ধর্ম

আযানের জবাব কিভাবে দিতে হয়?

সকল মুসলিদের জানা দরকার আজানের জবাবা সহি ভাবে কিভাবে দিতে হয় আজ আমরা জানবো আযানের জবাব কিভাবে দিতে হয় ......

অনুলিপি ডেস্কঃ পৃথিবীর সবচেয়ে সুমধুর ধ্বনির নাম আজান। এটি মুসলিম-অমুসলিম -নির্বিশেষে কোটি মানুষের উপলব্ধি। ইসলামে আজানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। আজান শুনে আজানের জবাব দেওয়ারও রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। আজান শ্রবণকারীরও মৌখিকভাবে আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নত। আমরা মুসলমান, আমরা ভাগ্যবান। কেননা, ইসলামতো পরশপাথর। এর ছোঁয়ায় নিজেকে খাঁটি সোনার মতো খাঁটি মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায়। সকাল প্রকার অন্যায়, অসৎ কাজকে উপেক্ষা করে সৎপথে, দ্বীনের পথে আসা যায়। দ্বীনের পথে আসলে, দ্বীনি আমল করলেই তার জন্য জান্নাত পাওয়া আরও সহজ। কুরআন ও হাদিসে ছোট-বড় অনেক আমল রয়েছে যেগুলো আমাদের জান্নাতে যাওয়ার পথকে আরও সুগম করে। কিন্তু আমরা সব আমলকে গুরুত্ব দিই না। বিশেষ করে ছোট ছোট আমলগুলো এড়িয়ে যাই। যেমন- আযানের জবাব দেওয়া। আমলটি খুব ছোট এবং পালন করাও সহজ। তবুও আমরা অধিকাংশ মানুষ এটি করি না। এ আমলটি খুবই তাৎপর্যময় ও ফজিলতপূর্ণ।

আযান আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো ঘোষণা, আহবান, ডাকা। অর্থাৎ, আযান অর্থ হলো নামাযের জন্য ডাকা বা আহবান করা। আযান শুনে নামাজ পড়তে হবে। নামাজ মুসলমানের জন্য ফরয করা হয়েছে। আযানের জবাব দেওয়াও উচিৎ, তবে এটি বাধ্যতামূলক নয় এমন নয় যে, এটি না করলে গুনাহ হবে, বরং এটি করলে সওয়াব পাওয়া যাবে। আযান দেওয়ার জন্যই কিয়ামতের দিন মুয়াজ্জিন অধিক সম্মানী হবেন। মহানবী (সা.)বলেছেন, মানুষ যদি জানত আযান দেওয়ার ভেতরে কী মর্যাদা রয়েছে, মুয়াজ্জিনের জন্য কী মর্যাদা রয়েছে, তাহলে লটারি করে মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করত বিনা পয়সায়। (বুখারী শরীফ)।

আজানের জবাব দেওয়ার নিয়ম > মুয়াজ্জিন প্রত্যেকটি বাক্য বলে থামার পর শ্রোতা ওই বাক্যটি নিজেও অনুরূপভাবে বলবে। এটা হলো- আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি। কিন্তু মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ এবং ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতা এটির পরিবর্তে ‘লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবে। এটাই ফিকাহবিদদের বিশুদ্ধ অভিমত। (মুসলিম, হাদিস : ৩৮৫)

যারা জবাব দেবেন না > নামাজরত, পানাহারে মগ্ন, মলমূত্র ত্যাগকারী ও স্ত্রীর সঙ্গে শারিরিক সম্পর্কে লিপ্ত ব্যক্তি আজানের জবাব দেবে না। ঋতুকালীন সময়ে নারীরাও আজানের উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। অনেক ফিকাহবিদদের মতে আজানের পরপর যদি উল্লিখিত কাজ থেকে অবসর হওয়া যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আজানের জবাব দিয়ে দেওয়া উত্তম। কেউ কোরআন তেলাওয়াতে থাকলে সাময়িক তেলাওয়াত বন্ধ রেখে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। আজানের সময় দুনিয়াবি কথা ও কাজে লিপ্ত থাকা : আজানের সময় চুপ থাকা সুন্নত। একান্ত প্রয়োজন না হলে সাধারণ দ্বিনি ও দুনিয়াবি কথা বা কাজে লিপ্ত থাকা অনুচিত। সাধারণ বক্তৃতা বা সেমিনার চলাকালে আজান হলে সাময়িক তা স্থগিত রাখবে। ওয়াজ বা কোনো দ্বিনি মাহফিল চলাকালেও তা সাময়িক বন্ধ রেখে সবাইকে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। মনে রাখতে হবে, একজন আজানের জবাব দিলে সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায় না। কেননা আজানের জবাব দেওয়া শ্রবণকারী সব মুসলমানের জন্য সুন্নত। আর আজানের জবাব দেওয়া সুন্নতে কেফায়া নয়। (ফাতহুল কাদির : ১/২৪৮, রদ্দুল মুহতার : ১/৩৯৯, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৫/৪২৭)

রেডিও-টেলিভিশনের আজানের জবাব > মুয়াজ্জিনের আজান রেডিও-টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হলে তার জবাব দেওয়া সুন্নত। রেকর্ডিংয়ের হলে তার জবাব দেওয়া সুন্নত নয়। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/৬৪৬, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ১/১৭০)
আজানের পর দোয়া : আজানের পর দরুদ শরিফ ও দোয়া পাঠ করা সুন্নত। হাদিস শরিফে এর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আজানের পর ‘আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ…’ এ দোয়াটি পাঠ করবে, তার জন্য আখিরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৪)

আরো পড়ুন: ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করার একদম সহজ উপায় তাও আবার ঘরে বসেই

আজানের পর হাত তুলে মোনাজাত > আজানের পর দরুদ শরিফ পড়ে একটি বিশেষ দোয়া পড়ার কথা হাদিস শরিফে রয়েছে, তবে আজানের পর হাত তুলে দোয়া পড়া ও মোনাজাত করার কথা হাদিসে নেই। (ফয়জুল বারি : ২/১৬৭, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ১৬/২০৮)
আজানের সময় কথা-কাজ নয় > চুপ থেকে আজান শোনা সুন্নত। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ দ্বীনি-দুনিয়াবি কথা বা কাজে লিপ্ত থাকাও অনুচিত।তবে মনে রাখা উচিত, একজন আজানের জবাব দিলে, সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায় না। কারণ, আজান শ্রবণকারী প্রত্যেক মুসলিমের জন্য উত্তর দেওয়া জন্য সুন্নত। আর আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নতে কেফায়া নয়। (রদ্দুল মুহতার : ১/৩৯৯; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৫/৪২৭; ফাতহুল কাদির : ১/২৪৮) রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, এর জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১১)

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।