
স্কুল বাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। ঢাকা উত্তর সিটি করোপেশন (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকার চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাইলট প্রকল্প হিসেবে স্কুলবাস চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে স্কুল বাস চালু হলে ব্যাপক হারে যানজট কমে আসবে। এর ফলে বায়ু দূষণ কমবে, কার্বন নিঃসরণও অনেকাংশে কমে যাবে। আমরা অংশীদারদের সঙ্গে কথা বলছি। অনেক শিক্ষকও এ প্রস্তাবের সাথে একমত পোষণ করেছেন। এটি বাস্তবায়নে অভিভাবকদের সদিচ্ছাটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকার স্কুলগুলোতে স্কুলবাস সার্ভিস প্রবর্তন সংক্রান্ত প্রাথমিক কর্মকৌশল নির্ধারণ বিষয়ক সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা সভায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন# পথচারীর পকেটে মাদক ঢুকিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা!
সভাপতির বক্তৃতায় উত্তর সিটির মেয়র আতিক বলেন, অনেক স্কুলে দেখা যায় একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটিমাত্র গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এর ফলে অসংখ্য প্রাইভেট কার রাস্তায় চলাচল করছে। স্কুলগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলবাস চালু হলে প্রাইভেট গাড়ির ব্যবহার ব্যাপক হারে কমে আসবে। ছেলে-মেয়েরা অনেকে একসাথে বাসে যাওয়া-আসা করলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে, সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় হবে। ছেলে মেয়েরা বহুলাংশে আত্মবিশ্বাসী হবে। তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়ে অভিভাবকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, সন্তানরাই মা-বাবার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল বাসগুলোতে সিসি ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। অ্যাপসের মাধ্যমে জিপিএস ট্র্যাকিং ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা ও স্কুল বাসের চালক ও স্টাফদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে। একটি হটলাইন নম্বর থাকবে যেটির মাধ্যমে অভিভাবকরা সার্বক্ষণিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন# যশোরে আট জনের শরীরে এইচআইভি শনাক্ত!
এ সময় তিনি বলেন, অনেক পরিবারে বাবা-মা দু’জনই চাকরিজীবী। তাদের যেন ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া আসা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে হয় সেক্ষেত্রে নিরাপদ স্কুলবাসই চমৎকার সমাধান হবে। সময়, নিরাপত্তা ও খরচ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বাস সার্ভিসটি চালু করা হবে। আমরা চাই এটি টেকসই সমাধান হিসেবে প্রতিষ্টিত হোক।
বাস রুট নির্ধারণের বিষয়ে অভিভাকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, সকল শিক্ষার্থীর বাসার ঠিকানা অনুযায়ী বাসগুলোর রুট নির্ধারণ করা হবে। রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে একটি বাসে নির্দিষ্ট রুটের স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত খরচ অনেক কমে আসবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র জানান, প্রথমে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে চালু হলেও পর্যায়ক্রমে সব স্কুলেই স্কুল বাস সার্ভিস চালু করা হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন, চিটাগং গ্রামার স্কুল-ঢাকা’র প্রিন্সিপাল আছিয়া আলম চৌধুরী, স্যার জন উইলসন স্কুলের প্রিন্সিপাল সাবরিনা শাহেদ, স্কলাস্টিকা স্কুল মিরপুর শাখার প্রিন্সিপাল নুরুন নাহার মজুমদার ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটরিয়ালের প্রিন্সিপাল লুবনা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।