আন্তর্জাতিকসন্দেশ

জলবায়ু ঝুঁকি: বিশ্বব্যাংকের রেকর্ড ৩১.৭ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন!

নির্বিচারে গাছ কাটা, অতিমাত্রায় ফসিল ফুয়েলের ব্যবহারে দিন দিন বড়ো বড়ো পা ফেলে বাড়ছে জলবায়ু ঝুঁকি। এবার এই ঝুঁকি মোকাবিলায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক। এর পরিমাণ প্রায় ৩১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে উল্লেখ করা হয়। এর আগে কখনো এই পরিমাণে অর্থায়ন করেনি বিশ্বব্যাংক। এই খাতে ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশও। এই তথ্য শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দেশগুলিকে সহায়তা করতে রেকর্ড ৩১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করেছে। আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফলে এক বছরের ব্যবধানে এই খাতে ১৯ শতাংশ বেশি অর্থায়ন করেছে সংস্থাটি।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, ২০২২ সালে জলবায়ু মোকাবিলায় বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা দেশগুলিকে তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উচ্চ-অগ্রাধিকারযুক্ত জলবায়ু সম্পর্কিত প্রকল্পগুলি চিহ্নিত করতে এবং তা মোকাবিলায় সক্ষম করতে ৩১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছি। কার্বন নিঃসরণ কমানোই আমাদের লক্ষ্য। এটা কমিয়ে কীভাবে টেকসই উন্নয়ন করা যায় তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে বিপুল পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করে তা সরবরাহ করবো বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শিশুদের জন্য যুক্তরাজ্য বিনিয়োগ করবে সাড়ে ৫৪ মিলিয়ন পাউন্ড!

সংস্থাটির তথ্যানুসারে, বিশ্বব্যাংকের দ্যা ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকন্সট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি) এবং ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) যৌথভাবে ২৬ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করেছে। এর প্রায় অর্ধেক ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিশেষভাবে অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বেসরকারি খাতের শাখা আইএফসি জলবায়ু অর্থায়নে ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করেছে। অন্যান্য উৎস থেকে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্বব্যাংকের আরেক সংস্থা মাল্টিলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সি এক দশমিক এক বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করেছে।

এই ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশও। রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাসট্রাকচার ফর অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন (রিভার) প্রকল্পের অধীনে বিশ্বব্যাংক ৫০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। ১৪টি বন্যা উপদ্রুত (উপকূলীয় এলাকার বাইরে) জেলায় দুর্যোগ প্রস্তুতি বিষয়ক উন্নতি সাধনের লক্ষে এই ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি। ৫ শতাধিক বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, সংযোগ সড়ক এবং জলবায়ু সহনশীল কমিউনিটি অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে এই প্রকল্পের আওতায়। স্বাভাবিক সময়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হবে। এসব কেন্দ্রে সৌরবিদ্যুৎ, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার সুবিধা থাকবে।

উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও ১৪টি জেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এসব জেলা হলো- নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।