ফিচার

বিয়ে ছাড়াই সন্তান নিতে পারে চীনে।

পৃথিবীর অনেক দেশে অনেক নিয়ম আছে জা জানলে আমরা অবাক হই আজ আমরা জানবো বিয়ে ছাড়াই সন্তান নিতে পারে চীনে ......

অনুলিপি ডেস্কঃ বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চিনে, প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা কমেছে। প্রায় ছয় দশকের মধ্যে এত নিচে জনসংখ্যা কমে আসেনি। ১৯৬১ সালের পর থেকে ২০২২ সাল শেষে প্রথমবার চীনের জনসংখ্যা কমেছে। তাই অনেকে ধারণা করছে এভাবে দীর্ঘদিন যাবত চলতে থাকলে লোক সংখ্যা কমতে থাকবে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে মাথা নাড়া দিয়ে উঠে দেশটির সরকার। কিভাবে জনসংখ্যা বাড়ানো যায় বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করছে চীনের সরকার। এর অংশ হিসেবে এবার সিচুয়ান প্রদেশে বিয়ে ছাড়া সন্তান জন্ম দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে চীন। সিচুয়ানে প্রায় ৮ কোটি মানুষ বসবাস করেন। বিবাহিত দম্পতিরা এখন যত খুশি তত সন্তান নিতে পারবেন। সিচুয়ানের স্বাস্থ্য কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, প্রাদেশিক সরকারের তালিকায় যে কেউ জন্মনিবন্ধন করাতে পারবেন। তাকে নিয়ম ছিল বিবাহিতরা সর্বোচ্চ দুটি সন্তান নিতে পারবে। সিচুয়ানের প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, এ নিয়ম আগামী পাঁচ বছর বলবৎ থাকবে।

অবিবাহিত নারীরা সন্তান জন্ম দিতে চীনের জন্ম নেতিতে কোন বাধা নেই, নিষেধাজ্ঞাও নেই। তবে কোনো নারী যখন জন্মপূর্বকালীন সরকারি সেবা, মাতৃত্বকালীন ছুটির বেতনের সুবিধা নিতে যান তখন তাদের বিয়ের প্রমাণ দেখাতে হয়। হুকোওর মাধ্যমে শিশুরা শিক্ষা ও সামাজিক সেবা পেয়ে থাকে। যেসব নারী বিয়ে ছাড়া সন্তান জন্ম দিতে চান তাদের ‘হুকোও’ নামের একটি সেবা পাওয়ার জন্য বড় অংকের জরিমানা গুণতে হয়। সন্তান নীতি গ্রহণ করা হয় চীনে আশির দশকে। কোন পুরুষ অথবা নারী যদি ওই আইন ভঙ্গ করতো তাহলে পেতে হতো তাদেরকে কঠিন শাস্তি। দেশটি এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মূলত জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণের জন্য। পরবর্তীতে এটি ভুল প্রমাণিত হয়। আর সেই ভুল বুঝতে পারে ২০১৬ সালে। ভুল করে অফিসে আর দেরি করেনি খেয়ে আসে ওই নীতি থেকে চীন।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, ১৪১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার ছিল ২০২২ সালের শেষে। ২০২১ সালে যার সংখ্যা ছিল ১৪১ কোটি 26 লাখ। ৭ দশমিক ৫২ প্রতি হাজারে জন্মহার ছিল ২০২১ সালে। গত বছর তা কমে ৬ দশমিক ৭৭ এ নেমে এসেছে; দেশটির রেকর্ডে এটিই সর্বনিম্ন জন্মহার। চীন গত বছর ১৯৭৬ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর হারও রেকর্ড করেছে, ২০২২ সালে দেশটি প্রতি হাজারে ৭ দশমিক ৩৭ মৃত্যু তালিকাবদ্ধ করেছে; যেখানে ২০২১ সালে মৃত্যুর হার ছিল ৭ দশমিক ১৮। চীনে এক সন্তান নীতি থাকার কারণে জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছেন ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। এমনকি একটি চীনা পরিবারের সন্তানকে মানুষ করতে হলে তার পেছনে প্রচুর অর্থ বের করতে হতো। সে চিন্তা-ভাবনা করে অনেক চিনা দম্পতি সন্তান নিতে চাইতো না।

আরো পড়ুন: বৃষ্টির দিনে ঘরে কাপড় শুকিয়ে নেবেন যেভাবে

জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা তিন বছর ধরে কঠোর জিরো-কোভিড নীতি বজায় রাখার পর হঠাৎ করে তা তুলে নেওয়ায় চীনের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে, এটিও জন্মহার হ্রাসে ভূমিকা রাখছে। ২০২১ সাল থেকে চীনের সরকার একের অধিক সন্তান নিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এবং পরিবারদেরকে উৎসাহিত করছে। এগুলোর মধ্যে কর ছাড়, মাতৃত্বকালীন ছুটি দীর্ঘয়িত করা এবং ভর্তুকি মূল্যে বাড়ি দেওয়া অন্যতম। কিন্তু এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও দীর্ঘদিনের ওই ধারা পরিবর্তিত হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। সর্বশেষবার চীনের জনসংখ্যা কমেছিল ১৯৬০ সালে। ওই বছর মাও সে তুংয়ের বিপর্যয়কর কৃষি নীতি ‘গ্রেট লিপ ফরওয়ার্ডের’ কারণে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছিল দেশটির মানুষ। তবে এরপর দেশটিতে জনসংখ্যা বাড়া শুরু করে। প্রচুর জনসংখ্যার বই এবং ১৯৮০ সালে চীন করে। ফলে জনসংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে। তাদের সে ভুল ২০১৬ সালে বুঝতে পারে। তৎক্ষণাৎ দেশটি সে নীতি পরিবর্তন করে। বর্তমানে চীন দেশটির প্রথম দম্পতি তিন ছেলে মেয়ে চাইলেও নিতে পারে।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।