শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়
শীতে ত্বক শুষ্ক ত্বকের হাত থেকে বাঁচতে পর্যাপ্তপাণি পান করুন, আমরা জানি পানির অপর নাম জীবন।পানি ছাড়া কেউ বাচঁতে পারেনা। শরীর ভিতর থেকে আর্দ্র না হলে তার ছাপ পড়বে ত্বকের উপর

অনুলিপি ডেস্কঃ শীতে ত্বকের যত্ন ছাড়া থাকা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে আমাদের জন্য। কেননা শীতকালে আমদের ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। যার জন্য আমাদের শীতকালে ত্বকের যত্ন করতে হয়। শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় আমদের আজকের প্রতিবেদন।
শীতে ত্বক শুষ্ক ত্বকের হাত থেকে বাঁচতে পর্যাপ্তপাণি পান করুন, আমরা জানি পানির অপর নাম জীবন।পানি ছাড়া কেউ বাচঁতে পারেনা। শরীর ভিতর থেকে আর্দ্র না হলে তার ছাপ পড়বে ত্বকের উপর৷ তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানিপান করুন৷ দিনে অন্ততপক্ষে দুই লিটার পানি পান করা একান্ত আবশ্যক। ডাবের পানি, ফলের রসও পান করতে পারেন৷শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা বজায়ে মাঝে মাঝে মুখে পানির ঝাপটা দিন।
ফলে সহজে ত্বক শুষ্ক হবে না। গোসলের সময় আরাম অনুভব হলেও অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে মুখ, মাথা ধোয়া থেকে বিরত থাকবেন। অতিরিক্ত গরম পানি মুখের ত্বকের ফলিকলগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে যা ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া কিছু উপায় নিচে দেওয়া হলো।
অ্যালো ভেরাঃ অ্যালোভেরা এমনই একটি উপকারি উদ্ভিদ, যা টবে লাগালে খুব সহজেই বড় হয়৷ একটি অ্যালোভেরা বড় পাতা নিন, মাঝখান থেকে কেটে ফেলুন পাতা টি কে৷ অ্যালোভেরা জেল টা বের করে নিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন৷ মুখের ছোটখাটো পিম্পলের ইনফেকশনও ভালো হয়ে যায়৷ আর্দ্রতা জোগানোর পাশাপাশি এই শাঁস বা জেলের পরত আপনার ত্বকের উপর তৈরি করে রাখে সুরক্ষার আবরণ, তাতে দূষণ আপনার ত্বকে কোনও ছাপ ফেলতে পারে না।
ফলে আপনার ত্বকের খস খসে ভাব টা দূর হবে।ত্বক হবে উজ্জল।এটি ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী। ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে, মসৃণ রাখতে, দাগ মুক্ত করতে ।সাবধানতা হলো,অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে রোদে যাওয়া যাবেনা কারন,ক্ষতি হওয়ার সমম্ভাবনা থাকে।
দুধ বা দইঃ চার-পাচঁ গ্লাস কাচা ঠান্ডা দই বা দুধে নরম কাপড় বা তুলো ভিজিয়ে নিন সারা শরীরে লাগান৷ অন্তত পাঁচ মিনিট এই প্রলেপটি ব্যবহার করুন।তাতে ত্বকের জ্বালাভাব দূর হবে৷ দই বা দুধে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিডের প্রভাবে ঝলমলিয়ে উঠবে আপনার ত্বক৷ কাঁচা দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন৷ তার পর সেটি আপনার গোটা শরীরে লাগিয়ে নিন গোসলের আগে। দই দিয়েও এই লেপটি তৈরি করা যায়৷ প্রলেপটি শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন ও গোসল করে নিন। কাঁচা দুধে বিদ্যমান উপাদানসমূহ কাঁচা দুধে থাকা উপাদানগুলো সৌন্দর্যচর্চায় কতটুকু কার্যকরী সেটাই এখন আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো।
নারকেল তেলঃ মুখ ও শরীরের ত্বকের পাশাপাশি গোড়ালি, হাঁটু, কনুইয়েরও বিশেষ খেয়াল রাখা প্রয়োজন, বিশেষ করে শীতকালে৷ না হলে এগুলি রুক্ষ ও কালো হয়ে যায়৷ প্রথমে এই অংশের ত্বক ভিজিয়ে রাখুন পানিতে ৷ ত্বক যখন কুঁচকে যাবে, তখন বুঝবেন যা যথেষ্ট আর্দ্রতা পেয়েছে৷ নারকেল তেল সাধারণত শীতকালে জমে যায়৷ জমা তেলের মোটা পরত লাগিয়ে নিন আর্দ্র ত্বকে৷ তার পর মোজা বা লম্বা হাতা টপ বা পাজামা পরে ঘুমোতে যান৷ টানা বেশ কয়েকদিন করলে নিজেই উপকার টা বুঝতে পারবেন৷
ত্বকের যত্নে এসবের গুরত্বঃ
০১. ভিটামিন এ ,অত্যাধিক শুষ্ক, রুক্ষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত চামড়ায় নমনীয়তা ফিরিয়ে আনতে এবং নতুন ত্বকের কোষ গঠনে সহায়তা করে।
০২. ভিটামিন ডি,কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে তুলে স্কিন এইজিং-এর প্রসেস-কে ধীর গতিতে নিয়ে যায়। ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে এবং প্রিম্যাচিউর এইজিং হতে দেয় না। ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়িয়ে তুলে ত্বককে করে তোলে দাগমুক্ত আর প্রাণবন্ত।
০৩. ভিটামিন বি৬,ত্বকের নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে সজীব রাখে।
আরো পড়ুনঃ অসম্ভব হলেও সত্য, মাথা ছাড়াই ১৮ মাস বেঁচে ছিলেন এই মুরগি
০৪. ভিটামিন বি ১২,ত্বককে দাগমুক্ত করে উজ্জ্বল করে তোলে। ত্বকের রঙের অসামঞ্জস্যতা দূর করে।
০৫. বায়োটিন,অত্যাধিক শুষ্ক, ফেটে যাওয়া ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি দিয়ে সারিয়ে তোলে। ত্বককে পুনরোজ্জীবিত করে তোলে।
০৬. প্রোটিন,ত্বকের কোষগুলো রিপেয়ার করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
০৭. ল্যাকটিক এসিড,ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি আর প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা দিয়ে ত্বককে রাখে তারুণ্যময় আর দীপ্তিময়।
০৮. পটাসিয়াম,শুষ্ক ত্বকের চুলকানোর সমস্যা দূর করে।
০৯. ক্যালসিয়াম,ত্বকের সবচেয়ে উপরের লেয়ার তৈরি করে। স্কিন-এর ইলাস্টিসিটি বাড়ায়, কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়ায়, ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যালের থেকে রক্ষা করে।
১০. ম্যাগনেসিয়াম,উজ্জ্বল, সমস্যামুক্ত, তারুণ্যে দীপ্তিময় ত্বক পেতে সাহায্য করে।
১১. সেলেনিয়াম,সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয় সেটা রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। ত্বককে করে তোলে নরম, কোমল আর তারুণ্যে দীপ্তিময়।