বোকা মানুষকে আমরা গাধা বলি, কিন্তু গাধা কি সত্যিই বোকা
গাধাকে যতই বোকা বলে অপবাদ দেই না কেন, ড্রিমওয়ার্কস এনিমেশনের ‘শ্রেক’ মুভি যারা দেখেছেন, শ্রেকের বন্ধু সেই গাধা কথা বেশি বললেও বোকা যে না, এই ব্যাপারে কিছুটা ধারণা তো আছেই। বাস্তবে কিন্তু বিলিভ ইট অর নট, গাধা বেশ বুদ্ধিমান প্রাণি, এবং এদের স্মৃতিশক্তিও অত্যন্ত ভাল। এরা অনেক বছর পরেও কোন পরিচিত স্থান, রাস্তা বা মানুষকে চিনতে পারে। শ্রেক মুভির মত বাস্তবে ড্রাগনকে গাধার গার্লফ্রেন্ড বানানো না গেলেও পুরুষ গাধার সাথে স্ত্রী ঘোড়ার মিলনে খচ্চর (Mule) তৈরী হয়, যা অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণু, ভারবহন ক্ষমতাসম্পন্ন এবং ক্লান্তিহীনভাবে অনেক বেশি কার্যসম্পাদনক্ষম।
পুরুষ গাধা (Jack) থেকে তৈরী করা হয় দেখে একে ‘Jackass’ ও বলা হয় [স্ত্রী গাধাকে জেনি(Jenny)/জেনেট (Jennet) বলে]। মূলত ভারবহনক্ষমতার জন্যই গাধা বিখ্যাত। সমতল কিংবা এবড়োথেবড়ো রাস্তায়ও এরা নিজের ওজনের প্রায় #দ্বিগুণ মালবহন করতে পারে; তবে পাহাড়ী রাস্তায় কিছুটা কম পারে।অল্প পানির চাহিদার দিক থেকে পোষা প্রাণির মধ্যে উটের পরেই গাধার স্থান। এরাও পানি না খেয়ে অনেক পথ অতিক্রম করতে পারে।
ব্যাপক ভারবহন ক্ষমতার সাথে এই গুণের কারণে মরুভূমিতে মাল টানার জন্য গাধার খুব কদর। গাধা পানি খায়, ঘোলা করে!’ প্রবাদটা বাস্তবে কতটুকু সত্য জানিনা, তবে খাবারদাবারের ব্যাপারে গাধা খুবই খুঁতখুঁতি মেজাজের। অনেক গাধা পরিষ্কার পানি ছাড়া খাবেই না। সব ধরণের ঘাস পাতাও খেতে চায় না। আবার অনেক গাধা আছে সাজসরঞ্জাম/অশ্বাদি (Harness) পরানো থাকলেও খেতে চায়না। তবে খেতে শুরু করলে আবার ওভার-ইটিং করে ফেলে, তাই মালিককে খুব খেয়াল রাখতে হয়।
আরো পড়ুন: শিশু প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে বাবা মায়ের কিছু ভুলের কারণে
‘গাধার মত কান’ বলে আমরা যতই ফান করিনা কেন, এই কান দিয়ে সে মরুভূমিতে ৬০মাইল দূরেও অন্য গাধার ডাক শুনতে পায়। আবার এই লম্বা কান তার দেহের তাপ নির্গমনে সহায়তা করে।ঘোড়ার মত এদের পায়েও ভাল জোর আছে। অনেক দেশে ভেড়ার পাল পাহাড়া দেয়ার জন্য গাধা ব্যবহার করা হয়। এদের এই লাথির ভয়ে শিয়াল, বন্য কুকুর বা নেকড়েজাতীয় প্রাণিরা পালের আশেপাশে ভিড়েনা। ঘোড়ার মত এরাও দাঁড়িয়ে ঘুমাতে পারে।
যদিও এদেরকে রোদে বসে থাকতেও দেখা যায়। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলোতে ঘোড়া/জেব্রার মত এদের জন্যেও পাসপোর্ট করা বাধ্যতামূলক। তবে ঘোড়ার সাথে এদের অনেক অমিলও আছে। ঘোড়ার মত বড় লম্বা সুন্দর কেশর হয়না এদের। শক্ত, ব্রাশের মত কেশর হয়। ঘোড়ার মত শীতে আলাদা লোমও (Winter Coat) গজায় না। আবার এদের লোম ঘোড়ার মত ওয়াটার প্রুফও না; তাই এরা বৃষ্টি খুব অপছন্দ করে।