‘হাওয়া’র পরিচালকের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার!

তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া ‘হাওয়া‘ সিনেমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল একটামাত্র শালিক পাখি। বাংলা চ্চলচিত্রের হাওয়াবদলের এই সিনেমার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে বনবিভাগের করা সেই বন্যপ্রানী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন নিয়ে চলেছে জোর সমালোচনাও। অবশেষে সেই মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর ছিদ্দিক মামলাটি প্রত্যাহারের আদেশ দেন। একই সাথে মামলার বাদীর আইনজীবী মো. জাকির হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট মামলার বাদী বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর ছিদ্দিকের আদালতে এ আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ সাপেক্ষে এ বিষয় আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন।
জানা যায়, এদিন বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৩ মোতাবেক মামলাটি আপসযোগ্য হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৮ ধারা মোতাবেক মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়।
মামলা প্রত্যাহারের আবেদন সূত্রে জানা যায়, যেহেতু মামলাটি বন্যপ্রাণী আইন ২০১২ এর ৩৮(১), ৩৮(২), ৪১ এবং ৪৬ ধারায় বাদী মামলাটি করেন। আসামি অত্র মামলা সম্পর্কে অবগত হয়ে হাওয়া সিনেমায় ব্যবহৃত বন্যপ্রাণী সম্পর্কে অবগত ছিলেন না এবং আসামি বন্যপ্রাণী ব্যবহার করলে যে অপরাধ হবে তা জানতেন না। আসামি নিজের ব্যবহৃত প্যাডে বন্যপ্রাণী ব্যবহার সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশসহ নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করেন৷ এরপর মামলার বাদী তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ মামলাটি প্রত্যাহার করতে ইচ্ছুক।
আরও পড়ুন: লিফটে আটকে সব অপকর্ম স্বীকার করলেন মিশা সওদাগর!
পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে গত ১৭ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করা হয়। বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
হাওয়া চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় গত ২৯ জুলাই। মুক্তির পর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত চলচ্চিত্রটির রিভিউতে জানানো হয়, এই চলচ্চিত্রে একটি পাখিকে হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন চান মাঝির চরিত্রে অভিনয় করা চঞ্চল চৌধুরী।
রিভিউ প্রকাশের পর হাওয়া চলচ্চিত্রে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখা ও একপর্যায়ে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে বন্যপ্রাণী আইন লংঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ আগস্ট পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ) এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়।
পরবর্তী দিনেই গ্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখে আইন লংঘনের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান দেন বন অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।