
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রীর সহযোগিতায় প্রতিবেশীর কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ধর্ষণের ছবি ও ভিডিয়ো চিত্র ধারণ করে মেয়েটিকে খুলনায় নিয়ে গিয়ে ফের ধর্ষণ করে অভিযুক্ত ও তার দুই সহযোগী। এ ঘটনা ঘটেছে আরও ২০ দিন আগে। এতদিন পেরিয়ে গেলেও আইনি সহায়তা পায়নি ভুক্তভোগী ও তার পরিবার। উলটো মামলা না করতে প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে তাদের।
নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর বয়স ১২ বছর। মেয়েটির দিনমজুর বাবা বলেন, ‘দোবারিয়া গ্রামের মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী সখি বেগম নারী পাচারকারী ও দেহ ব্যবসায়ী। স্ত্রীর সহযোগিতায় মহিউদ্দিন হাওলাদার এসব অপকর্ম করেন। বেশ কিছুদিন আগে সখি বেগম আমার মেয়েকে তার ঘরে ডেকে নেয়। তখন মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। সখি বেগম ধর্ষণের সময়কার ছবি তুলে রাখে। লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাইনি। পরে মেয়েকে খুলনার বড়ো মেয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু ১৩ আগস্ট বিকেলে বড়ো মেয়ের বাড়ি থেকে মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায় সখি বেগম ও কালাম সরদার। দুই দিন পরে ১৫ আগস্ট সকালে রূপসা ভ্যান স্টান্ডে অসুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েকে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। মেয়ে সবকিছু খুলে বললে, আমরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। ১৭ আগস্ট খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি। এরপর র্যাবের কাছে গিয়েছি, রূপসা থানা ও কচুয়া থানায় একাধিক বার গিয়েও মেয়ের ওপর হওয়া নির্যাতনের কোনো বিচার পাইনি।’
আরও পড়ুন# কমতে শুরু করেছে চালের দাম, বাজার স্থিতিশীল!
নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী ওই কিশোরী বলে, ‘মহিউদ্দিন হাওলাদার আমাকে ধর্ষণ করেছে এবং তার স্ত্রী সখি বেগম সেই ছবি তুলেছে। পরে আমাকে ভয় দেখিয়ে খুলনার একটি বাসায় নিয়ে রাতে মহিউদ্দিন হাওলাদার, বাসচালক কালাম সরদার ও ওই বাড়িতে থাকা আরও একজন পুরুষ আমাকে ধর্ষণ করে। তারা আমাকে জোর করে যৌন উত্তেজক ওষুধ খাইয়ে আমার ওপর নির্যাতন চালায়। আমি এর বিচার চাই।’
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা এ বিষয়ে বলেন, মহিউদ্দিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী সখি বেগম নারী পাচারকারী ও দেহ ব্যবসায়ী। এটা এলাকার সবাই জানে। এই অপরাধে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সখি বেগমকে কয়েকবার সালিশি বিচারের মাধ্যমে শাস্তিও দিয়েছেন।
এদিকে গত ১৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন মহিউদ্দিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী সখি বেগম। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে মো. মহিউদ্দিন হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে তাদের ঘরটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। কথা হয় পাশের ঘরে থাকা মহিউদ্দিনের মা মোমেনা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, ‘মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে খারাপ কাজ করে। এ জন্য তাদের সঙ্গে আমাদের, এমনকি এলাকার কারও কোনো সম্পর্ক নেই। তারা কোথায় গেছে আমরা কেউ জানি না।’
বাগেরহাট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদ হাসান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। ঘটনার বিস্তারিত শোনার পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের আটক করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। তাদেরকে আটকের পর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’