রূপালি ইলিশ এর রূপকথা!

নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। আর নদীকেন্দ্রীক হওয়ায় এদেশে মাছের প্রচলন বেশি। তাইতো চিরাচরিত প্রবাদ রয়েছে-‘মাছে-ভাতে বাঙালি`। রুই, কাতলা, মাগুর, শিং, পুঁটি, পাবদা প্রভৃতি বিপুল মাছের সমাহার এদেশে। তবে বাঙালিরা সব ধরনের মাছ খেতে পছন্দ করলেও বাঙালির পছন্দের তালিকায় সবচেয়ে প্রিয় মাছ হিসেবে ইলিশ বরাবর শীর্ষ অবস্থানে থাকে। তাইতো ইলিশ পরিচিত মাছের রাজা হিসেবে। দেশে চারশত প্রজাতির অধিক মাছ পাওয়া গেলেও তার মোট উৎপাদিত মাছের দশ ভাগের এক ভাগের বেশি হলো ইলিশ মাছ। ইলিশ স্বাদে যেমন অতুলনীয় গন্ধেও তেমন মনকাড়া। ইলিশ মাছের গায়ে রূপালি আঁইশ যুক্ত আছে বলে একে রূপালি ইলিশও বলা হয়ে থাকে।
রূপালি ইলিশ এর জীবনচক্র ও প্রজনন প্রক্রিয়া:
প্রতি বছর বঙ্গোপসাগরের ব-দ্বীপাঞ্চল, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা নদীর মোহনার হাওর থেকে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মাছ ধরা হয়। এটি মূলত নোনা পানির মাছ কিন্তু ইলিশ মাছ বড় নদীতে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে গেলে ও বাচ্চা বড় হলে তাকে জাটকা বলে। তারপর ইলিশ মাছ আবার সাগরে ফিরে যায়। ইলিশের সাগরে ফিরে যাবার পথে জেলেরা এই মাছ ধরে।
যদিও ইলিশ লবণাক্ত জলের মাছ বা সামুদ্রিক মাছ, বেশিরভাগ সময় সে সাগরে থাকে কিন্তু বংশবিস্তারের জন্য নদীতে পাড়ি জমায় তবে বংশবিস্তারকালে ডিম পাড়তে নদীর উজানের দিকে অভিপ্রয়াণ করে থাকে। ফলে বাংলাদেশের বৃহৎ নদীসমূহ যেমন-পদ্মা, যমুনা, মেঘনা ইত্যাদি নদীতে রূপালি ইলিশ ধরা পড়ে। ইলিশ প্রধানত বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা এবং গোদাবরী নদীতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে পদ্মার ইলিশ স্বাদ অতুলনীয়। এদিকে ভারতের রূপনারায়ণ নদী, গঙ্গা, গোদাবরী নদীর ইলিশ তাদের সুস্বাদু ডিমের জন্য বিখ্যাত। ইলিশ মাছ সাগর থেকে ধরা হলেও নদীর ইলিশ মাছের মতো সুস্বাদু হয় না। ইলিশ মাছ দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশেও পাওয়া যায় এবং সেখানে মাছটি “পাল্লা” নামে পরিচিত। তবে ইলিশ মাছ খুব অল্প পরিমাণে থাট্টা জেলায়ও পাওয়া যায়। বর্তমানে পাল্লা বা ইলিশ আর দেখা যায় না সিন্ধু নদীর জলস্তর নেমে যাওয়ার কারণে।

বছরে দু’বার মা ইলিশ ডিম দেয়। সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ইলিশ ডিম পাড়ে এবং বাকি ইলিশ ফেব্রুয়ারি-মার্চ ও এপ্রিল মাসে ডিম পাড়ে। একটি মা ইলিশ প্রতি মৌসুমে একবারে সর্বোচ্চ ১ থেকে ২.৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ১০ থেকে ২৩ লক্ষ পরিমাণ ডিম পাড়তে সক্ষম। সদ্য প্রসূত ডিমগুলোকে শত্রুর হাত থেকে বাঁচাতে কখনো কখনো মা ইলিশ তা মুখে পুরে সাথে নিয়েও ঘুরে বেড়ায়। ডিম থেকে বাচ্চা না ফোটা ও সাঁতার শেখা পর্যন্ত মা ইলিশ বাচ্চা ইলিশের পরিচর্যা করে থাকে।
তবে সাঁতার দেয়ার উপযোগী হয়ে উঠলে বাচ্চারা মা ইলিশের সাথে সাঁতার কেটে ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়ায়। বাবা ইলিশও শিশু ইলিশদের লালন পালনে ভূমিকা রাখে। মা ইলিশ বাচ্চাদের রেখে খাদ্যান্বেষণে গেলে বাবা ইলিশ তাদের দেখাশোনা করে।
এতো পরিচর্যার পরও জাটকা সমুদ্রের নোনা পানিতে সঠিকভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ পায় মাত্র ১০-২০ শতাংশ। কারণ ডিমের প্রায় ৩০ শতাংশ অন্যান্য মাছ ও প্রাণীদের আহারে চলে যায়। আর অপুষ্টিজনিত কারণে ১০ শতাংশ শুরুতেই নষ্ট হয়ে যায়। আবার জেলেদের জালে প্রায় ২০ শতাংশ পোনা এবং ৩০ শতাংশ জাটকা ধরা পড়ে। যদি ৫০ শতাংশ ডিমও যথার্থভাবে বেড়ে উঠতে পারত তাহলে বঙ্গোপসাগরের অর্ধেকটাই মাছের রাজা ইলিশের দখলে চলে যেত।
ইলিশ পোনা ১২ সেমি থেকে ২০ সেমি পর্যন্ত বড় হয় ৬-১০ সপ্তাহে। তখন এই সদ্য বড় হওয়া ইলিশ মাছকে জাটকা বলে। একটি জাটকা ইলিশ মাছ পূর্ণাঙ্গ ইলিশে পরিণত হতে সময় নেয় প্রায় ১ থেকে ২ বছর। একটি পূর্ণাঙ্গ ইলিশ আয়তনে ৩২ সেমি থেকে ৬০ সেমি এবং ওজনে ১ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। জাটকা ইলিশ মা ইলিশের সাথে সমুদ্রে চলে যায়। সেখানে পূর্ণাঙ্গ ইলিশে পরিণত হয়ে আবার প্রজনন কালে নদীতে ফিরে আসে। এভাবেই চলে ইলিশের জীবনচক্র।
বছরের যেসময়ে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা:
ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাই মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ রয়েছে। প্রজনন ঋতুতে মাছ ধরা নিষেধ থাকে। যেমন-চন্দ্রের হিসেবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ২/৩ সপ্তাহ অর্থাৎ ১৫/২২ দিন জাল ফেলার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাটকা সংরক্ষণের জন্যে নভেম্বর থেকে মে/জুন মাসে মোট ৭/৮ মাস জাটকা যেসব ইলিশ ২৫ সেমির কম তা ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মাছের অভয়াশ্রম বাস্তবায়ন, কারেন্ট জাল সহ ছোট খোপের জাল ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ করা হয়েছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের কারণে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইলিশ ও জেলে জীবন:
ইলিশের মৌসুম আসার আগ দিয়ে জেলেদের কাজ শুরু হয়। জাল, নৌকা ও ট্রলার বানানোর হিড়িক পড়ে যায় জেলে পল্লীগুলোতে। জেলেরা অত্যন্ত গরীব বিধায় জাল, নৌকা বা ট্রলার বানানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য অধিকাংশ জেলের বা মাঝির নেই। তাই তারা একপ্রকার বাধ্য হয়েই মহাজন বা আড়ৎদারদের দ্বারস্থ হয়ে নগদ টাকা ঋণ নিয়ে জাল বা ট্রলার তৈরি করেন। কমিশনের আশায় আড়ৎদার জেলে মাঝি, নৌকা বা ট্রলার মালিকদের দাদন দিয়ে থাকেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেলেরা নদী বা সাগরে ইলিশ মাছ শিকার করতে যায়। সমুদ্রের সাথে জেলেদের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।
আড়ৎদারদের কাছ থেকে জাল, ট্রলার, টাকা নিয়ে জেলেরা সাগরে যায় বিধায় আড়ৎদারদের মাছের উপর নির্দিষ্ট কমিশন দিতে হয়। মাছের যোগান কম হলেও আড়ৎদারদের কমিশন কম হয় না।
জেলেদের জীবন-জীবিকা বড়ই কঠিন ও সংগ্রামের। অভাবের তাড়নায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জেলে পরিবারের অধিকাংশ ছেলে যারা ৮-১০ বছর বয়সী তারা এ কাজে জড়িয়ে পড়ে। পিতা মাতাও ছেলেদের মাছ ধরার কাজে উৎসাহিত করেন। ফলে জেলে পরিবারের অধিকাংশ ছেলে স্কুলের পড়াশুনা বাদ দিয়ে নদী বা সাগরে মাছ শিকার করে। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয় জেলে পরিবারের সন্তানরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, একজন জেলের আয়ের ওপর ৭-৮ জনের সংসার চলে।

পরিবারের ভরণ-পোষণ জোগাড় করতে, অভাবের তাড়নায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী বা সাগরে ইলিশ মাছ ধরতে যায় জেলেরা। বন্য-ঝড়-জলোচ্ছ্বাস কিছুই তাদের আটকে রাখতে পারে না। জীবন বাজি রেখে সাগরে মাছ ধরতে যায়। ১০-১৫ দিন নৌকায় থাকে তারা। আবার ফিরে আসবে কিনা তাও অনিশ্চিত। অনেক জেলে আবার সাগরে প্রাণ দেয়। প্রতিবছর সাগরে ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা প্রাণ হারাচ্ছে। জলদস্যুদের তাণ্ডবে জেলেরা মাছ শিকার করতে সাহস পাচ্ছে না। অনেক জেলের প্রাণ যায় জলদস্যুদের গুলিতে। তবুও অপ্রতিরোধ্য জেলেরা। বাজারে ইলিশে দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও জেলেরা তাদের ন্যায্য মূল্য পায় না ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকারে যাবার যাবতীয় খরচ যোগাড় হয় না এদিকে সংসারের খরচ জোগাড় করতেও হিমশিম খায় তারা। মাছের মৌসুমে সংসারে একটু স্বচ্ছ্বলতা আসে কিন্তু বাকি সময়ে যায় কষ্টে। ফলে অনেক জেলেই পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন।

দেশের অর্থনীতিতে ইলিশের ভূমিকা:
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইলিশের অবদান ক্রমশঃ বাড়ছে। ইলিশের উৎপাদন, মাছের দাম বৃদ্ধি ও ইলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততার কারণে অর্থনীতিতে এ মাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ভোজন রসিক বাঙালির প্রিয় মাছ রূপালি ইলিশ তাই দেশের অর্থনীতিকে ত্বরান্বিত করছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইলিশ এখন বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।
দেশের মোট মাছ উৎপাদনের শতকরা ১২ ভাগ আসে ইলিশ মাছ থেকে। দেশের জিডিপিতে ইলিশ মাছের অবদান ১ শতাংশ। পৃথিবীর সব দেশেই এ মাছের চাহিদা রয়েছে এজন্য প্রতিবছর ইলিশ মাছ রপ্তানি করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হচ্ছে। ২১ থেকে ২৪ হাজার কোটি নতুন পরিপক্ব ইলিশ পাওয়া যাবে শুধুমাত্র প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা ও জাটকা নিধন বন্ধ হলে। এতে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ইলিশের বাজার সৃষ্টি সম্ভব হবে। ফলে অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থান বাড়বে, যা নিঃসন্দেহে দেশের গোটা অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করে তুলবে।
রূপালি ইলিশ ও আমাদের সংস্কৃতি:
রূপালি ইলিশ বাঙালির সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে। বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে পান্তা ও ইলিশ এক অনবদ্য সংস্কৃতি। নববর্ষ যেমন বাঙালির অস্তিত্বে মিশে আছে ঠিক তেমনি ভোজন রসিক এ জাতির রসনা তৃপ্তি মেটাতে ইলিশের জুড়ি মেলা ভার। ইলিশের মৌসুমে ইলিশ কেনার ধুম পড়ে যায় বাড়িতে বাড়িতে। ইলিশ দিয়ে চলে হরেক রকমের বাহারি রান্না, এ ঐতিহ্য আজকের নয়, অতি পুরাতন। এক বাড়ির ইলিশের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে অন্য বাড়িতেও। ভোজন রসিকদের পাতে এক টুকরো ইলিশ যেনো রসনার পরিপূর্ণ তৃপ্তি আনে। জৈষ্ঠ্যমাসের জামাইষষ্ঠীতে ইলিশ কেনার ধুম পড়ে যায়। জামাইয়েরা শ্বশুর বাড়িতে জোড়া ইলিশ নিয়ে যায়, যা বাঙালি সংস্কৃতির একটি প্রাচীন রীতি।
অনেক বাঙালি হিন্দু পরিবারই বিভিন্ন পূজার শুভ দিনে জোড়া ইলিশ বা দুইটি ইলিশ মাছ কেনা হয়। বিশেষ করে সরস্বতী পূজা ও লক্ষ্মী পূজায় জোড়া ইলিশ কেনা খুব শুভ লক্ষণ হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে। ইলিশ মাছকে তেল-সিদুঁর দিয়ে বরণ করা হয়। এই প্রথা আজও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বাঙালি হিন্দুদের মাঝে প্রচলিত আছে। তাদের অনেকে লক্ষ্মী দেবীকে ইলিশ মাছ উৎসর্গ করে থাকেন। কারণ অনেকেই ইলিশ উৎসর্গ ছাড়া পূজাকে অসম্পূর্ণ মনে করেন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলপুর: জন-মানবশূন্য এক গ্রামের গল্পকথা!
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সচেতনতা:
ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য গণসচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। বাংলাদেশে নিয়ে আরও বিস্তৃত পর্যায়ে গবেষণা প্রয়োজন রুপালি ইলিশ। পানি দূষণ রোধ, পানিতে যেন বর্জ্য পদার্থ, রাসায়নিক দ্রব্যাদি এছাড়াও কোন ধরনের দূষণ না ঘটে সেদিকে আমাদের সচেতন হতে হবে।
মোহনায় অতিরিক্ত পলি জমার ফলে নদীমুখগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে ফলে প্রজনন মৌসুমে ইলিশের পরিযান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে দূষণমুক্ত পানি ইলিশ মাছের উজানে যেতে প্রয়োজন। ইলিশের চিহ্নিত অভয়াশ্রম বা চলাচলের রাস্তায় নৌপরিহন চলাচলের মাত্রা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ইলিশের পরিযান বা অভিপ্রয়ানকে বাধাগ্রস্ত করছে। আবার নদীর উপরে ও নদীতে স্থাপিত নানা ধরনের বাঁধ ও ব্যারাজ রয়েছে।
সরকার ২০১১ সাল থেকে জাটকা বা মা ইলিশ না ধরার জন্য সকল জেলেদের সচেতন করে আসছে। ইলিশ সংরক্ষণে একটি স্বতন্ত্র তহবিল গঠন করা প্রয়োজন, যেন দুর্যোগের সময় জেলেদের বেশি করে সহায়তা দেওয়া যায়। সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্যের সাহায্য মা ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করতে হবে।
দরিদ্র জেলেদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়েছে। সরকারের উচিত তাদের অনেক বেশি সহযোগিতা দেওয়া। যেসব জেলেদের মাছ ধরার ক্ষমতা নেই তাদেরকে ইলিশ মাছ ধরার সামগ্রী বিতরণ করতে হবে। ইলিশ মাছ সংরক্ষণে জেলেদের বেশি পরিমাণ খাদ্যশস্য বিতরণ প্রয়োজন। জেলেদের প্রণোদনা, গণমানুষের ব্যাপক সচেতনতা ও প্রশাসনের উদ্যোগ ইলিশ উৎপাদনে অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারবে। সর্বোপরি রূপালি ইলিশ মাছ রক্ষায় এবং এর প্রজনন বৃদ্ধিতে প্রতিটি মহলের সর্বাধিক সচেতনতা জরুরি।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ার বিখ্যাত ও ঐতিহ্যবাহী তিলের খাজা
পরিশেষে বলা যায় যে, ভোজন রসিক মানুষের কাছে রূপালি ইলিশ যেনো রূপকথার অমৃতসম। ইলিশের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। ইলিশ বাঙালির প্রিয় খাবার বিধায় বর্ষা মৌসুমে সবাই অপেক্ষা করে ইলিশের জন্য। ইলিশের দাম বাজারে চড়া হলেও এর সাথে সংশ্লিষ্ট জেলেদের জীবিকা ও ভাগ্যের আজও পরিবর্তন হয় না। ন্যায্য মূল্য না পাবার কারণে তারা পেশা বিমুখ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আবার ইলিশের প্রজনন মৌসুমি ইলিশ ধরা রোধ করা গেলে ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। এজন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনসচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের জাতীয় সম্পদকে রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে ছড়িয়ে দেবার জন্য সকলে সচেতন হতে হবে।