১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক ক্যাসিনো দেলু!

ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত জাকের প্লাজা, সিটি প্লাজা ও নগর প্লাজার সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন দেলু ওরফে ক্যাসিনো দেলু। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে ১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ। এই অভিযোগে ইতোমধ্যেই ক্যাসিনো দেলুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বাদী হয়ে মামলাটি করেন। প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এই সংবাদের সত্যতা গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ও ২৬(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ধারায় মামলাটি করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেনের অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে ওই তিন মার্কেটে ১৬টি দোকান, মালয়েশিয়ায় বাড়ি, রাজধানীর প্রীতম-জামান টাওয়ারে ১৫ তলায় মেয়ের নামে সাড়ে ৮ হাজার ৪৪০ বর্গফুটের বাণিজ্যিক স্পেস।
মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, আসামি দেলোয়ার হোসেন দিলু গত ২৭ অক্টোবর দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তার নিজ নামে মোট ৬ কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭০ টাকার স্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন। তবে সম্পদ যাচাইকালে তার নিজ নামে ও বেনামে মোট ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১ হাজার ২২৫ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ যাচাইকালে ৩ কোটি ৪ লাখ ৭১ হাজার ৩৬৪ টাকার স্থাবর সম্পদ গোপনের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে নিজ নামে ১ কোটি ১৯ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন।
আরও পড়ুন: নিজেরাই আত্মসাৎ করল যমুনা ব্যাংকের সাড়ে ১১ কোটি টাকা!
এছাড়াও অনুসন্ধানকালে দেলোয়ার হোসেনের নামে-বেনামে মোট ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়।
আয়কর নথি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তিনি আয়কর নথিতে গৃহ সম্পত্তির আয়, লিমিটেড কোম্পানির বেতন, অন্যান্য উৎসের আয়ের পাশাপাশি লিমিটেড কোম্পানির ব্যবসার আয় তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেছেন। তবে লিমিটেড কোম্পানির ব্যবসার আয় বা দায়-দেনা ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করতে পারেন না। ব্যক্তি শুধু লিমিটেড কোম্পানির সম্মানী গ্রহণ করতে পারেন, যা ব্যক্তির ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করা যায়। অনুসন্ধানকালে দেলোয়ার হোসেনের নথি পর্যালোচনায় মাত্র ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকার গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানকালে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ও পারিবারিক ব্যয় হিসাবে ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯৬৭ টাকা যোগ করলে মোট স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় ১১ কোটি ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ টাকা। যেখান থেকে ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকার গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে মোট ১১ কোটি ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়।
জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়া এলাকা ও দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে তার পরিচিতি ‘মার্কেট খেকো দেলু’ নামে। ২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে তিনি পলাতক। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় দেশের টাকা পাচার করে গড়ে তুলেছেন নানা ব্যবসা-বাণিজ্য।
আরও পড়ুন: আলুতে জীবাণু, করা যাবে না রপ্তানি!