স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল

পাকা চুল প্রাকৃতিকভাবে কালো করবেন যেভাবে।

আমরা অনেকেই পাকা চুল নিয়ে টেনশনে আছি , আজ আমরা জানবো ঘরোয়া উপায়ে পাকা চুল প্রাকৃতিকভাবে কালো করবেন যেভাবে চলোন জেনে নেওয় জাক

অনুলিপি ডেস্কঃ মানুষের সৌন্দর্য পূর্ণতা পায় চুলের মাধ্যমে। আমাদের মাঝে অনেকেরই সমস্যা হল অল্প বয়সেই চুলে পাক ধরছে কারও কারও। বয়স বাড়লে চুলে পাক ধরা স্বাভাবিক, কিন্তু অল্প বয়সে এমনটা হলে মন খারাপ করাটাই স্বাভাবিক। অনেকেই খুব অল্প বয়সে স্টাইলের জন্য চুলে সাদা রঙ করে নেন। আবার অনেকে কীভাবে চুল কালো করা যায় সে নিয়ে থাকেন চিন্তায়। অনেকেই পাকা চুলের হাত থেকে মুক্তি পেতে বাজার থেকে নানা ক্যামিকাল মেশানো রঙ বা কলপ কিনেও চুলে ব্যবহার করেন। যা সাময়িক ভাবে চুলকে কালো করে ঠিকই , তবে তা বেশি দিন থাকে না। কয়েকবার শ্যাম্পু করার পরেই ফের সাদা চুল বেরিয়ে আসতে থাকে। এর ফলে বার বার বাজার থেকে কেনা রঙ চুলে করতে হয়। আবার অনেকে হাজার হাজার টাকা খরচা করে প্রায় প্রতি মাসেই সেলুনে গিয়ে চুলে কালার করান। কিন্তু জানেন কী এতে চুলের ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। বার বার চুলে রঙ করলে, চুলের ঘনত্ব কমে যায়। চুল পড়া বেড়ে যায়। চুলের স্বাভাবিক ঔজ্বল্য চলে যায়। খুব কম বয়সেই চুলের কারণে বুড়োটে দেখতে লাগে। তাই কালো ঝলমলে, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে নির্ভর করুন প্রাকৃতিক উপাদানে। পাকা চুল কালো করতে পারেন ঘরোয়া উপায়ে। আসুন জেনে নেই কীভাবে সাদা চুল প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরেই কালো করবেন।

আলুর খোসা > ছ’টা মাঝারি মাপের আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিন। এবার দু’কাপ পানিতে আলুর খোসাগুলো দিয়ে আঁচে বসান। পানি ফুটতে শুরু করলে একটু পরেই একটা ঘন স্টার্চের মতো মিশ্রণ তৈরি হবে। মিশ্রণটা আঁচ থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন, তারপর ছেঁকে খোসা থেকে তরলটা আলাদা করে নিন। এবার আগে চুলে শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং করুন। চুল ধুয়ে নিয়ে আলুর খোসা সেদ্ধ করা পানি চুলে ধীরে ধীরে ঢেলে নিন। এরপর আর চুল ধোওয়ার দরকার নেই। স্টার্চের মতো দেখতে মিশ্রণটা চুলে পিগমেন্টের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে, ফলে চুল সাদা হয় কম। আমলকি ও নারিকেল তেল > আমলকিতে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি। চুলের কোলোজেন উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে এই ভিটামিন। আমলকি ও নারিকেল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে তা পাকা চুল কালো করতে কাজ করে। সেজন্য আপনাকে ২ চা চামচ আমলকির গুঁড়া ও তিন চা চামচ হালকা গরম নারিকেল তেল নিতে হবে। এরপর ভালো করে মিশিয়ে তেলটুকু ঠান্ডা করে নিতে হবে। মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়েন নিন। এভাবে অপেক্ষা করুন এক ঘণ্টার মতো। এরপর মাইল্ড কোনো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এই তেল সপ্তাহে তিনদিন ব্যবহার করুন। এটি প্রাকৃতিকভাবে আপনার চুল কালো করতে কাজ করবে।

মেথি ও গুড় > গবেষকদের মতে, চুল কালো করতে দারুণ সহায়ক গুড় ও মেথি। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গুড় মেথি খেতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান। চুল গোড়া থেকে মজবুত তো হবেই সেই সঙ্গে কালো হতে শুরু করবে পাকা চুলও। আগের দিন রাতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে ভালো করে মেথি বেঁটে নিয়ে তাতে একটু গুড় মিশিয়ে খালি পেটে খান। এভাবে তিন মাস করলেই ফল পেয়ে যাবেন হাতে নাতে। যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে, তাহলে সকালে গুড় মেথি না খাওয়াই ভাল। সে ক্ষেত্রে রয়েছে আরও এক পথ। রাতে কিছুটা মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে প্রথমে মেথি ভেজানো পানি খেয়ে নিন। শরীরের জন্য বেশ ভাল। এর পর মেথি ভাল করে বেঁটে নিয়ে সারা মাথায় ভাল করে লাগিয়ে ফেলুন। গোড়া থেকে চুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত লাগান। এভাবে মিনিট ৪০ মাথায় রাখুন। তারপর ভাল করে শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে সপ্তাহে তিনি দিন করলেই হাতে নাতে ফল পাবেন। তবে মনে রাখতে হবে মেথি কিন্তু ঠাণ্ডা লাগায়। তাই ঠাণ্ডা লাগার ধাত থাকলে মাথায় বেশিক্ষণ না রাখলেও চলবে।
চা পাতা > এছাড়াও চা পাতার পাউডার ২ চামচ, মেহেদি পাউডার ২ চামচ, মধু ১ চামচ, লেবুর রস ১ চামচ। বাটিতে সব উপকরণ একসাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার পরিমাণমতো গরম পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। পুরো চুলে মিশ্রণটি ভালো করে লাগিয়ে আধাঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।

তিল এবং বাদামের তেল > তিলের তেল এবং বাদামের তেলের মিশ্রণ চুল পাকা রোধ করে থাকে। বাদামের তেলের সাথে তিলের বীজ দিয়ে পাঁচ-সাত মিনিট ধরে গরম করুন। চুলা থেকে নামিয়ে তেলটা ঠান্ডা হতে দিন। তেল ঠাণ্ডা হলে চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে সারা মাথায় মাখুন। আধা ঘণ্টা রেখে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এমনকি চাইলে এই তেল সারা রাতও রেখে দিতে পারেন। পরদিন সকালে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। কারিপাতা > একমুঠো কারিপাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে সসপ্যানে দিয়ে তাতে তিন টেবিলচামচ নারিকেল তেল যোগ করুন। এবার সসপ্যান আঁচে বসান। একটু পরেই সসপ্যানে একটা কালো আস্তরণ জমা হতে দেখবেন। আঁচ থেকে নামিয়ে তেলটা ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে তেলটা স্ক্যাল্পে আর পুরো চুলে ভালো করে ঘষে ঘষে মেখে নিন। হয়ে গেলে এক ঘণ্টা রাখুন। তারপর সালফেট মুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। কারিপাতা আপনার চুলের ফলিকলে মেলানিনের পরিমাণ অটুট রাখে, ফলে পাকাচুল বাড়তে পারে না। তা ছাড়া চুলের বাড়বৃদ্ধিও ভালো হয়।

আরো পড়ুন: কারেন্ট শক খেলে তাৎক্ষণিক যা করা উচিত

অলিভ অয়েল এবং কালোজিরা > নারিকেল তেলের মতোই কার্যকারিতা। তবে স্পর্শকাতর ত্বকের একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন। তাই কালোজিরার সঙ্গে মিশিয়ে নিন অলিভ অয়েল। হালকা গরম করে, সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করুন এই তেল। আধ ঘণ্টা রেখে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। লেবুর রস ও নারিকেল তেল > উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ও ফসফরাসযুক্ত ফল হলো লেবু। লেবু খাওয়ার উপকারিতা তো জানেন, চুলের যত্নেও এটি সমান কার্যকরী। কারণ লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও ফসফরাস চুলের পিগমেন্টেশন বজায় রাখতে কাজ করে। এটি ব্যবহার করার জন্য আপনাকে ২ চা চামচ লেবুর রস নিতে হবে। এরপর এর সঙ্গে মেশাতে হবে ২ চা চামচ হালকা গরম নারিকেল তেল। মিশ্রণটি ভালো করে চুলের গোড়ায় লাগাতে হবে। ঘণ্টাখানেক রেখে চুলে শ্যাম্পু করে নেবেন। এভাবে সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন। কলপ ব্যবহারে পরিবর্তে এই ঘরোয়া উপায়গুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এই উপায়গুলো আপনার চুলকে কালো করতে সাহায্য করবে।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।