৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগে মাছ চাষে কোটিপতি ওসমান!

মো. ওসমান গনি মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশালে। মাছ চাষ শুরু করেছিলেন মাত্র ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগে। ২০১১ সালে মাছ চাষ শুরু করে মাত্র ১১ বছরেই হয়েছেন কোটিপতি। মাছ চাষে আসার বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে তিনি তার মা’র কথা উল্লেখ করেন। তার মাছের খামারের নামও ‘মা মৎস্য খামার’। ৪২ বিঘা আয়তনের পুকুর থেকে প্রতি বছর ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেন ওসমান গণি।
মাছ চাষি পরিচয়ের বাইরে মো. ওসমান গনি মিয়া ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ১০ নং মঠবাড়ি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের একজন সদস্যও। তিনি জানান, প্রতি বছর মাছ ও ডেইরি ফার্মে ৬০-৭০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। বছর শেষে লাভ আসে অর্ধকোটি টাকারও বেশি।
তরুণ উদ্যোক্তা ওসমান গণি ২০১১ সালে মৎস্য চাষ শুরু করলেও ২০১৬ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে ক্যাটফিশ চাষ শুরু করেন। ৪২ বিঘা পুকুরে আছে পাবদা, টেংরা, গুলশা, বাইম, বড় বাংলা, পাঙ্গাশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ। বর্তমানে তার খামারে আনুমানিক আট লাখ পাবদা, আড়াই লাখ টেংরা, দেড় লাখ পাঙ্গাশ, পঞ্চাশ হাজার গুলশা, ১৫ হাজার বাইম, ২০ হাজার ছোট বাংলা এবং ৭ হাজার বড় বাংলা আছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শিশুদের জন্য যুক্তরাজ্য বিনিয়োগ করবে সাড়ে ৫৪ মিলিয়ন পাউন্ড!
পাশাপাশি করেছেন ডেইরি ফার্মও। যেখানে আছে ৬টি গাভী, ২টি বকনা ও ২টি ষাঁড়। তিনি, তার দুই ভাই ও দুই কর্মচারী খামার দেখাশোনা করেন। কর্মচারীদের মাসিক বেতনও দেন ১০ হাজার টাকা করে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার পাশাপাশি ৪০ জন শিক্ষিত যুবককেও তিনি উদ্যোক্তা হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। যেকোনো সমস্যায় নবীন উদ্যোক্তাদের তিনি পরামর্শও দেন।
ওসমান গণির প্রেরণা মা মোছা. মুর্শিদা খাতুন বলেন, আমাদের ১৫ সদস্যের যৌথ পরিবার। ২০১২ সালে ওদের বাবা মারা যাওয়ার পর ওসমান গণিই পরিবারের হাল ধরেছে। ওর বাবার দেওয়া ৬০ হাজার টাকা থেকে মৎস্য চাষ শুরু করে আজ দেড় কোটি টাকার ব্যবসা গড়ে উঠেছে। ওরা তিন ভাই পরিশ্রম করে আজকের এই অবস্থান তৈরি করেছে। তাদের সফলতা দেখে আমি অত্যন্ত খুশি।
ওসমান গণি আরও বলেন, অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছি। পড়ালেখা শেষ করে অনেকে বেকার বসে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করেও চাকুরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে আমি বলতে চাই শিক্ষিত বেকার না হয়ে শিক্ষিত উদ্যোক্তা হন। নিজের পাশাপাশি অন্যদেরও জীবিকার ব্যবস্থা করুন।
আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য শিক্ষিত উদ্যোক্তা হওয়া প্রয়োজন। পুকুরের পিএইচ শনাক্তকরণসহ নানাবিধ কাজে শিক্ষিতদের গুরুত্ব অপরিসীম। আমার মতো যারা তরুণ উদ্যোক্তা আছে তাদের উদ্দেশ্যে বলব, ব্যবসায় লাভ-লোকশান থাকবেই। নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করতে হবে,পরিশ্রম করতে হবে। তাহলে সফলতা আসবেই।
আরও পড়ুন: ভারতীয় বন্দরে আটকা পড়েছে ১০ লাখ টন চাল!