
সম্প্রতি কুমিল্লায় ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে সাত কলেজ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের পরিবারের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন যাচ্ছে, হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ।
ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলো থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন। পরিবারগুলো জানায়, গত ২৩ আগস্ট কোচিংয়ের কথা বলে সাত কলেজ শিক্ষার্থীর অনেকজন বের হয়। তবে, তাদের সাথে তেমন টাকাপয়সা, মোবাইল ফোন কিংবা বাড়তি পোশাকও ছিল না। শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হলেও তারা প্রত্যেকেই পরস্পরের পরিচিত এবং তাদের বয়স ১৭-২৫ বছরের মধ্যে।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের স্বজনদের দাবি, এই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার বাইরে অন্য কোনো বিশেষ বিষয়ের প্রতি তেমন কোনো আগ্রহ তারা দেখেননি। তারা কলেজ, কোচিংয়ের বাইরে যে সময়টি পেতেন তার বেশির ভাগটাই বাসায় বই পড়ে কিংবা মোবাইল ফোনে তারা সময় কাটাতেন। এছাড়াও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাদের সন্তানদের কোনো শত্রু নেই।
আরও পড়ুন: সালমান শাহ বাংলার চিরসবুজ নায়ক!
উল্লেখ্য নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলেন- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইমরান বিন রহমান, সামি, কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম, নিহাল, ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত, একই কলেজের তৃতীয় বর্ষের আমিনুল ইসলাম আলামিন ও ঢাকা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে অনার্স সম্পন্ন করা নিলয়।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইমরান বিন রহমান হলো কুমিল্লা নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুজিবুর রহমানের ছেলে। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) মুজিবর রহমান বলেন, ইমরান পড়াশোনা, কলেজ, কোচিং সেন্টার আর মসজিদ ছাড়া আর কোথাও যায় না৷ ইমরান ২৩ আগস্ট দুপুরে তাকে বলেছিল, ‘আব্বু, আমি আজ কোচিং থেকে রেলস্টেশন মসজিদে তাবলিগের বয়ান শুনতে যাব। ফিরতে দেরি হবে। আম্মুকে বলো না।’ এরপর ওইদিন রাতে ইমরান বাসায় না ফিরলে তারা সারা রাত কুমিল্লা শহরে খুঁজেন। এর পরের দিন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। পরে তারা র্যাব কুমিল্লাকেও জানায়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ১০ শিক্ষক-ছাত্রী আক্রান্ত হলেন হিস্টেরিয়া রোগে!
এছাড়াও কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহালের বাবা সাইফুল ইসলাম এবং নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের অন্যান্য অভিভাবকও প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেন।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী নিখোঁজের জিডি হাতে পেয়েছি। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। তারা দলবদ্ধভাবে কোথাও গেছে, নাকি অন্য কোনো বিষয় তা তদন্তের পর বলতে পারব।’
অন্যদিকে, র্যাব ১১ সিপিসি ২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আশা করি, দ্রুত আপনাদের অগ্রগতি জানাতে পারব।’