জাতীয়সন্দেশ

‘লাম্পি’ রোগে কুড়িগ্রামে ১০ গরুর মৃত্যু, দিশেহারা খামারিরা!

কুড়িগ্রামে অনেক গরুর শরীরে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। আফ্রিকা থেকে আসা এই রোগের নাম ‘লাম্পি‘। আতঙ্কের খবর হলো এই রোগের কোন প্রতিষেধক আপাতত নাই। যে কারনে ইতোমধ্যেই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০টি গরু মারা গেছে। পাশাপাশি শতাধিক গরু আছে আত্রান্ত অবস্থায়। স্বাভাবিকভাবেই পল্লী চিকিৎসক, কবিরাজ ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরাও ফলদায়ক কিছু করতে পারছেন না। ফলে গোয়ালঘর শূন্য হওয়ার আতঙ্কে খামারি ও গৃহস্থরা এখন দিশেহারা।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, রোগটি দ্রুত ছড়ায়। এ রোগ ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় দেখা দিয়েছে। এটি আফ্রিকান রোগ। এ রোগের প্রতিষেধক নাই। ফলে গোট পক্স ভ্যাকসিন দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন জায়গায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কল্যাপাড়া, বজরা ইউনিয়নের খামার বজরা, দুর্গাপুর ইউনিয়নের কামাল খামার ও ধরনিবাড়া ইউনিয়নের মাঝবিল গ্রামে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত পাঁচ দিনে দলদলিয়া গ্রামের মহিউদ্দিনের একটি, আয়শা বেগমের একটি, দেলওয়ার হোসেনের একটি, খামার বজরা গ্রামের দুলাল মিয়ার একটি, আবুল কালামের একটি ও মাঝবিল গ্রামের দেলওয়ার মিয়ার একটিসহ মোট ১০টি গরু লাম্পি স্কিন রোগে মারা গেছে।

আরও পড়ুন: ছাত্রীকে ধ’র্ষ’ণের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন!

এদিকে প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে খামারি ও গৃহস্থদের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই তারা দ্বারস্থ হয়েছেনপল্লী চিকিৎসক, কবিরাজ ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের। কিন্তু তাদের দেওয়া ওষুধে কাজ হচ্ছে না বলে আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে।

মহিউদ্দিন নামে এক গৃহস্থ বলেন, ‘এ রোগে আক্রান্ত হয়ে আমার দেড় লাখ টাকা দামের একটি গাভীর সমস্ত শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। অনেক চেষ্টা করেছি বাঁচানোর। কিন্তু শেষে গরুটি জবাই করে মাটিতে পুতে রাখি।’

শমসের আলী নামে আরেক গৃহস্থ বলেন, ‘ভালো গরু দেখে ঘুমাইছি। সকালে উঠে দেখি গরুর গায়ে পক্সের মতো গোটা। বিকেল না হতে সারা শরীর ঘিরে রেখেছে এ রোগ। শুনেছি এ রোগ হলে নাকি গরু মারা যায়। গরু দুটো মারা গেলে বিপদে পড়বো।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ানুল হক জানান, উপজেলায় গরুর শরীরে লাম্পি স্কিন রোগটি ছড়িয়েছে। এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইউনুছ আলী জানান, এটি নতুন রোগ। মশা-মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে আরেক গরুতে ছড়ায়। লাম্পি স্কিন রোগের কোনো প্রতিষেধক বের হয়নি। আমরা গোট পক্স ভ্যাকসিন দিয়ে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছি।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।