জেনে নিন কয়েক সেকেন্ডে মিথ্যা কথা ধরে ফেলার দারুন ৬ টি টিপস।

মিথ্যা কথা বলাটা অনেকের কাছেই একটা বাজে অভ্যাসের মতো। আমাদের জীবনে সকলেই প্রয়োজনে কখন না কখনো মিথ্যে কথা বলেছি। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে মানুষকে প্রতারণা করে। অনেক সময় সামনে ভালো সাজে পিছনে আপনার নামে কুৎসা ছড়িয়ে বেড়ায়। আর এই ধরনের মিথ্যুক মানুষের সাথে থাকতে গেলে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু কিকরে? বিজ্ঞানীদের মতে যখন মানুষ মিথ্যে কথা বলে তখন তার আচরণে অসংগতি প্রকাশ পায়। জেনে নিন সেগুলি কি আর সেসব মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
মুখমণ্ডল স্পর্শ করাঃ মার্ক বুটনের মতে, মিথ্যা কথা বলার সময় মানুষের শরীরে এক ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, বিশেষ করে মুখমণ্ডল চুলকাতে থাকে। ফলে মিথ্যা বলার সময় মানুষকে ঘন ঘন নাকের ডগা, গাল বা ঘাড় এবং মাথা চুলকাতে দেখা যায়। মিথ্যা কথা বলার সময় অনেকে মুখের সামনে বারবার হাত নিয়ে আসে। তারা হাত দিয়ে মুখটাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করে, যেটা মিথ্যাটিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে তার অবচেতন মন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অনেককে আবার মিথ্যাটিকে ঝেড়ে ফেলে দেওয়ার প্রতীকি আচরণ হিসেবে জামা–কাপড়ের অদৃশ্য ধুলা পরিস্কার করতেও দেখা যায়!
গলা শুকিয়ে যায়ঃ অনেকেরই গলা শুকিয়ে যায় বা বারবার ঢোক গেলার চেষ্টা করে মিথ্যা বলার সময়। অনেক দক্ষ মিথ্যুকরাও অনেক সময় এই সমস্যায় পড়ে যায়। মিথ্যা বলার সময় গলা শুকিয়ে যায়, বার বার ঢোক গিলতে শুরু করে। অনেকে মিথ্যা বলা শুরু করার আগে তোমার কাছ থেকে পানি চেয়ে নিবে যাতে এইসব লক্ষণ যাতে প্রকাশ না পায়। গবেষণায় শারীরিক ভাষাগুলোর মাধ্যমে মিথ্যা কথা সনাক্ত করার জন্য মানুষের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধান করা হয় যার মধ্যে অন্যতম কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরার চেষ্টা করলাম তবে এর যেকোনো একটি বা দুইটি মিলে গেলেই যে নিশ্চিত হওয়া যাবে, সে মিথ্যা বলছে, এমন নয়। এটি শুধু প্রশ্নকর্তাকে একটি ধারণা দেবে যে, উত্তরদাতা মানসিক চাপে অথবা অস্বস্তিতে আছে। মিথ্যা একটি সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট করে। তাই মিথ্যা পরিহার করাই উত্তম। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তিরা সাধারণত খুব কমই মিথ্যা বলে থাকেন। তোমাদের যদি এ সম্পর্কে আরো কিছু জানা থাকে শেয়ার করে ফেলো আমাদের সাথে যাতে করে সবাই মিলে একসাথে শিখতে পারি, জানতে পারি।
বানিয়ে বানিয়ে কথা বলাঃ মিথ্যাবাদীকে একই গল্প দ্বিতীয়বার বলতে বলুন। দেখবেন ওই ব্যক্তি যদি মিথ্যা বলার জন্য গল্প বানিয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমবার যা বলেছেন তার সঙ্গে পরের বারের গল্পের কোনো মিল থাকবে না। মিথ্যাবাদী চেনার উপায় গুলোর মধ্যে এটা সবচেয়ে কার্যকরী। সবশেষে একটা বিষয় মনে রাখবেন- কাউকে মিথ্যাবাদি ততক্ষণ পর্যন্ত বানাবেন না যতক্ষণ না সে প্রমাণিত হয়। চোখ-মুখ বা কথা বলার ভঙ্গি আপনাকে সতর্ক আর সন্দেহের সুযোগ করে দিবে শুধু কিন্তু সেই সন্দেহ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কোন একশনে যাবেন না।
চোখে চোখ রেখে কথা বলাঃ যারা মিথ্যা কথা বলে তারা আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে না। অথবা অতিমাত্রায় আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে। যখন কেউ মিথ্যা কথা বলে, তখন তিনি ভাবেন তাকে পরখ করছে। তাই নিজেকে বাঁচাতে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকেন কিংবা এদিক ওদিক চোখ ফেরান। আবার কোনো কোনো মিথ্যুক মিথ্যা বলার সময় অনবরত চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন। কারণ তারা মনে করেন চোখে চোখ রেখে কথা বললে আপনি তার কথা বিশ্বাস করবেন।
আর পড়ুনঃ বদমেজাজ জীবন ধ্বংসের বড় কারণ! কিভাবে মুক্তি পেতে পারেন
মিথ্যুক দ্রুত রেগে যায়ঃ যে মিথ্যা কথা বলছে, সে আত্মপক্ষ সমর্থনে বেশি জোর দিয়ে থাকে। নিজের উপর থেকে মনোযোগ সরাতে সমস্ত পন্থা অবলম্বন করবে। আপনি তার ইমোশনে আঙ্গুল তুলেছেন বলে, খুব শিগগিরি রেগে যাবে। যে ব্যক্তি সত্য কথা বলে সে অফেন্সিভ হয়ে পড়ে।
অযথা কাশি দেওয়াঃ অস্বস্তিকর, মিথ্যা এবং আলোচনা করতে আগ্রহী না, এরকম বিষয়ে কথা বলার সময় মানুষ নিজের অজান্তেই কাশি দেয়। অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণেই মিথ্যা বলার সময় কাশি আসে।কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় যদি দেখা যায়, কোনো প্রসঙ্গ এসে পড়ায় সে কাশি দিচ্ছে, তাহলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রথমে ভিন্ন প্রসঙ্গে চলে যাওয়া উচিত। কিছুক্ষণ পর আবারও সেই প্রসঙ্গে ফিরে এলে যদি দেখা যায় সে আবারও কাশি দিচ্ছে, তাহলে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব যে, সে এই প্রসঙ্গে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করছে অথবা মিথ্যা কথা বলছে। এছাড়া অনেক কাঁচা মিথ্যাবাদী আছে যারা মিথ্যা বলার সময় ঘামতে শুরু করে। মিথ্যা বলার সময় মানুষের রক্তচাপ বেড়ে যায়, ফলে অনেকেই অস্বাভাবিকভাবে ঘামতে শুরু করে।
এরকম আরো লেখা পড়তে অনুলিপির সাথেই থাকুন।