
বগুড়ার আদমদীঘিতে মধ্যরাতে বসতঘরের আগুনে মারা গিয়েছিলেন স্ত্রী শামিমা। তখন বলা হয়েছিল, স্ত্রীর সঙ্গে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বামী আজাদুল ইসলামেরও। কিন্তু শামিমার মরদেহ পাওয়া গেলেও সেদিন রহস্যজনকভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি আজাদুলের দেহ। পরে বিষয়টি সন্দেহ হলেও তাকে আর খুঁজে পায়নি পুলিশ।
অবশেষে ঘটনার ৫০ দিন পর নিহত শামিমার বড় ভাইয়ের করা হত্যা মামলার তদন্ত করতে গয়ে পলাতক আজাদুলকে খুঁজে পাওয়া যায়। এরপর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নওগাঁ জেলার সদরের কলি মঙ্গলপুর গ্রামে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা গণমাধ্যমকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারর হওয়া আজাদুল আদমদীঘি উপজেলার পৌর শহরের বশিপুরের আবুল কাশেমের ছেলে।
পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি জানান, গত ২৭ জুলাই রাতে শামিমাসহ আজাদুল ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে আগুন লেগে তাদের বসত ঘরসহ দু’টি ঘর পুড়ে যায়। পরে পুলিশ শামিমার পোড়া মরদেহ উদ্ধার করে। কিন্তু আজাদুলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন# ফাঁকা বাসায় ভুতুড়ে কাণ্ড, বিদ্যুৎ বিল আসলো ১১ লাখ টাকা!
আজাদুলের ছেলে রাকিব শ্বশুর বাড়িতে ঘর জামাই থাকায় ওই বাড়িতে তার মা-বাবা একাই থাকতেন।
ওসি রেজাউল বলেন, ‘শামিমার মরদেহ উদ্ধারের পর রাকিব পুলিশকে জানিয়েছিল, সেদিন রাত ১০টার দিকে তার মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়। সে সময় তার বাবাও ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন।
‘সেদিন রাকিব এবং আজাদুলের ভাই রশিদুল দাবি করেন, আজাদুলও তার স্ত্রী শামিমার সঙ্গে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। কিন্তু আজাদুলের মরদেহের কোনো অস্তিত্ব না পাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়।’
এ ঘটনায় পরে শামিমার বড় ভাই আজিজার রহমান অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেন জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেও আজাদুলের অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার আমরা খবর পাই যে তিনি নওগাঁর সদরের কলি মঙ্গলপুর গ্রামে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপন করে আছেন। সন্ধ্যার দিকে সেখানে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’
ওসি বলেন, ‘গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আজাদুলের কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হয়েছে। তিনি সঠিকভাবে কোনো তথ্য দিচ্ছেন না। আজাদুল জানান, আগুন লাগার দিন তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু তার ও শামিমার মোবাইল ফোন আমরা তাদের পুড়ে যাওয়া ঘরেই পেয়েছিলাম।
‘এসব দেখে মনে হয়েছে, তার কাছে থেকে তথ্য বের করতে আরও সময় লাগবে। এ জন্য তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের জন্য আবেদন করব।’