লাইফস্টাইলস্বাস্থ্যস্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল

বর্ষা মৌসুমে পায়ের বিশেষ যত্ন!

আমরা দিন রাত ছুটে চলি। আমাদের এই ছুটে চলাকে সুন্দর করে আমাদের অবহেলায় থাকা পা। প্রত্যেকটা মানুষ নিজের ত্বক, হাত বা শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যেঙ্গের যতটা যত্ন করেন। ঠিক ততটাই অবহেলা করেন সুন্দর পা দুটোকে। শুষ্ক মৌসুমে যেমন পায়ের যত্ন জরুরী, তেমনি বর্ষা মৌসুমেও এর গুরুত্ব। কেননা, বর্ষার পানিতে পায়ে বিভিন্ন ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন, চুলকানি, কালো ছোপ, গন্ধ ও বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তো চলুন, জেনে নেওয়া যাক, বর্ষা মৌসুমে ঘরোয়া ভাবে পায়ের যত্নে কী কী করা যায়:

বর্ষা মৌসুমে পায়ের বিশেষ যত্ন

পা পরিষ্কার রাখা:

বর্ষা মানেই স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। সারাদিন অবিরাম বৃষ্টি। অনেক সময় এই বৃষ্টিতে দৌঁড়-ঝাপ করেই বাড়ি ফিরতে হয়। কিন্তু, বাড়ি ফিরে ত্বক বা অন্য অঙ্গের পরিচর্যা করলেও পা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। ফলে পায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। তাই, ঘরে ফিরেই একটি পাত্রে হালকা গরম পানি নিন। তাতে এক ফোঁটা স্যাভলন অথবা ডেটল মিশিয়ে নিন। এরপর এই পানিতে ৫-১০ মিনিট দুই পা ভিজিয়ে রাখুন। ভিজানো পা গুলোকে নরম লুফা বা কাপড় দিয়ে আস্তে আস্তে ঘষুন। এতে ফাঙ্গালের আক্রামণ থেকে যেমন রেহাই পাবেন, সেই সাথে পায়ের দুর্গন্ধ কমবে।

#আরও পড়ুন: ডিপ্রেশন কী এবং ডিপ্রেশন থেকে বের হবার উপায়?

পায়ের নখ ছোট রাখা:

আধুনিক ফ্যাশনের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা অনেকেই পায়ের নখ বড়ো রাখি। কিন্তু, পায়ের নখের সঠিক পরিচর্চা করার সময় থাকে না। আপনি যদি ব্যস্ত হোন, তবে পায়ের নখ ছোট রাখাই আপনার জন্য শ্রেয়। কেননা, খুব সহজেই নখে বিভিন্ন ধরনের ময়লা জমে তা ভোগান্তির কারন হয়।

এক্সফলিয়েট:

আমাদের সমস্ত শরীরে যেমন এক্সফলিয়েশনের দরকার আছে, ঠিক তেমনি পায়ের জন্যও এক্সফলিয়েট জরুরি। প্রতিদিন গোসলের সময় কিছু সময় নিয়ে পা ঘষে পরিষ্কার করা উচিত। এতে মৃত কোষগুলো খুব সহজেই দূর হয়।

পেডিকিউর করা:

পেডিকিউর শব্দটা শুনলেই মনে হয়, পার্লারে টাকা খরচ। কিন্তু, আপনি খুব সহজেই বাড়িতে পেডিকিউর করতে পারবেন। এইজন্য হাতের কাছে নিমপাতা থাকলে তা দিয়ে পানি ফুটিয়ে নিন। নিম পাতা না থাকলে লবণ দিয়েই পানি সিদ্ধ করে নিন। এরপর, পানির তাপ সহনীয় পর্যায়ে পৌঁছালে এর সাথে লেবুর রস ও বাসায় থাকা শ্যাম্পু মিশিয়ে নিন। এরপর এই পানিতে ১০-১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। পা ভিজানোর সময় হলে এইবার পিউমিস স্টোন বা বাজারে পাওয়া পায়ের লুফা দিয়ে গোড়ালি, পায়ের তলা ও সাইড ভালো করে পরিষ্কার করুন৷ এইবার পা শুকনো করে মুছে নিন আর একটি ভালো ক্রিম লাগয়ে নিন। হয়ে গেল পেডিকিউর।

কালো ছোপ দূরীকরণে:

বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পায়ে কালো কালো ছোপ। তবে চিন্তার কারন নেই, এই কালো ছোপ থেকে বাঁচাবে আপনার ঘরে থাকা উপাদানগুলোই। প্রথমে মসুর ডাল বাটা, ২ টা অ্যালমণ্ড বাটা, পরিমান মতো গরুর দুধ ও ১ চা চামচ গ্লিসারিন নিন। এরপর এগুলো ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি পরিষ্কার পায়ে ১০-১৫ লাগিয়ে রাখুন, শুকিয়ে গেলে দুধ দিয়ে ঘষে ঘষে তুলুন। এইবার পা দুটোকে হালকা গরম জলে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিন। সপ্তাহে দুইদিন করে এই নিয়ম মেনে চললে, পায়ের কালো ছোপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

#আরও পড়ুন: কোরবানির ইদে যেভাবে প্রস্তুতি নেবেন!

ফুট মাস্ক ব্যবহার করা:

মুখের পাশাপাশি আমাদের পায়েও মাস্ক লাগানো উচিত। ফুট মাস্ক ব্যবহারে পা হয় উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ।

পায়ের ক্লান্তি:

আমাদের শরীরের মতো পায়েরও ক্লান্তি রয়েছে। পায়ের এই ক্লান্তি দূর করতে ম্যাসাজ করুন। এতে করে সান ট্যান ও কমবে।

পা ফাঁটা ও গোড়ালির শক্ত চামড়ার যত্ন:

অনেকেরই বারো মাস পা ফাটে, গোড়ালির চামড়া শক্ত হয়। এক্ষেত্রে ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল ও নারকেল তেল সমপরিমাণে নিন। এগুলোর সাথে চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি পায়ের শক্ত চামড়ায় দিয়ে ঘষুন, যতক্ষণ না তেল শুকায়।

জুতা নির্ণয়:

জুতা নির্ণয়ের সাথেও পায়ের স্বাস্থ্য জড়িয়ে আছে। বর্ষা মৌসুমে সু বা কেসড টাইপ জুতা পরা কমিয়ে দিন। কেন না, এসব জুতা ভিজে তা পায়ে গন্ধ করে৷ এছাড়াও যদি অফিসের জুতা বা মোজা পরতেই হয়, তবে সুতির মোজা পড়ুন। চেষ্টা করুন বর্ষাকালে খোলামেলা জুতা পরার।

পায়ের ফাটা বা ইনফেকশন গুরুতর হলে নিকটস্থ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বর্ষার দিনগুলো ভালো কাটুক। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।