পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম চাষ বাংলাদেশে

সূর্য ডিম আম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম। নানা রঙের দৃষ্টিনন্দন আমের প্রজাতি জাপানের মিয়াজাকি অঞ্চলে সর্বপ্রথম চাষ করা হয়। তবে এখন বাংলাদেশও এ আম চাষ করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে মিয়াজাকি আম ৭০০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়। এ আম বাংলাদেশের বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি। এক একটি আমের দাম পড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে। মূলত চাহিদা মোতাবেক যোগান কম থাকা, মিষ্টা স্বাদ, ভিন্ন রঙ এবং চাষপদ্ধতির কারণে আমটির দাম এতো বেশি।
বিশেষ তাপমাত্রা, নির্দিষ্ট পরিমাণে জল, পরিমিত সার-সহ একাধিক জিনিসের সমন্বয়ে মিয়াজাকি আম চাষ করতে হয়। জাপানের মিয়াজাকি নামক স্থানেই এটি চাষ শুরু হয়। খুব বেশিদিন নয়, ১৯৭০ দশকের শেষেই প্রচলিত হয় এই জাতের আম। দামি এই জাপানি আমটি চাষ করে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন খাগড়াছড়ির কৃষক হ্ল্যাশিংমং চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কৃষিকাজকে নিজের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মহলছড়ি উপজেলা।
ওই উপজেলার ধুমনিঘাট এলাকায় ১২শ ফুট উঁচুতে ৩৫ একর জায়গাজুড়ে নিজ উদ্যোগে তিনি গড়ে তুলেছেন হরেক রকম ফলের বাগান। নাম দিয়েছেন ‘ক্রা এএ এগ্রো ফার্ম’।সেই বাগানের একটি অংশেই চাষ করছেন ‘সূর্যডিম’ আম। ২০১৭ সালে তিনি প্রথম ভারত থেকে এই আমের ১০/১৫টি চারা কিনে নিজ বাগানে রোপণ করেন। দুই বছরের গাছ বড় হয়ে ওঠে এবং ২০১৯ সাল থেকে তিনি আম তোলা শুরু করেছেন। তিনি জানান, মা গাছ থেকে চারা রোপণ করে বাগানের পরিধি বাড়িয়েছেন।
এখন তার বাগানে সূর্যডিমের ১২০টির মতো গাছ রয়েছে। যেগুলোর উচ্চতা ৬/৭ ফুটের মতো। চারাগুলো যত্ন করে পালন করায় এরমধ্যে প্রায় ৫০টি গাছে তিন চার বছর ধরে ফলন হচ্ছে, যা থেকে প্রতি বছর ৩শ থেকে ৪শ কেজি আম হয় বলে জানিয়েছেন মি. হ্ল্যাশিংমং। যদিও বিরূপ আবহাওয়া এবং পানি স্বল্পতার কারণে এই আম চাষে তাকে বেশ বেগ পেতে হয় বলে তিনি জানান।
সূর্যডিম আম সাধারণত মে মাসের ২০ থেকে ২৫ তারিখে পাকা শুরু হয় এবং জুনের ১৫ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত পাওয়া যায়। চলতি বছর একটি লম্বা সময় খরা মৌসুম থাকায় এবার আম চলে এসেছে সময়ের আগেই। তিনি বলেন, এই আম চাষে নিতে হয় বিশেষ যত্ন। পরিমিত আলো, পানি, ছায়া সরবরাহের পাশাপাশি, প্রতিটি আম প্যাকেট দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়।
আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ১০টি দেশ।
আম তোলার পর গরমের কারণে সেগুলো বেশিক্ষণ নিজের কাছে রাখতে পারেন না। দ্রুত বিক্রি করে দিতে হয়। এখনও এই আমের ক্রেতা খুব হাতে গোনা কিছু সৌখিন আমপ্রিয় মানুষ বলে জানা গেছে। বাজারে এই বিদেশী আমের চাহিদা ভালো থাকায় তিনি অত্যন্ত লাভবান হচ্ছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়ও এখন এই প্রজাতির আম চাষ করা হয়।