রমজানের আগেই ধস নামলো ছোলার দামে

রমজান মাস আসতে হাতে গোনা আর কয়েকদিন বাকি। ইতিমধ্যে বাজারের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও রমজান মাস আসার পূর্বে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে ক্রেতাদেরকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে ছোলার দামে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন পাইকারি বাজারে ছোলার দাম কমতে শুরু করেছে। মানভেদে গতকাল সোমবারে খাতুনগঞ্জ এর পাইকারি বাজারে ছোলা বিক্রি হয় দুই হাজার ৬০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকায়।
প্রতি কেজি ছোলার দাম পরে ৬৯ টাকা থেকে ৮০ টাকা। ছোলার মধ্যে সবচেয়ে ভালো ছোলা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ছোলা। গতকাল বাজারে অস্ট্রেলিয়ার ছোলা বিক্রি হয় প্রতি তিন হাজার টাকা মণ। সেই পাইকারি অনুযায়ী খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। প্রায় ১৫ দিন আগেও ছোলার দাম ছিল প্রতি মন তিন হাজার পাঁচশো টাকা।
তখন প্রতি কেজি ছোলা ছিল ৯০ টাকা। ছোলার দাম কমায় ব্যবসায়ীগণ বলেন, দুই কারণে ছোলার দাম কমেছে। এক. ভারত থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় ছোলা চলে আসে। দুই. স্থলবন্দর থেকেই দেশের বিভিন্ন বাজারে ছোলা পৌঁছে যায়।
ব্যবসায়িক মনে করেন এই দুই কারণেই ছোলার দাম কমে এসেছে। খাতুনগঞ্জ আড়তদার সুলাইমান বাদশা বলেন, ছোলার মণপ্রতি সবচেয়ে ভালো মানের ছোলা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায় বিক্রি করা হয়। অস্ট্রেলিয়ান ছোলার মণ প্রতি দাম ৩০০০ হাজার টাকা। কয়েকদিন আগে ওই ছোলার মণ প্রতিদাম ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
সোলায়মান বাদশা বলেছিলেন, ছোরলার দাম এত বেশি পরিমাণ বেড়ে যাবে কারো ধারণা ছিল না। ২০ থেকে ৩০ ট্রাক ছোলা চলে আসছে ভারত থেকে খাতুনগঞ্জে। এত বেশি পরিমাণ ছোলার চাহিদা বাজারে নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। জাহাজ দিয়ে সমুদ্রের পথে যারা ছলা এনেছেন আর্থিক লুষ খান পড়বেন তারা।
আশুতোষ মাহাজন পায়েল ট্রান্সের মালিক বললেন, ঋণপত্র জটিলতায় ছোলা আনতে সুযোগ পাচ্ছিল কেবল বড় শিল্প গ্রুপ বা ব্যাংকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরাই। সেই ধারণা পাল্টে এখন একসঙ্গে এত ছোলা আসায় বাজার পড়ে গেছে। ফলে প্রথমে যাঁরা বিক্রি করেছিলেন তাঁরা দাম পেয়েছেন, এখন উল্টো লস হচ্ছে। খাতুনগঞ্জে ছোলা বিক্রিতে যে ধস নেমেছে তার প্রমাণ মিলেছে বিভিন্ন আড়তে গিয়ে।
আরো পড়ুন: যে দেশে ঘুরতে গেলেই মিলবে নগদ টাকা
গতকাল খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ, ডাল, তেলসহ অন্য আড়তে ভিড় দেখা গেলেও ছোলার আড়তে বিক্রি নেই। সেসব আড়তের সামনে ট্রাকের লাইন ছিল খুবই কম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, পুরো বছরে ছোলার চাহিদা থাকে এক লাখ ২০ হাজার টন। আর রমজানে ছোলার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ইফতারি হিসেবে ছোলা এবং ছোলা দিয়ে তৈরি খাবারের জন্য প্রয়োজন হয় এক লাখ টন ছোলা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছোলা এসেছে ৬৯ হাজার টন। এর বাইরে অবশ্য স্থলবন্দর দিয়ে কত ছোলা আমদানি হয়েছে তার হিসাব পাওয়া যায়নি।