IPL দলের মালিকরা কিভাবে লাভ করেন?
অনুলিপি ডেস্কঃ আইপিএল মানেই যে অর্থের ছড়াছড়ি। সামনে আসছে সেই বিশ্বের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) আসর। ইতিমধ্যে দলগুলো বিরিয়েছে তাদের পছন্দমত খেলোয়াড়। যেখানে মালিকপক্ষকে খরচ করতে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। আমি যদি বলি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো যেন টাকার বস্তা নিয়ে হাজির হয় নিলাম অনুষ্ঠানে। কোটি কোটি রুপিতে তারা দলে ভেড়ায় একেকজন তারকা ক্রিকেটারকে। ক্রিকেট ফ্রাঞ্চাইজি গুলো অনেক সময় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকে অপরিচিত কোন ক্রিকেটারকে দলে বেড়ানোর জন্য। যা দেখে ক্রিকেট ভক্তদের চোখ কপালে ওঠে যাওয়ার কথা।
আমাদের মাঝে সাধারণ ভক্তদের মাথায় এই প্রশ্নটি আসতে পারে যে আইপিএল থেকে মালিকরা কিভাবে লাভবান হন এত কোটি কোটি টাকা খরচ করে। এত এত অর্থ খরচের পর আদৌ কি তাদের হাতে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে? কীসের আশায় তারা প্রতিবছর আইপিএলকে কেন্দ্র করে এতটা মেতে ওঠে? আমরা হয়তো অনেকে ভেবে থাকি, দুনিয়াতে সব কিছু টাকা দিয়ে কেনা যায় না। যেমন ক্রিকেটে মানুষে আনন্দ খুঁজে পায় বিনোদন খুজে পায়। সে আনন্দটা অনেক বড়। সবকিছুর মধ্যে লাভ-লোকসানের হিসাব করা যায় না। ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকেরা ক্রিকেট খেলাটাকে ভালোবাসে, তাই তারা আইপিএলে দল কেনে, আর সব কাজ বাদ দিয়ে আইপিএল নিয়েই কয়েকটা মাস ব্যস্ত থাকে। আপনাদের ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন ফ্রান্সাজ এগুলোর মালিক অনেকে খেলায় বুঝেন না। একটা জিনিস না বুঝলে তারা আনন্দ পাবেন কিভাবে। আর নিজে আনন্দ না পেলে অন্যকে দিবেন কিভাবে। আইপিএলের প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকই বিশাল বড় ব্যবসায়ী। তাদের কাছে ক্রিকেট মুখ্য বিষয় নয় ব্যবসাটাই আসল। ফ্রাঞ্চাইজি চালিয়ে যদি লাভ না হতো তাহলে এত টাকা তারা কখনো ব্যয় করতো না। আইপিএলে যেমন টাকা খরচ করে থাকে তেমনি ফ্রাঞ্চাইজি গুলো টাকা আয় করেও থাকে। আপনারা দেখতে পারবেন দলগুলো খারাপ খেললেও তারা কখনো হতাশ হয়ে পড়েন না। দলগুলো খারাপ খেললেও পরের বছর আবার ঠিকই মোটা অংকের টাকা বের করে দল সাজায়।
তাহলে চলুন জেনে নেই আইপিএলের মালিক পক্ষগুলো কিভাবে আইপিএল থেকে টাকা আয় করে: মিডিয়া স্বত্ত্ব>কোন ফ্রান্স সাইজি দলের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস হলো টিভি চ্যানেলের সম্প্রচারকারী। এবং অনলাইন স্ট্রিমারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ। আইপিএল এর সেই অর্থ ভারত ক্রিকেট বোর্ড গ্রহণ করে থাকে। এবং তারপর তারা প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নির্দিষ্ট হারে তাদের ভাগের অর্থ বুঝিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি কয়টি ম্যাচ খেলেছে, এবং বেশি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলেছে, অর্থাৎ কাদের ম্যাচে বেশি দর্শক হয়েছে, এই বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়। সহজ কথায় বলতে গেলে, রাউন্ড রবিন লিগ থেকে বাদ পড়ে যাওয়া দলগুলো মিডিয়া সত্ত্ব বাবদ যে অর্থ পায়, তার তুলনায় প্লে অফ খেলা দলগুলো বেশি অর্থ পায়। আর সবচেয়ে বেশি অর্থ পায় ফাইনালে খেলা দুটি দল। এছাড়া সম্প্রচারকারী চ্যানেল যদি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি অথবা তাদের নির্দিষ্ট এক বা একাধিক খেলোয়াড়কে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান করতে চায়, সে বাবদও ওই ফ্র্যাঞ্চাইজি মোটা অংকের অর্থ পেয়ে থাকে। ৬০-৭০ শতাংশ লাভ করে থাকে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি মিডিয়া সত্ত্ব থেকে।
জার্সি, টুপি, প্ল্যাকার্ড বিক্রি> প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে আইপিএলের মার্চেন্ডাইজ রেট। বছরে প্রায় ১০০ শতাংশ। টিম মালিকেরা তাঁদের দলের জার্সি, টুপি বিক্রি করেন। এইসব কিনে প্রিয় টিমের স্মৃতি হিসাবে রেখে দেয় অনেক অনুরাগীই। এখান থেকেও টিম মালিকেরা মোটা অঙ্কের টাকা আয় করে নেন এক মাসেই।
আরো পড়ুন: জেনে নিন উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত
ম্যাচের টিকিট> এমন সফল টুর্নামেন্টের অনুরাগী দর্শক সংখ্যা যে বিশাল সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেকেই বাড়িতে আয়েস করে টিভি-তে খেলা দেখার মজা নিলেও মাঠের রোমাঞ্চ নিতে চান সবাই। কোনও ম্যাচের সাক্ষী থাকার সঙ্গে প্রিয় খেলোয়াড়দের নিজের চোখে দেখার তৃপ্তি তো আছেই। ভাগ্য ভালো থাকলে দেখা হয়ে যেতে পারে প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গেও। তাই মাঠের তুলনা মাঠ নিজে। স্টল ভাড়া> প্রতিটি ম্যাচ চলাকালীনই দর্শকরা যাতে খাবার ও পানীয় কিনতে পারে, সেজন্য স্টেডিয়ামের ভেতর স্টল বসে। কিন্তু এসব স্টল ফ্র্যাঞ্চাইজিরা নিজেরা চালায় না। তারা কোনো তৃতীয় পক্ষের কাছে স্টল ভাড়া দেয়, এবং তার বিনিময়ে তারা অর্থ পায়। সাধারণত তৃতীয় পক্ষের সাথে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর চুক্তি প্রতি ম্যাচ করে বর্ধিত করা হয়, এবং এ খাতে প্রতিটি স্টল থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ নিয়ে থাকে। বিজ্ঞাপন> সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায়। নামীদামি কোম্পানি প্লেয়ারদের জার্সিতে ব্যবহার করে নিজেদের লোগো। এতে মাঠ এবং মাঠের বাইরে দর্শকের নজরে আসা যায় সহজেই। কামানিও হয় সবচেয়ে বেশি।