
প্রথম স্ত্রী দায়ের করেছিলেন মামলা। সেই মামলার বাদী সেজে স্বামীর জামিন করাতে যাওয়া দ্বিতীয় স্ত্রীকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত। এ ঘটনায় ওই নারীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। তবে তার আইনজীবী আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা করায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ওই নারীর নাম রুখসানা আক্তার। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের স্থলবাড়ী গ্রামের জহিরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিরাজগঞ্জ পারিবারিক আদালতে এ ঘটনা ঘটলেও আজ শুক্রবার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারি সাব্বির হোসেন জানান, জহিরুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে রুখসানাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ ঘটনায় দেনমোহর ও ভরণপোষণ দাবি করে প্রথম স্ত্রী রুবিনা আদালতে মামলা ঠুকে দেন। এ মামলার আসামি জহিরুল ইসলাম বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। বুধবার দ্বিতীয় স্ত্রী রুখসানা আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজেকে মামলার বাদী রুবিনা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আপস ও মীমাংসার কথা বলে কারাবন্দি স্বামীর জামিন চেয়ে আবেদন করেন। পাশাপাশি বিচারাধীন মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে চান।
আরও পড়ুন# ফাঁকা বাসায় ভুতুড়ে কাণ্ড, বিদ্যুৎ বিল আসলো ১১ লাখ টাকা!
শুনানিকালে বিচারক সহকারী জজ (পারিবারিক আদালতের জজ) লোকমান হাকিম বাদীর স্বাক্ষর এবং মামলার নথি ও কাগজপত্রের স্বাক্ষরে গরমিল দেখতে পান। এ অবস্থায় স্থানীয় সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কারাবন্দি জহিরুলের দুই শিশুসন্তানকে আদালতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তিনি নিশ্চিত হন আবেদনকারী মামলার বাদী রুবিনা নন, তার প্রকৃত নাম রুখসানা।
এরপর আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত রুখসানা আক্তারের বিরুদ্ধে সদর থানায়ীকটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রুখসানাকে ওই দিনই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এদিকে আদালত এ মামলার আইনজীবীদের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চাইলে, তারা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন পারিবারিক আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাব্বির হোসেন। এ ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।