লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনার জোয়ারে পানি উপকূলে ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে জোয়ারের পানিতে উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের কালভার্ট এলাকায় তোরাবগঞ্জ থেকে মতিরহাট যাওয়ার সড়কটি ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
একইদিন বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রবল জোয়ারে মেঘনা নদীর উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ছিল। কমলনগরের কালকিনি, মার্টিন, নাসিরগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা হাঁটু পরিমাণ পানির নিচে ডুবে ছিল। ৬টার দিকে উপকূল থেকে পানি নামতে শুরু করে।
সোমবার (১২ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভেঙে যাওয়া সড়কে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগের চিত্র। জেলার সদর উপজেলার চর রমনীমোহন এলাকায় মেঘনা উপকূলেও একই পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, মেঘনার জোয়ারের তীব্র স্রোতে চর মার্টিন, চর লরেন্স, চর কালকিনিসহ কয়েকটি ইউনিয়নের আভ্যন্তরীণ সড়ক ভেঙে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। কয়েকটি সড়কে প্রায় চার মাস ধরে গাড়ি চালাতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন চালকরা। তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে চলাচলে প্রায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ২০ দিন আগে জোয়ারে একই সড়কের কালভার্ট ভেঙে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে গিয়েছিল। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সড়কটিতে ইট ফেলে সাময়িকভাবে চলাচলে উপযোগী করে দেওয়া হয়। রবিবার ফের জোয়ারে কালভার্ট এলাকায় সড়কের দুই স্থান ভেঙে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন# নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মতিরহাট মাছঘাট ইলিশ কেনাবেচার অন্যতম স্থান। এই ঘাট থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ইলিশ অন্যান্য জায়গায় পাঠানো হয়। মতিরহাট বেড়িবাঁধ ও মেঘনার জেগে ওঠা চর পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্থানীয়ভাবে বেশ জনপ্রিয়। সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এ সড়কের চলাচলকারীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
চর মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউছুফ আলী মিয়া বলেন, সম্প্রতি জোয়ারে একই স্থানে রাস্তা ভেঙে যাতায়াত ও চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। পরে সাময়িকভাবে চলাচলের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হলেও জোয়ার এলেই কালভার্ট এলাকার সড়কটি ভেঙে যায়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা হবে। দ্রুত গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমার জানা ছিল না। গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক করতে রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন, তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কটি নতুন করে সংস্কারে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হওয়ার কথা। আশা করি, সড়কটি নতুন করে সংস্কার হলে এই এলাকার জনগণকে চলাচলের জন্যে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।