ফিচার

নাক ডাকা থেকে মুক্তির সহজ উপায়

আমাদের মাঝে অনেকেই ঘুমের মধ্যে নিজের অজান্তেই নাক ডাকেন। নাক ডাকা মোটেও আরামদায়ক কোন বিষয় নয়। নাক ডাকার জন্য ঘুমিয়ে শান্তি পান না পাশে শুয়ে থাকা ব্যক্তি। নাক ডাকার সমস্যাটা শুধু কয়েকজনের নয়। প্রায় ৪৫% মানুষ নাক ডাকার সমস্যা ভুগেন। এই নাক ডাকার জন্য অনেক সময় বন্ধু মহলে, পরিবারের নিকট হাসির খোরাক হতে হয়। নাক ডাকা কোন স্থায়ী সমস্যা নয়।

নাক ডাকার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে একটু জানলেই সহজেই বশে আসতে পারে বিরক্তিকর এই বিষয়টি। আমাদের অনেকেরই জানা নেই কিভাবে নিস্তার মিলবে নাক ডাকার সমস্যা থেকে। অনেকেই হয়তো এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তবে শুধু ওষুধ খেয়ে নয় বরং সচেতনতার মাধ্যমেও এ সমস্যার সমাধান করা যায়।

আমরা অনেকে নাক ডাকার সমস্যার সমাধানের জন্য বাজারের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করে থাকি। অনেকে আমরা হয়তো জানি না এগুলো আমাদের জন্য ক্ষতি হয়ে দাঁড়ায়। তার চেয়ে বরং প্রাকৃতিক উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করুন। তাহলে চলুন জেনে নেই কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে নাক ডাকার সমস্যা সমাধান করা যায়- আপনার ঘুমানোর সময় নাক ও গলা দিয়ে ঠিক মত শ্বাস বেরোতে না পারলে গলা ও নাকের আশপাশের টিস্যুগুলো কাঁপতে থাকে। ফলে গর্জন বেরিয়ে আসে ক্ষণে ক্ষণে।

১. আমাদের মধ্যে যারা অতিরিক্ত ওজনে ভুগছি। তাদের মধ্যে নাক ডাকার অভ্যাসটা বেশি লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে ঘাড় ও গলায় বেশি চর্বি জমলে এ সমস্যাটি বেড়ে যায়। কারণ এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঘুমের সময় গলার অভ্যন্তরীণ ব্যাস সংকীর্ণ হয়ে আসে। এর ফলে নাক ডাকা শুরু হয়।
২.বিছানা পরিষ্কার রাখুন>ঘরে বিছানায় বেশি ধুলাবালি থাকলে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা হয় অনেকের। নাকের নালিতে ধুলা সংক্রমিত হয়ে নাকের পেশি ফুলে উঠতে পারে। এ কারণে নাক ডাকার শব্দ হতে পারে। তাই বিছানা ও ঘর ভালো মত পরিষ্কার রাখা দরকার।
৩. মদ্যপান ও ধূমপানের অভ্যাস ছাড়ুন> অ্যালকোহল কিংবা মদজাতীয় পানীয় জিভের পেশিগুলো শিথিল করে দেয়। এতে শ্বাসনালি সংকুচিত হয়ে পড়ে। ফলে মানুষ নাক ডাকতে পারে। এই অভ্যাস ত্যাগ করুন।
৪. আপনার বালিশ পরিবর্তন করার মাধ্যমেও নাক ডাকার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অনেক সময় বালিশে বিদ্যমান অ্যালার্জেন আপনার নাক ডাকার কারণ হতে পারে। কারণ বালিশে সহজেই ধুলাবালি জমা হয় এবং অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এ কারণে বালিশের কভারটি পরিষ্কার রাখুন।
৫. নাক না গলা জেনে নিন>আপনি নাক দিয়ে শব্দটা করছেন, নাকি গলা দিয়ে-সেটা আগে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। অনেকের ক্ষেত্রে আবার দুটাই একসঙ্গে হতে পারে। তবে নাক বা গলার যেকোনো একটায় সমস্যা থাকলে নিশ্চিন্তে আপনি নাকের ড্রপ বা গলার স্প্রে-যেকোনো একটা বাদ দিয়ে দিতে পারেন।

আরো পড়ুন: গাড়িতে বমি বন্ধ করার সহজ ঘরোয়া উপায়

৬.শরীরচর্চা> নিয়মিত শরীরচর্চায় রক্তের চলাচল ও হৃত্‍পিণ্ডের স্পন্দন বাড়ায়। আর এতে করে ঘুমও ভালো হয়। এই কারণে নাক ডাকা কমাতে হলে প্রতিদিন শরীরচর্চার অভ্যাস করা জরুরি।
৭.জৈবিক কারণ খুঁজুন> নাকের নালিতে পুরু নরম প্রলেপ থাকা, অন্য কোনো কারণে নাকের নালি আংশিক সংকুচিত থাকা এবং জিহ্বার পেছনে বায়ুপথ সংকুচিত থাকা এই তিনটি জৈবিক কারণ নাক ডাকার উত্‍স হতে পারে। ঠিক কোনটি নাক ডাকার কারণ তা জানার জন্যে একজন নাক-কান-গলারোগ বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে পরামর্শ নিন।
৮.প্রথমেই আপনার ঘুমের অবস্থান পরিবর্তন করুন। যারা চিৎ হয়ে ঘুমান; তাদের জিহ্বা এবং গলার নরম তালু শুকিয়ে গিয়ে ঘুমের সময় কম্পনের শব্দ সৃষ্টি করে। এর ফলে নাক ডাকার শব্দ বেড়ে যায়। এজন্য চিৎ হয়ে শোয়া এড়িয়ে বরং যেকোনো দিকে কাঁত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ুন।
৯.সাধারণ করণীয়> মেদবহুল শরীরে ওজন কমানো অত্যাবশ্যক। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ওজন কমালেই নাক ডাকা সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। রোগীর ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে। ঘুমের ওষুধ সেবন করার অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে। দিবাভাগে অতিরিক্ত পরিশ্রমও পরিহার করা উচিত।
১০.সবসময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। এতে নাক ডাকার পরিমাণ কমবে। শরীর ডিহাইড্রেশনের শিকার হলে নাক ডাকার পরিমাণ বাড়ে। ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের মতে, সুস্থ নারীদের প্রতিদিন ১১ কাপ এবং পুরুষদের ১৬ কাপ পানি পান করা উচিত।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।