জাতীয়সন্দেশ

শহিদ আবরার ফাহাদের ছোটো ভাই ভর্তি হলেন বুয়েটেই!

অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে অবশেষে বুয়েটেই ভর্তি হলেন শহিদ আবরার ফাহাদের ছোটো ভাই আবরার ফাইয়াজ। ভাইয়ের স্মৃতি না ভুলে স্বপ্নকে আকড়ে ধরে আবার পরিবারের ভরসার প্রতীক হতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গতকাল ২টার পর বুয়েটের ক্যাফেটেরিয়ার পাশে হল রুমে ‘মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগে ভর্তি হন তিনি। তার সাথে এসেছিলেন তার বাবা ও মামা।

প্রায় তিন বছর আগে ২০১৯ সালে ৬ অক্টোবর যে ক্যাম্পাসে নৃশংস অত্যাচারের শিকার হয়ে শহিদ হয়েছিলেন আবরার ফাহাদ সেই বুয়েট ক্যাম্পাসেই তিনবছর পর চান্স পেয়েছেন তারই স্নেহের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। ভর্তি পরীক্ষায় ৪৫০তম হয়ে পছন্দের সাব্জেক্টে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও ছিলেন দ্বিধায়। বড় ভাইয়ের স্মৃতির ধূসরতা যেন কাটতেই চাইছিলো না। শঙ্কায় ছিল ফাইয়াজের পরিবার।

গত ১ জুলাই বিকেলে আবরার ফাইয়াজ তার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি লিখেছেন, “বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়ে অনেক খুশি হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত বাড়ির কারোর মুখে তার ছিটেফোঁটাও দেখতে পাইনি। গতকাল (৩০ জুন) যে সময় আমাদের রেজাল্ট দিয়েছে, ২০১৭ সালে ঠিক এই একই সময়ে ভাইয়ার (আবরার ফাহাদ) রেজাল্ট দিয়েছিল। তখন আমাদের পরিবারের চার জন একই ঘরে বসে ছিলাম, সঙ্গে চাচাও ছিলেন। ভাইয়ার এক বন্ধু ফোনে রেজাল্ট জানিয়েছিলেন। সেদিনের মতো খুশি ভাইয়াকে আর কখনও দেখিনি। সেদিন আমরাও অনেক খুশি হয়েছিলাম। সত্যি বলতে, সেদিনের আনন্দের ১০ ভাগও গতকাল নিজের রেজাল্ট দেখে পাইনি।”

বুয়েটে ভর্তির অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, “ভাইয়ার ইচ্ছে ছিলো আমি এখানে পড়ব। ভাইয়া যখন বেঁচে ছিল তখনই আমি এখানে আসতাম তবে আমরা যেহেতু বাহিরের ছিলাম তাই ভেতরের পরিবেশ বা অবস্থা সম্পর্কে ততটা জানতাম না কিন্তু তখন থেকেই একটা আগ্রহ ছিল এখানে পড়ার। কিন্তু ভাইয়া মারা যাওয়ার পর আমি এবং আমার পরিবার দ্বিধায় পরে যাই যে ভর্তি হবো কিনা। পরে এখন দেখলাম যে পরিবেশ আগে থেকে অনেকটাই চেইঞ্জ হয়েছে তাই ভর্তি হলাম আর তাছাড়া মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টটাও পছন্দ হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, তার ভাই আজ বেঁচে থাকলে শেষ বর্ষে থাকতেন আর তারা নতুন ব্যাচে থাকতেন তখন হয়তো তার কাছে পরিবেশটা অন্যরকম লাগতো সবকিছু চেনা মনে হতো। অনুভূতিগুলো অন্যরকম হতে পারতো। তবুও এখনো চারিদিকে দেয়ালে আবরার ফাহাদের বিভিন্ন গ্রাফিতি দেখে মনে পড়ে যায় সেই ধূসর স্মৃতি।

আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাজনৈতিক সম্মেলন, দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষামন্ত্রী!

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।