ধর্ম

যে তিন প্রকারের লোক যেনা করেও নিষ্পাপ থাকে

ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের শরীয়তে চলার মোতাবেক অনেক রয়েছে। শান্তির ধর্ম হওয়া সত্বেও আমরা মুসলিম জাতি অনেক গুনার কাজ করে ফেলি। আর এই গুনাহ থেকে বাঁচতে হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আমাদের এমন তিনটি গুনাহ আছে যা করলেও নিষ্পাপ ও মাসুম হওয়া যায়। অর্থাৎ কোন গুনা হয় না। দেরি না করে চলুন বিস্তারিত প্রতিবেদনে জেনে নেই…

তিন প্রকারের লোক যেনা করেও নিষ্পাপ থাকে। একদিন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু মদিনার একটি পথ দিয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন, তখন তিনি দেখলেন এক নারীকে কিছু লোক টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর সেই নারী ভয়ে কাঁপছে আর কাঁপছে।হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু যখন এই ঘটনাটি দেখলেন, তাদের প্রশ্ন করলেন তোমরা এই নারীকে কেন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছ? তখন লোকেরা বলল: এই নারী জেনা করেছে! আর হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর ফায়সালা শাস্তি অনুযায়ী তাকে পাথর নিক্ষেপ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এদের এই কথা শোনার পর হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু: সেই নারীকে তাদের থেকে ছাড়িয়ে নিলেন, এবং সেই নারীকে ছেড়ে দিতে বললেন। আর লোকেদের ধমক দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দিলেন।অতঃপর লোকেরা হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর কাছে গিয়ে বিস্তারিত সব বিষয়ে বর্ণনা করলেন। তখন হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু সব কথা শুনে বললেন, আমার ভাই আলী যে কাজ করেছে এর পেছনে হয়তো এমন কোনো কারণ রয়েছে, যা হয়তো আলীর জানা আছে। সে ব্যাপারে হয়তো আমার বেখবর।

নিশ্চয়ই এর পেছনে যে কোন হেকমত লুকিয়ে আছে। যা আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু জানেন, আমরা হয়তো জানি না। তাই হরযত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন তোমরা আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কে ডেকে আন আমি তার কাছ থেকে এ বিষয়ে জানব। অতঃপর কথামতো হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কে ডেকে আনা হলো।হযরত আলীকে যখন ডাকা হলো: তখন হরযত আলী খুবই জালালি হাসতে ছিলেন, হযরত ওমর জিজ্ঞেস করলেন; হে আলী! আপনি কেমন আছেন?

আপনি কেন এসব লোকদেরকে হটিয়ে দিলেন, আর এই নারীর উপর আমি শাস্তি প্রয়োগ এর নির্দেশ দিয়েছিলাম। আপনি তাকে শাস্তি প্রয়োগ করতে নিষেধ করেছেন, এর কারণ অনুগ্রহ করে জানতে পারি কি? তখন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন: হে আমীরুল মু’মিনীন আপনি কি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর এই কথাটি শোনেননি? যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন: তিন ধরনের লোকের উপর থেকে কলম তুলে নেওয়া হয়! অর্থাৎ তাদের আমল লেখা হয়না, তারা বেকুসুর,তারা বেগুনাহ, তারা হলেন:

ঘুমে যেনা করা ব্যাক্তি: ১.যে লোক ঘুমায়, যতক্ষণ পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত জেগে না উঠে: ততক্ষণ পর্যন্ত সে বেগুনাহ।

নাবালেক ব্যাক্তি: ২.সেই লোক, যে এখনো নাবালেক,যতক্ষণ না সে বারেক হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তার উপর থেকে সকল আমল লেখা তার জন্য স্থগিত বা বন্ধ হয়ে থাকে! গুনাহ লেখা হয় না।

আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত

পাগল ব্যাক্তি: ৩.সেই লোক যে পাগল অবস্থায় থাকে। আর পাগল অবস্থায় থাকলে তার জন্য কলম বন্ধ থাকে। তিন প্রকারের লোক যেনা করেও নির্দোষ। তখন হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, হে আলী আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর এই কথাটি শুনেছি।এবার, হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেছেন, হে আমীরুল মুমিনীন এই নারী মাঝেমধ্যে পাগল হয়ে যায়।

হতে পারে যে লোক এর সাথে জেনা করেছে, সে-ই নারীর পাগল অবস্থায় এ কাজটি করেছে। হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু যখন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর কাছ থেকে এই কথাটা শুনলেন তখন এই নারীকে মুক্ত করে দিলেন। তিন প্রকারের লোক যেনা করেও নির্দোষ।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।