জাতীয়সন্দেশ

তমব্রু সীমান্তে আজও দিনভর গোলাগুলি!

শেষ হচ্ছে না তমব্রু সীমান্তে গোলাগুলি। মিয়ানমার অংশ থেকে নিয়মিত শোনা যাচ্ছে লাগাতার গুলির শব্দ। এতে ভীত হয়ে পড়েছে সীমান্তের বাসিন্দারা। ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমার অংশে সেনা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সশস্ত্র সংঘর্ষে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে এপারে।

শুরুতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ধুমধুম সীমান্তে শব্দ শোনা যাচ্ছিল। পরে তা তমব্রু সীমান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এবার ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তেও শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির শব্দ। প্রশাসন থেকে গোলাগুলি চলার সময় স্থানীয়দের ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মিয়ানমারের তমব্রু থেকে ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা এবং সন্ধ্যার আগে ফের মর্টার শেলের মতো ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ শোনে সীমান্তের মানুষ। ফলে ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, কৃষকসহ শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ঘর ছেড়ে বের হয়নি সারা দিন। তমব্রু বাজার ছিল অনেকটা ফাঁকা। প্রতিদিন এভাবে গুলির শব্দে তমব্রুর সাধারণ মানুষ সপ্তাহখানেক ধরে ঘরে থাকেছে বলে তারা জানিয়েছে।

আরও পড়ুন# ভোলায় কালো রঙের ডিম পাড়লো হাঁস!

এদিকে কাজ কমে যাওয়ায় আয়ও কমে গেছে সাধারণ মানুষের। এতে অনেক পরিবারে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। গত মঙ্গলবার বান্দরবান জেলা প্রশাসক তমব্রু সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সীমান্তের নিকটবর্তী ১০০ পরিবারকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় আনার নির্দেশ দিলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

এদিকে তমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক বিরাজ করায় সাধারণ কৃষকরাও তাদের চাষের কাজে বের হচ্ছেন না। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী তাদের সবুজ ধানক্ষেত পরিচর্যার অভাবে লালচে রূপ ধারণ করেছে। তমব্রু পশ্চিম কূলের কৃষক জাফর উল্লাহ বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে ক্ষেতে আসিনি এক দিনও। প্রায় দেড় একর ধানক্ষেত মিয়ানমারের ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তবর্তী হওয়ায় প্রাণভয়ে ঘরের স্ত্রী, সন্তানরা বাঁধা দিচ্ছেন। আজ সকালে এসে দেখি আমার এত সুন্দর সবুজ ক্ষেত লালচে হয়ে গেছে। আজ নতুন করে সার দিতে নামতেই আবারও গোলাগুলির আওয়াজ শুনি। ভয়ে সারা শরীর কাঁপছে, তবু ক্ষেত নষ্ট হলে না খেয়ে থাকতে হবে অনেক দিন, এ চিন্তায় পুরো ক্ষেতে সারা ছিটানো শেষ করলাম। কয়েক দিন পর এসে আবার দেখে যাব। ’

তমব্রু বাজারের দোকানদার আবু ছিদ্দিক বলেন, ‘সারা দিন ছোট পানের দোকান নিয়ে বসে আছি, বেচাবিক্রি নেই। থাকবে কেমনে? এত গোলাগুলির শব্দে কেউ কি আর ঘর ছেড়ে বের হয়? ছোট ব্যবসা দিয়ে পরিবার চলত। এখন আয় রোজগার একেবারেই নেই বললেই চলে।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।