সব সময় যে বিষয়গুলো একজন শ্বাশুড়ি মনে রাখা জরুরি—

১| পূত্রবধূকে স্পেস বা জায়গা দিন—

অধিকাংশ শ্বাশুড়িই তার ছেলের গুরুত্ব প্রত্যাশা করেন। কিন্তু যখন ছেলে তার বউকেও গুরুত্ব দেয় তখন শ্বাশুড়ি মানতে পারে না। আর এখানেই শুরু হয় সম্পর্কের ফাটল। তাই পুত্রবধূকে কিছুটা স্পেস বা দিন। আপনার ছেলের বিয়ের পর তার জীবনে তার স্ত্রীও যোগ হবে। এটাই স্বাভাবিক। আর নতুন সদস্য যোগ হলে জীবন যাত্রাতেই পরিবর্তন হবে। তাই ছেলে যদি তার স্ত্রীকে গুরুত্ব দেয় তবে তা নিয়ে হিংসা করবেন না। এক্ষেত্রে আপনি স্ত্রী হিসাবে আপনার স্বামীর কাছে কী কী আশা করেন বা করতেন, সেগুলো ভেবে দেখতে পারেন। এইজন্য নতুন দম্পতি বা আপনার ছেলে-পুত্রবধূকে নিজেদের মতো করে থাকার সুযোগ দিন।

২| আপনার সিদ্ধান্ত পুত্রবধূর ওপর চাপিয়ে দেবেন না—

অনেক শ্বাশুড়িই নিজের পছন্দ-অপছন্দ পুত্রবধূর ওপর চাপিয়ে দেয়। যা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাজে ভূমিকা রাখে। যেহেতু প্রত্যেক ব্যক্তিরই নিজস্ব পছন্দ ও অপছন্দ রয়েছে। তাই আপনার ছেলে-পুত্রবধূর ও নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ থাকবে স্বাভাবিক। তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে আপনি ঢুকবেন না এবং তাদের ওপর নিজের মতামত চাপিয়ে দেবেন না। তবে, যদি তারা নিজ হতে কোনো পরামর্শ চায়, সেক্ষেত্রে আপনি পরামর্শ দিতে পারেন।

আরও পড়ুন# হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে যে ৫ অভ্যাস!

৩| পার্থক্য মেনে নিন—

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনেককিছু বদলায়। তাই আপনার সাথে পুত্রবধূর মিলবে না স্বাভাবিক। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি, মানসিকতা, সাজ-পোশাক, জীবনযাপন পুত্রবধূর সাথে মিলবে না। আর এই পার্থক্য মেনে নিন। আপনার পুত্রবধূ কী পোশাক পড়ল, কেমন সাজল! তার জীবনযাপন কেমন, এই নিয়ে সমালোচনা ও কটুক্তি করা বাদ দিন। আপনি হয়তো আপনার পছন্দ-অপছন্দ তাকে বলতে পারেন, তবে তা চাপাতে পারেন না। কারণ পুত্রবধূ আপনার সম্পত্তি না। তিনি আলাদা একটা সত্ত্বা।

৪| পুত্রবধূর প্রশংসা করুন—

অধিকাংশ শ্বাশুড়িই পুত্রবধূর প্রশংসা করা দূরে থাক, তার দোষ খুঁজে বেড়ায়। একটা মানুষ দোষ গুণ মিলেই হয়৷ স্বাভাবিকভাবেই আপনার পুত্রবধূরও দোষ-গুণ থাকবে। তার ভালো কাজের প্রশংসা করুন এবং ভুল কাজগুলোকে নরম ভাবে বুঝিয়ে বলুন বা শুধরে দিন। তাকে বোঝান আপনি তার শত্রু নন, আপনি তার বন্ধু।

৫| অন্যের সাথে পুত্রবধূর তুলনা করবেন না—

আপনার পুত্রবধূ হয়তো ভালো মন্দ মিশিয়ে। এটাই স্বাভাবিক। তবে তার সাথে আপনার নিজের মেয়ে কিংবা অন্য কারও তুলনা করবেন না। এতে করে সে ও আপনার সাথে অন্যের তুলনা করবে। মনে রাখবেন আপনি তার দায়িত্বশীল কেউ নন, যে তাকে আপনি শাসন করবেন। তার অভিভাবক তার বাবা-মা ও আপনার ছেলে। সেটা আইনগত হোক আর ধর্মীয়। তাই পুত্রবধূর সাথে অভিভাবকসুলভ আচরণ করা পরিহার করুন।

তাছাড়াও অনেক শ্বাশুড়ি মনে করেন, পুত্রবধূ তার ঘরের সব কাজ করবে। কারণ তাকে তার ছেলে বিয়ে করেছে। পুত্রবধূর আপনাদের ওপর হয়তো দায়িত্ব রয়েছে, তবে আপনার সন্তানের তার চেয়ে বেশি দায়িত্ব। পুত্রবধূ নিজ ইচ্ছায় ঘরের কাজ না করলে, তা নিয়ে আপনি জোর করতে পারেন না। বরং আপনার শক্তি সার্মথ্য থাকলে নিজের কাজ নিজে করুন। আগে যেমন করতেন। অথবা, পুত্রবধূর একার ওপর সব কাজ না চাপিয়ে দুইজনে সমান ভাবে কাজ করুন। এতে পুত্রবধূর সাথে আপনার সম্পর্ক দৃঢ় হবে।

যাই হোক, আজকের মতো এখানেই। আর এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং এই ধরনের আরও আর্টিকেল পেতে অনুলিপির সাথেই থাকুন।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।