অস্থিরতা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে কোনো নিয়ম না মেনেই, কোনো সম্পর্ক না মেনেই। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শুধুমাত্র প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার সেকেন্দার আলী বাদশাকে নিজের ছেলেসহ চারজন মিলে হ’ত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
হত্যাকাণ্ডটি চার বছর আগের। যার আসামি জামাত আলীকে (৬৩) সাদুল্যাপুরের বৈষ্ণবদাশ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এরপর গাইবান্ধা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য প্রকাশ পায়। সংবাদ সম্মেলনে এই বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।
আদালতে দেয়া জামাত আলীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে তিনি জানান, জামাত আলী, মামলার বাদী সেকেন্দার আলী বাদশার ছেলে জাহিদুল ইসলাম, আব্দুল মোন্নাফ ও আব্দুল আজিজসহ চারজন মিলে ২০১৮ সালের ৩ মে সকালে সেকেন্দার আলী বাদশাকে হ’ত্যার পরিকল্পনা করে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহিদুলের বাবা বাদশা বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে একা বসেছিল। সেসময় ওই চারজন সেখানে যায়। আসামি মোন্নাফ গেঞ্জি দিয়ে ভুক্তভোগীর গলা পেঁচিয়ে মুখ চেপে ধরে এবং বাকি আসামিরা তাকে তুলে সেখান থেকে ইউনুছ আলীর বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে পাঁচ থেকে ছয় মিনিট নাক-মুখ চেপে ধরায় বাদশা হাত-পা নড়াচড়া বন্ধ করে। তার মৃ’ত্যু হয়েছে ভেবে আসামিরা বাঁশঝাড়ের ভেতর একটি নালায় ফেলে রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে গ্রেফতার দুই ভুয়া পুলিশ!
পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পরদিন বিকেলে জামাত আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদশাকে জীবিত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে জামাত আলীসহ এলাকার লোকজন বাদশাকে বাড়িতে নিয়ে গলে সেখানে তার মৃ’ত্যু হয়। পরে ২০১৮ সালের ২০ জুন বাবাকে হ’ত্যার অভিযোগ এনে আইয়ূব আলী (৩২), রানু মিয়া (৩০), ইউনুস আলী (৩৫), মাহাবুর রহমান (৫৫), রফিকুল ইসলামসহ (৩০) পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে বাদশার ছেলে জাহিদুল বাদী হয়ে সাদুল্লাপুর থানায় হ’ত্যা মামলা করে। মামলায় সে খু’নের কারণ হিসেবে, তার বাবার সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কথা উল্লেখ করে।
মামলার পর্যায়ক্রমিক অবস্থা সম্পর্কে পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ বলেন, পুলিশ ও সিআইডির তত্বাবধানে মামলার সুরাহা না হওয়ায় ২০২২ সালের ৯ জুন দায়িত্ব পায় পিবিআই। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে গত ৩ সেপ্টেম্বর সাদুল্যাপুরের বৈষ্ণবদাশ এলাকা থেকে আসামি জামাত আলীকে গ্রেফতার করে পিবিআই। তাকে ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে তোলা হলে সে বাদশাকে হ’ত্যার ঘটনায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।