নীলফামারীর সৈয়দপুরে চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুঁড়ে মারার ঘটনায় চোখে আঘাত পাওয়া আজমির সরকার নামের ছয় বছরের ছোটো শিশুটি দেশে-বিদেশে এক বছরেরও বেশি সময় চিকিৎসার পরও দৃষ্টিশক্তি আর ফেরেনি।
এমনকি আর কোনো দিনই ওই চোখ দিয়ে কিছু দেখতে পারবে না আজমির, এমনটাই জানিয়েছে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকেরা। অপরদিকে চিকিৎসকদের এমন আশাহীন কথা শুনে ভেঙে পড়েছে আজমিরের পরিবার।
বাবা মায়ের মন যেন কিছুতেই থামে না। তাই এত হতাশার মাঝেও আজমিরের বাবা-মা আদরের শিশুটির চোখের আলো ফেরাতে নেপালে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা পাঁচ লাখ টাকার বেশি ব্যয় করে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন।
ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় মামলা হলেও পুলিশের তদন্তে এখনো পরিচয় মেলেনি সেই দুর্বৃত্তদের। তবে, ইতোমধ্যে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ ঘটনা বন্ধ করতে রেলপথের দুপাশে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও যাত্রীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন পদক্ষেপে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন# নোয়াখালীতে ২ মণ ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ!
উল্লেখ্য, নীলফামারীর ডোমার উপজেলার গোমনাতী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমবাড়ি গ্রামের হ্যাচারি ব্যবসায়ী মারুফ আলম ও তার স্ত্রী নীলা আক্তারের ছোট ছেলে শিশু আজমির সরকার। তারা ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট এ ট্রেনে যাত্রা করছিল। আর শিশু আজমির বাবা মারুফের কোলে বসে গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর ডোমার থেকে সৈয়দপুরের ভাড়া বাসায় ফিরছিল।
তারা ডোমার থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগির সিটে বসে যাচ্ছিলেন। এরপর ট্রেনটি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সৈয়দপুর স্টেশনে প্রবেশের প্রাক্কালে হোম সিগন্যালের কাছে পৌঁছালে তখন পাথর ছুঁড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। আর তাদের ছোঁড়া একটি পাথর এসে আঘাত করে ট্রেনের বগির জানালার পাশে বসা শিশু আজমিরের ডান চোখে। এতে তার চোখ ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। এরপর তাকে তৎক্ষনাৎ সৈয়দপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
পরবর্তীতে তার পরিবার তাকে দেশ বিদেশে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করায়। চিকিৎসার অর্থ জোগাতেও প্রায় সর্বশান্ত। তবুও তারা হাল ছাড়ছেন না।