
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় পৃথিবীর দুই প্রান্তের দুই মানুষের। তারপর কথা বলতে বলতেই কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় আড়াই বছর। অবশেষে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিয়ে করে সংসারে আবদ্ধ হবেন। কিন্তু এ বন্ধনে বাধ হয়ে দাঁড়ায় ধর্ম। সেই প্রলয়ও অতিক্রম করেছেন তারা। অবশেষে বাংলাদেশি মেয়ে ফৌজিয়া হাসান অনন্যা এবং ইতালিয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের ছেলে রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তারা একসঙ্গে শুরু করেছেন জীবনের নতুন অধ্যায়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছেলে রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজ বর্তমানে অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের মায়ামি শহরে। সেখানে তিনি স্থায়ীভাবে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। তার বাবা রোডোল্ফো পেজ এবং মা ভিওনেট্টি পেজ। তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাদের আদিনিবাস ইতালিতে। অপরদিকে ফৌজিয়া হাসান অনন্যার বাড়ি বগুড়া হলেও বেড়ে ওঠা ঢাকার রামপুরায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছরই স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
অনন্যার বাবা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমরা চেয়েছি মেয়ে এবং ছেলের শান্তি। ছেলে খ্রিস্টান হওয়ায় আমাদের আপত্তি ছিল। কিন্তু তারা নিজেরা এটি মিটিয়ে ফেলেছে। ছেলে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে। আমি বিয়ের বিষয়ে ছেলের বাবা এবং মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের এ বিয়েতে কোনো আপত্তি নেই। ছেলের বাবা অসুস্থ থাকায় বাংলাদেশে আসতে পারেননি।”
তিনি আরও বলেন যে, বিয়েতে মোট ২০ লাখ টাকা কাবিন ধরা হয়েছে। ৩ লাখ নগদ টাকা উসুল করেছে। মার্কিন যুবক আগামী ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবে এবং আগামী ছয় মাসের মধ্যে তার মেয়েকে সেখানে নিয়ে যাবে।
পারিবারিক সূত্রে আরও জানা গেছে, রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজ ঢাকায় এসেছেন গত ২৭ জুলাই সকাল ৬টায় একটি ফ্লাইটে। এরপর বনানীর একটি হোটেলে ওঠেন তিনি। পদরদিন ২৮ জুলাই সকালে মেয়ের বাসায় যান এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। গতকাল বিকেলে রামপুরায় একটি রেস্টুরেন্টে রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজ খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
তার নতুন নাম দেয়া হয়েছে আহমেদ ফয়সাল। তবে আইনি জটিলতায় এখনই নাম পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি। পরে সে দিন সন্ধ্যায় অনন্যা ও পেজের গায়ে হলুদ এবং কাবিন হয়। আজ বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।