লাইফস্টাইলস্বাস্থ্য

কোন ধরণের চা হার্টের জন্য ভাল তা জানেন কি?

আমরা অনেকেই চা খেতে পছন্দ করি আবার অনেকে চায়ের প্রতি আশক্ত চা না খেয়ে থাকতেই পানি না চলোন জেনে নেই কোন ধরণের চা হার্টের জন্য ভাল ..

অনুলিপি ডেস্কঃ এক কাপ চা ছাড়া দিন শুরু করা ভাবতেই পারেন না অনেকে। চা না খেলে যেন তাদের কোন কাজেই মন বসে না। সকাল বেলা ধোয়া ওড়ানো এক কাপ চা যেন সকল কাজের প্রশান্তি যোগায়। সারা দিনের কর্ম উদ্দীপনা বাড়িয়ে দিতে এই এক কাপ চায়ের জুড়ি মেলা ভার। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফ্রেশ হয়ে এক কাপ ধোঁওয়া ওঠা চা-ই কিন্তু আমাদের সারাদিনের এনার্জি সরবরাহ করে। আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় পানীয় হল চা। কারোর ক্ষেত্রে চা পান বিলাসিতা হলেও বেশিরভাগই কিন্তু চায়ের প্রেমে মজে। আমাদের মাঝে কেউ লাল চা খেতে পছন্দ করেন। আবার কেউ দুধ চা খেতে ভালোবাসেন। এখন আমাদের জানা উচিত আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কোন চা সবচেয়ে উপকারী দুধ চা, নাকি লাল চা। পুষ্টিবিদগণের মতে লাল চা কঠিন রোগ হৃদরোগ ও ক্যানসার থেকে মুক্তি দিবে।

সারাদিনে তিন থেকে চার কাপ চা অনেকেই খান। কিন্তু কেমন চা খাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে উপকারিতা। চা আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, সেই সঙ্গে চা হল ক্যানসার প্রতিরোধক। এছাড়াও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভূমিকা রয়েছে চায়ের। আর তাই চা বাছাই করার আগে অবশ্যই কোনও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন। লাল চা কে আমরা কয়েক নামেই চিনে থাকি। এই যেমন কেউ বলে লাল চা, রঙ চা, বা কালো চা এই তিন নামেই পরিচিত। ইংরেজিতে বলা হয় ব্ল্যাক টি। অনেকেই মনে করে দিনের শুরুটা যদি লাল চা দিয়ে শুরু করা যায়, তার চেয়ে ভালো অভ্যাস নাকি আর কিছুই হতে পারে না। আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ এই জাতীয় পানীয়। এই চায়ে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ফাইটোকেমিক্যাল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে, যা শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সক্ষম।সেই সঙ্গে জেনে নিন কোন ধরনের চা আপনি নিজের সংগ্রহে রাখবেন এবং রোজ খাবেন।

দারুচিনি চা > দারুচিনি, গোলমরিচ, লেবুর রস ও মধু দিয়ে বানাতে পারেন ভেষজ চা। এক চামচ দারুচিনির গুঁড়া, আধ চামচ গোলমরিচ গুঁড়া, এক চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধুর মধ্যে এক কাপ ফুটন্ত পানি দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ছেঁকে নিন। দারুচিনির কুমারিন, গোলমরিচের পিপারিন প্রদাহের প্রবণতা কমাবে, বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। অশ্বগন্ধা চা > রোজ সকালে বা বিকেলে এক কাপ অশ্বগন্ধার চা খেতে পারেন। এক কাপ ফুটন্ত জলে এক চা চামচ অশ্বগন্ধা মূলের গুঁড়া দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন মিনিট ১০-১৫। ছেঁকে লেবুর রস ও মধু দিয়ে খান। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি প্রদাহের প্রবণতা কমবে। সেই দূরে থাকবে হৃদ্‌রোগেও। ব্ল্যাক টি > প্রতিদিন তিন কাপ চিনি ছাড়া লিকার চা খান। এক্ষেত্রে চা পাতা কিন্তু ভাল হওয়া জরুরি। তবেই আপনি সঠিক স্বাদ পাবেন। এই চা আমাদের ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও যাদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্যেও কিন্তু বেশ ভাল এই চা। ভাল চা পাতা তাই অবশ্যই রাখুন সংগ্রহে। গ্রিন টি > কোলেস্টেরল , ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে খুব ভাল কাজ করে গ্রিন টি। আর তাই প্রতিদিন তিন কাপ গ্রিন টি অবশ্যি রাখুন ডায়েটে। এতে কিন্তু ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। তবে গ্রিন টিও অবশ্যই দুধ চিনি ছাড়া খাবেন। গ্রিন-টি এর সঙ্গে থেঁতো করে আদা মিশিয়ে নিতে পারলে কিন্তু আরও ভাল।
লেবু ও গোলমরিচের চা

লেবু ও গোলমরিচের এই ঝাঁজালো চা কেবল শরীরকে ‘ডেটক্স’ করে না পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কালো গোল মরিচ নানান অসুখের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং গলার খুশখুশেভাব কমায়। প্রথমে এক কাপ পানি ফুটিয়ে নিন। এতে একটা লেবুর সম্পূর্ণ রস ও ১/৪ চা-চামচ কালো গোল মরিচের গুঁড়া মেশান। উপকারিতা বাড়াতে এতে এক চিমটি হলুদ মেশাতে পারেন। তিন চার মিনিট অপেক্ষা করে তা একটা কাপে ঢেলে নিন। মিষ্টিভাব আনতে এতে এক চামচ মধু যোগ করতে পারেন।
ওলং চা > এই চা বানানোর পদ্ধতি খানিকটা আলাদা। চা পাতাকে উচ্চ তাপে পুড়িয়ে সেখান থেকে ওলং টি তৈরি করা হয়। এই চায়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। সেই সঙ্গে এই চায়ের স্বাদও হয় আলাদা। যাঁদের হার্টের সমস্যা রয়েছে, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের সমস্যা রয়েছে তাঁরা কিন্তু এই চা অবশ্যই রাখুন রোজকার ডায়েটে। তবে এই চা খাওয়ার আগে একবার অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।

আরো পড়ুন: অবশেষে জানা গেল অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের আসল নাম!

দারচিনি চা > জল যখন ফুটবে তখন তার মধ্যে কয়েক টুকরো দারচিনি ফেলে দিন। এবার জল ফুটে গেলে তা বন্ধ করে চা পাতা দিন। এবার ছেঁকে নিলেই তৈরি দারচিনি চা। এই চা কিন্তু শরীরের জন্য খুবই ভাল। কাগজের কাপে চা পানে সাবধান > এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সারা দিনে অন্তত তিন কাপ চা খেয়েই থাকেন। আর প্রতি বারই যদি কাগজের তৈরি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে শরীরে প্রবেশ করে প্রায় পঁচাত্তর হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক। এই ধরনের প্লাস্টিকে থাকে আয়ন, প্যালাডিয়াম, ক্রোমিয়াম এবং ক্যাডমিয়ামের মতো ক্ষতিকর সব পদার্থ। এ ছাড়াও মাইক্রোপ্লাস্টিকে রয়েছে বিসফেনল জাতীয় টক্সিক পদার্থ। তা ক্যানসারের অন্যতম কারণ। এই উপাদান মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন ক্ষরণ ব্যাহত করে। অন্য দিকে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যাও কমিয়ে দিতে পারে এই পদার্থ। ‘পলিইথিলিন’ জাতীয় এই ধরনের বিষাক্ত পদার্থ শরীরে প্রবেশ করলে রক্তের কোষগুলো ছোট ছোট অংশে ভেঙে গিয়ে প্লাজ়মা কোষের হার অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যেতে পারে। তা থেকেই মারণরোগের আশঙ্কা তৈরি হয়। আদা ও পুদিনা চা > তাজা পুদিনা কেবল খাবারের স্বাদই বাড়ায় না বরং হজমেও সহায়তা করে ও পাকস্থলির সমস্যা দূর করে। অন্যদিকে আদা রক্ত পরিষ্কার করে শরীর সুস্থ রাখে এবং ঠাণ্ডার প্রভাব কমায়। একটা কাপ ফুটন্ত পানিতে ৬-৭টি পুদিনার পাতা ও এক টেবিল-চামচ আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। আদা টুকরা করে দেওয়ার চেয়ে কুচি করে দেওয়া ভালো, এতে সম্পূর্ণ নির্যাস বের হয়। চার পাঁচ মিনিট ভালো মতো ফুটিয়ে, গরম গরম পরিবেশন করুন।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।