কেজিএফ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একের পর এক খু’ন!
চার বছর আগে মুক্তি পাওয়া দক্ষীণ ভারতীয় সিনেমা কেজিএফ ঝড় তুলেছিল সারা ভারতে। যার রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল ছাড়িয়ে বাংলাদেশেও। এবছর মুক্তি পেয়েছে সেই সিনেমারই দ্বিতীয় কিস্তি। বক্সঅফিস কাঁপিয়ে দেওয়া সেই জনপ্রিয় সেই সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এবার একের পর এক সিরিয়াল খু’নে জড়িয়ে পড়েছে এক ভারতীয় কিশোর। এভাবে পাঁচটি খু’নের পর অবশেষে তাকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে জানা যায় সেই কিশোরের নাম শিবপ্রসাদ। সে এই সিরিয়াল কি’লিং সংগঠিত করেছে শুধুমাত্র বিখ্যাত (!) হওয়ার জন্য। এজন্য সে চার নিরাপত্তারক্ষী সহ মোট পাঁচটি খু’ন করেছে। এবং জানা গেছে তার পরের শিকার হিসেবে তার নিশানা পুলিশ সদস্যের ওপর ছিল।
ওই কিশোরের খু’নের প্রধান নিশানা হিসেবে ছিল ঘুমন্ত নিরাপত্তারক্ষীরা। সে কেবল গভীর রাতে শি’কার ধরতে বের হতো। সে জানায় কেজিএফ সিনেমা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সে সিরিয়াল কি’লিং শুরু করে। তার উদ্দেশ্য ছিল খু’নে’র মাধ্যমে বিখ্যাত হওয়া।
প্রসঙ্গত, একজন ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন চুরি করেছিল সে। সেই সুত্র অনুযায়ী ভারতের ভোপাল থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। আর এ যেনো কেঁচো খুড়তে সাপ! বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক পাঁচটি খু’নে’র তথ্য।
জানা যায়, তার সবগুলো হ’ত্যা’কা’ণ্ডের ধরন প্রায় একই। এবং কারোরই মালামাল লুট করা হয়নি। তাই সবাই বিভ্রান্ত ছিল এসব খু’ন কে করছে এবং কেন করছে। ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে তথাকথিত ‘স্টো’ন’ম্যান’ আতঙ্ক।
পুলিশ জানিয়েছে, ভোপাল থেকে ১৬৯ কিলোমিটার দূরে সাগর এলাকায় সে খু’ন শুরু করে। গত মে মাসে সেখানকার ওভারব্রিজ নির্মাণের এক প্রহরীকে খু’ন করে সে। খু’ন করে মৃ’ত’দেহের ওপর জুতা রেখে যায়।
আরও পড়ুন# সুশান্তকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বিপাকে সাবেক প্রেমিকা
এরপর, সেই কিশোর ২৮ আগস্ট কল্যাণ লোধি নামক এক ব্যক্তিকে হাতুরী দিয়ে মাথা থেঁ’ত’লে খু’ন করে। ভুক্তভোগী একটি কারখানার নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।
এরপরের রাতে তার শি’কার হয় আর্টস অ্যান্ড কমার্স কলেজের নিরাপত্তারক্ষী শম্ভু নারায়ণ। ৬০ বছর বয়সী নারায়ণকে পাথর মেরে খু’ন করা হয়। এবং এরপরের রাতে একটি বাড়ির প্রহরী মঙ্গল আহিরওয়ারকে খু’ন করে অভিযুক্ত কিশোর। গেল বৃহস্পতিবার রাতে মার্বেল রড ব্যবহার করে সোনু ভার্মা (২৩) নামে এক ব্যক্তিকে খু’ন করে সে। নি’হ’ত সোনু ভার্মা একটি মার্বেলের দোকানে নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।
একের পর এক এসব উদ্দেশ্যহীন হত্যাকান্ড সারা শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছিলো। এরপর পুলিশের টহলদারি জোরদার করা হয়। পরে সিসিটিভি ক্যামেরায় একজনকে হত্যার দৃশ্য ধরা পড়লে দেখা যায় হাফপ্যান্ট ও শার্ট পরা এক কিশোর তার শিকারকে হত্যা করে পাথর দিয়ে মাথা থেতলে দিচ্ছে। এরপর কেউ দেখেছে কিনা নিশ্চিত হয়ে সে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় শিকারকে হত্যার পর নিহতের মোবাইলফোন চুরি করার কারনে সেই ফোনের অবস্থানের ভিত্তিতে ভোপাল থেকে সেই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জানা যায় কেজিএফ সিনেমা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সে কেবলমাত্র বিখ্যাত হবার উদ্দেশ্যে সিরিয়াল কিলিং শুরু করে!