টিপস এন্ড ট্রিকসসন্দেশস্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল

সাপে কাটলে করণীয় কি

উপকথায় দেখা যায় সাপে কাটা ব্যক্তি মারা গেলে, বেদের সর্দার বা বেদের মেয়ে বীণ বাজায়। বীণার অপরূপ সুরে বিষধর সাপটি খাল-বিল-নালা-জঙ্গল ভেদ করে তীরের বেগে ছুটে আসছে। যে লোকটিকে সে কামড়েছিল, তার কামড়ের স্থানে মুখ দিয়ে বিষ চুষে নিচ্ছে।

বিষ চোষা হয়ে গেলে ধীরে ধীরে চোখ মেলে লোকটি, ফিরে পায় নতুন জীবন। অবাস্তব, অলৌকিক এই কাহিনীগুলো চলচ্চিত্রের কল্যাণে আসল সত্য থেকে আমাদের দূরে রাখে। সাপের কামড় মানেই মৃত্যু, এমন ধারণা অনেক দিন ধরেই ছিল আমাদের মধ্যে।

সাপে ছোবল মারলেই মানুষ ছুটে যেত ওঁঝা আর বেদের কাছে। বাস্তবতার টানাপড়েনে এখন বেদে সম্প্রদায়কে তেমন আর দেখাই যায় না। মানুষও এখন অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। সাপে কামড় দিলে মানুষ ছোটে হাসপাতালে। অবশ্য অনেক অজপাড়াগাঁয়ে এখনো রয়ে গেছে কুসংস্কার। কামড়টি বিষাক্ত সাপের না হলে কারিশমা দেখিয়ে বাহবা কুড়ায় ওঁঝা। আর কামড়টি বিষাক্ত সাপের হলে দোষ পড়ে নিয়তির। ভুক্তভোগীকে মেনে নিতে হয় মৃত্যু। অথচ সময়মতো ব্যবস্থা নিলে বেঁচে যায় মূল্যবান প্রাণ।

সাপে কাটলে যা করণীয়: ১. বিশেষজ্ঞদের মতে সাপে কাটলে যথা সম্ভব রোগীকে শান্ত থাকতে হবে। তখন আতঙ্কিত হওয়া যাবে না।
২. আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করতে হবে। বেশিরভাগ কবলিত মনে করেন মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। তাই জরুরিভিত্তিতে তাকে সাহস দেয়া ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যথাযথ স্থানে/হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠালে রোগী বিশ্বাস ও সাহস ফিরে পাবে।

৩.দংশিত স্থান কিছুতেই কাটাছেড়া করা উচিত নয়। কেবল ভেজা কাপড় দিয়ে কিংবা জীবাণুনাশক লোশন দিয়ে ক্ষতস্থান মুছে দিতে হবে।
৪. দংশনকৃত স্থান থেকে ভিতরের দিকে সাথে সাথে গামছা বা কাপড় দিয়ে কেবল একটি গিঁট (পায়ে দংশন করলে রানে, হাতে দংশন করলে কনুইয়ের উপরে) এমনভাবে দিতে হবে যেন খুব আটসাঁট বা ঢিলে কোনটাই না হয় (একটি আঙুল একটু চেষ্টায় ভেতরে যেতে পারে)।

আরও পড়ুন: গলা থেকে মাছের কাঁটা নামানোর সহজ ৫ টি উপায় জেনে রাখুন কাজে আসবে

৫. সাপে কাটার স্থান বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। কারণ মাংসপেশী সংকোচন করলে বিষ দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
৬.রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে। স্থানান্তরের সময় আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাঁটতে দেয়া যাবে না। রোগীকে কঁাধে, খাটিয়ায় বা দোলনায় করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

৭.সম্ভব হলে সাপের প্রজাতি ও বিষধর কিনা তা নিরূপণের জন্য সাথে নিতে হবে। সাপ পরিবহনে খেয়াল রাখতে হবে, সাপটি মৃত নাকি মরে যাওয়ার ভান করে আছে।
৮. জরুরি কোনো উপসর্গ না থাকলে বিষদাতের চিহ্ন পরীক্ষার জন্য দংশিত স্থান পরীক্ষা করতে হবে। বিষ দাঁতের দাগ প্রায় আধা ইঞ্চি ফাকে দুটি খোচা দেয়ার চিহ্ন হিসাবে অথবা কেবল আচড়ের দাগ হিসেবে দেখা যেতে পারে। দুটো বিষদাঁতের চিহ্ন পরিষ্কারভাবে থাকলে খুব সম্ভবত সাপটি বিষধর, তবু বিষদাঁতের চিহ্ন না থাকলে যে সাপটি বিষধর নয় তা বলা যাবে না।

৯.কামড়ানো স্থানে চামড়ার রঙের পরিবর্তন, কালচে হওয়া, ফুলে যাওয়া, ফোসকা পড়া, পচন ধরা ইত্যাদি হতে পারে। আবার কোনো পরিবর্তন নাও থাকতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসার ফলেও স্থানীয় পরিবর্তন হতে পারে।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।