ধর্ম

আত্মীয়-স্বজন মারা গেলে কান্নাকাটির বিষয়ে ইসলাম কি বলে?

আমাদের আশেপাশে কোন আত্মীয়-স্বজন মারা গেলে আমরা হাউমাউ করে কেঁদে উঠি। আজ আমরা জানবো আত্মীয়-স্বজন মারা গেলে কান্নাকাটির বিষয়ে ইসলাম কি বলে?

আত্মীয়-স্বজন মারা গেলে কান্নাকাটি এর বিষয়ে ইসলাম কি বলে?, জীবন যেহেতু আছে মৃত্যু এক প্রকার সুনিশ্চিত এ নিয়ে কোন দ্বিমত নেই কারো। মৃত্যু হবেনা এমনটা কেউ ধারণা করে না। সে যতই খারাপ হোক না কেন। এটা এমন একটি মৃত্যু যা ঘটার সাথে সাথে দুনিয়ার সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। একজন বান্দার আমল করাটাও বন্ধ হয়ে যায়। তবে সে যদি দুনিয়ার বেঁচে থাকা অবস্থায়,সাদকায়ে জারিয়া বা উপকারি ইলম কাউকে দান করে যায় এবং দুনিয়ায় নেক সন্তান রেখে যায়। তাহলে তার আমল নামায় সাওয়াব জমা হতে থাকবে।

পৃথিবী মানুষের জন্য ক্ষণস্থায়ী। আখেরাত চিরস্থায়ী। কিন্তু আমরা এই দুনিয়াকে ক্ষণস্থায়ী মনে করার পরেও অনেক গুনা করতেছি। তাই আমাদের সকলের বোঝা উচিত আমরা একদিন দুনিয়ার ছেড়ে কবরে চলে যাব।

আমাদের আশেপাশে যখন আমাদের কোন আত্মীয়-স্বজন মারা যায়। তখন আমরা হাউমাউ করে কেঁদে উঠি। এটা শুধু আমাদের সমাজে সীমাবদ্ধতা নয়। এটা পুরো পৃথিবীতে অভ্যাসটা রয়েছে। আত্মীয়স্বজন কেউ মারা গেলে কেঁদে উঠে সবাই। কেউ মারা গেলে মানুষ কাঁদবে এটা স্বাভাবিক। তবে এটা অতিরঞ্জিত করা ভালো নয়। মানুষ মারা গেলে তিন-চার দিন কান্নাকাটি করে। কেউবা মাসখানেক কান্নাকাটি করে। কোন মৃত ব্যক্তির জন্য দীর্ঘদিন ধরে কান্নাকাটি করা মোটেও উচিত নয়। এ ব্যাপারে ইসলাম কি বলে চলুন তাহলে জেনে নেই, মৃত ব্যক্তির চেহারা খুলে দেখা চুম্বন করা, তিন দিন পর্যন্ত কান্না করা জায়েয। এ ব্যাপারে হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে জানা যায়। তিনি বলেন,لَمَّا قُتِلَ أَبِي جَعَلْتُ أَكْشِفُ الثَّوْبَ عَنْ وَجْهِهِ أَبْكِي، وَيَنْهَوْنِي عَنْهُ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَنْهَانِي، فَجَعَلَتْ عَمَّتِي فَاطِمَةُ تَبْكِي، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَبْكِينَ أَوْ لاَ تَبْكِينَ مَا زَالَتِ المَلاَئِكَةُ تُظِلُّهُ بِأَجْنِحَتِهَا حَتَّى رَفَعْتُمُوهُ

উহুদ যুদ্ধে আমার পিতা শহীদ হয়ে গেলে আমি তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে কাঁদতে শুরু করলাম। লোকজন দেখে তারা আমাকে নিষেধ করতে লাগল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি আমাকে কাঁদতে নিষেধ করেননি। আমার সাথে আমার ফুপি ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাও কাঁদতে শুরু করলেন। তিনি তাকে বললেন তুমি কাঁদো বা নাই কাঁদো উভয় সমান। তোমরা তাকে তুলে নেওয়া পর্যন্ত ফিরিশতাগণ তাদের ডানা দিয়ে ছায়া বিস্তার করে রেখেছেন। হাদিসটি বর্ণনা করা হয়েছে সহীহ বুখারীতে হাদিস নাম্বার ১২৪৪,সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হাদীস নং ২৪৭১ ।

আরো পড়ুন: সাত দিনে পেটের মেদ কমাবেন যেভাবে

আবু দাউদ শরীফে ৪১৯২ নাম্বারে একটি হাদিস রয়েছে, আব্দুল্লাহ ইবন জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمْهَلَ آلَ جَعْفَرٍ ثَلَاثًا أَنْ يَأْتِيَهُمْ، ثُمَّ أَتَاهُمْ، فَقَالَ: «لَا تَبْكُوا عَلَى أَخِي بَعْدَ الْيَوْمِ
রাসূল (সা) জাফর পরিবারকে তিন দিন কান্নাকাটি করার জন্য সুযোগ দিলেন। অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবন জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার পরিবারের কাছে গিয়ে বললেন, আজকের পর থেকে তোমরা আর আমার ভাইয়ের জন্য কাঁদবে না। (আবু দাউদ, হাদীস নং ৪১৯২)

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।