যে ৫ দিন রোজা রাখা হারাম
যে পাঁচটি দিনে ইসলামে রোজা রাখা হারাম। চলুন সে পাঁচটি দিন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই
যে ৫ দিন রোজা রাখা হারাম, ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান হচ্ছে রোজা। ইসলামের স্তম্ভ পাঁচটি। যার মধ্যে অন্যতম রোজা। রমজানের একটি মাস মুসলিম উম্মার জন্য ইবাদতের মৌসুম। প্রত্যেকটি জিনিস চাষাবাদ করার জন্য এক একটি করে মৌসুম রয়েছে। ঠিক তেমনি ভাবে ইবাদত করার মৌসম হচ্ছে রমজান মাস। এটি একটি রহমত বরকত মাগফেরাত পূর্ণ মাস। এ মাসে আল্লাহ তাআলার সকলকে ক্ষমা করেন এবং সকলের উপর রহমত নাযিল করেন। রমজান মাসে এক মাস সিয়াম সাধনা করা ফরজ। রমজান মাস ছাড়াও অন্যান্য দিনে নফল রোজা পালন করে থাকেন মোমেন বান্দারা।
কোরআন হাদিস দ্বারা সিয়াম পালনকারীদের জন্য অনেক পুরস্কার রয়েছে আল্লাহতালার পক্ষ থেকে। তবে সারা বছর রোজা রাখা ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। আপনাদের মাঝে যদি কেউ সারা বছর নফল রোজা রাখার ইচ্ছা করে। তাহলে একটানা না রেখে একদিন পরপর রাখা ভালো। এরকম আদর্শটি ছিল হযরত দাউদ (আ:) এর। এই পদ্ধতিটি কে রাসূল আকরাম সাঃ সর্বোত্তম পদ্ধতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বছরে এমন পাঁচটি দিন রয়েছে। যে পাঁচটি দিনে রোজা রাখা ইসলামে হারাম আসুন সে পাঁচটি দিন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
এই পাঁচদিন হলো-
১. ঈদুল ফিতরের শাওয়াল মাসের প্রথম দিন।
২. ঈদুল আজহার, জিলহজ মাসের ১০ তারিখ।
৩. তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখাও হারাম। অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখের দিন।
প্রখ্যাত সাহাবী আবু সাঈদ খুদুরী রাঃ বলেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন। (সহিহ বুখারি” হাদিস- ১৯৯২: মুসলিম” হাদিস- ৮২৭)
অন্য আরেকটি হাদীসে এসেছে, আবু উবাইদা (রা.) বলেন–আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) এর সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। তিনি বলেছেন, এ দুই দিনের রোজা রাখাতে নবী (সা.) নিষেধ করেছেন। প্রথম দিন হলো- যখন তোমরা রোজা শেষ করো; আর দ্বিতীয় দিন হলো” যখন তোমরা কোরবানির গোস্ত খাবে। (বুখারি : ২/২৭২; হাদিস : ১৮৫১)
পুরো বছর বিরামহীনভাবে রোজা রাখা
উপরে বর্ণিত এই পাঁচ দিনে রোজা রাখা হারাম। তবে এছাড়াও বছরে আরো কিছুদিন রয়েছে যে দিনগুলোতে রোজা রাখতে নিষেধ করেছে ইসলাম। তার মধ্যে একটি হলো পুরো বছর বিরামহীনভাবে রোজা রাখা। কারণ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এভাবে রোজা রাখা নিষেদ। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণিত” তিনি বলেন, নবী করীম (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি সবসময় রোজা রাখ এবং রাতভর নামাজ আদায় কর। আমি বললাম জী, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তুমি এমন করলে তোমার চোখ বসে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। যে ব্যক্তি সারা বছর রোজা রাখল সে যেন রোজাই রাখল না। প্রতি মাসে তিনদিন রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।
আরো পড়ুন: কী হবে যদি মৌমাছি বিলুপ্ত হয়ে যায়
আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশি রাখার সামর্থ্য রাখি। নবীজি বললেন, তাহলে তুমি ‘সাওমে দাউদ’ পালন কর। তিনি একদিন রোজা রাখতেন আর একদিন ছেড়ে দিতেন। ফলে তিনি দুর্বল হতেন না এবং যখন তিনি শত্রুর সম্মুখীন হতেন তখন পলায়ন করতেন না। ( বুখারি, ১৯৭৮)
শুধু শুক্রবারের রোজা অনেক মানুষ রয়েছে শুধু শুক্রবার নির্দিষ্ট করে রোজা রাখে, ফেকাহবিদগনের মতে,নির্দিষ্ট করে কেবল শুক্রবার রোজা রাখাও উচিত নয়। অবশ্য এর আগে বা পরে মিলিয়ে দুটি রোযা রাখা যাবে।
শাবানের ৩০ তারিখ শাবান মাসের ৩০ তারিখে যদি রমজানের চাঁদ ওঠা নিয়ে কোন ধরনের গ্রহণযোগ্যতা না পাওয়া যায় তাহলে সেদিন রোজা রাখা নিষিদ্ধ। এটিকে ইয়ামুশ শাক বা সন্দেহের দিন বলা হয়। কেননা সন্দেহ থাকে যে আসলে এটি রমজানের প্রথম তারিখ নাকি সাবানের ৩০ তারিখ। তাই সন্দেহ রেখে সেদিন রোজা রাখা ঠিক নয়।