জাতীয়সন্দেশ

বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে খু’ন করল প্রেমিক গৃহশিক্ষক!

ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে প্রেম, তারপর বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকা তথা ছাত্রীকে খু’ন করলেন প্রেমিক গৃহশিক্ষক! ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। নি’হত ওই ছাত্রীর নাম আশিকা জাহান সিপা। তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। অভিযুক্ত বায়েজিদ সরকার তাকে খু’ন করে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।

আজ মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল সিপা হ’ত্যার রহস্য উদঘাটন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক স্বাগত সৌম্যের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি বায়েজিদ সরকার। তিনি হ’ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

গৃহশিক্ষক বা্যেজিদ সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের খিদিরপুরের মুখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে মাস্টার্স শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।

নিহত স্কুলছাত্রী সিপা সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের শাহিনুর ইসলামের মেয়ে। সে পরিবারসহ জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত।

নিহত শিক্ষার্থীর বাবা শাহিনুর ইসলাম বলেন, প্রথমদিন থেকে সবাই বায়েজিদকে সন্দেহ করেছিলাম। সেজন্য সাধারণ মানুষ তাকে সেদিন পুলিশের কাছে তুলে দেয়। এখন সে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। সে আমার মেয়েকে হ’ত্যা করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

আরও পড়ুন# সহকর্মীর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে পুলিশ সদস্য কারাগারে!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, গৃহশিক্ষক বায়েজিদ সরকার মুন্সেফপাড়ায় বিভিন্ন বাসায় টিউশনি করতেন। সিপাকেও তার বাসায় গিয়ে গত তিন বছর ধরে পড়িয়েছেন। এরই মধ্যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হ’ত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বায়েজিদ পাশের একটি বাড়িতে এক শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছিলেন। এসময় সেই বাড়ি খালি থাকায় সে সিপাকে সেখানে আসতে বলেন। সিপা সেখানে যাওয়ার পর প্রতিবেশী একজন দেখে ফেলেন।

এ নিয়ে আশপাশের বাড়িতে তাদের প্রেমের ব্যাপারে কানাঘুষা চলছিল। তাই সিপার আত্মসম্মানে লাগায় বিয়ের জন্য বায়েজিদকে চাপ দিতে। এ নিয়ে ঘটনার আগের দিন উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়। একপর্যায়ে মধ্যরাতে সিপা কাউকে কিছু না বলে লুকিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বের হওয়ার পর শহরের বোডিং মাঠ পুকুরপাড়ে বায়েজিদ ও সিপা মিলিত হয়। সেখানে তাদের মধ্যে বিয়ের বিষয় নিয়ে আরেকদফা বাগবিতণ্ডা হয়।

তর্কের একপর্যায়ে বায়েজিদ জানায়, তিনি সিপাকে বিয়ে করতে চান না। এই কথা শুনে সিপা ক্ষুব্ধ হলে বায়েজিদ তার চুলের মুঠি ধরে পাশের গাছে মাথা আঘাত করেন। এতে সিপা অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় বায়েজিদ।

পরদিন রবিবার দুপুরে বোডিং মাঠ পুকুর থেকে সিপার ম’রদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পর বা্যেজিদকে সেখানে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে স্থানীয়রা উত্তম মাধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। ঘটনার পর সিপার বাবা বায়েজিদকে আসামি করে একটি হ’ত্যামামলা দায়ের করেন।

পরে গত শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় হ’ত্যার দায় শিকার করে জবানবন্দি দেন অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।