ফিচার

চোরাবালি তে আটকে গেলে যা করনীয়

চোরাবালি মানে সাধারণভাবে আমরা চোরাবালি বলতে বুঝি, যখন বালি, কাদা বা নুড়ি গর্ভস্থ পানির প্রবাহের সান্নিধ্যে আসে, সেই বালি বা নুড়ির দানাগুলোর মধ্যে যে ঘর্ষণ শক্তি থাকে তা কম হয়ে যায়, আর সেই বালি বা মাটি ভার সহ্য করতে পারে না তাই চোরাবালি। সাধারণ বালির সঙ্গে চোরাবালি একটি পার্থক্য রয়েছে। পার্থক্য হল বালি পানি দ্বারা অতিম্পৃক্ত হয়ে থাকে।

আমারে যখন বালির উপরে দাঁড়ায় তখন বালি একটু র্গতে চলে যায়। এর কারণ, বালিতে থাকা ঘর্ষণ বল আমাদেরকে তলিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। যখন পানি ঝরঝরে-আলগা বালির মধ্যে আটকা পড়ে, তখন এটি তরলীকৃত মাটি তৈরি করে। ফলে এই মাটি কোনো ধরনের ভার বহন করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আর এরকম প্রাকৃতিক কারণেই মূলত তৈরি হয় চোরাবালি নামক ফাঁদের।

সাধারণত চোরাবালিতে পানি ও বালির যে স্তুপ তৈরি হয়, তা প্রায় সময় প্রাথমিকভাবে দেখে বোঝা খুব কঠিন। আবার মাঝে মাঝে সাধারণ কাদা বলেও মনে হতে পারে। অর্থাৎ, অনেক ক্ষেত্রেই এমন হয় যে সেটার উপর পা রাখার আগে পর্যন্ত কেউ বুঝতে পারবে না সে চোরাবালিতে পা দিতে যাচ্ছে! আপনি যদি ঘটনাক্রমে চোরাবালিতে পড়েও যান, তাহলে আপনার প্রথম কাজটি হবে- আতঙ্কিত না হওয়া। আগেই বলেছি, চোরাবালি কয়েক ফুটের বেশি গভীর হয় না। তাই চোরাবালিতে পড়ে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনার জুতা জোড়া হারানোর সম্ভাবনাই প্রকট।

চোরাবালি থেকে বাহির হওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক: আপনার সঙ্গে থাকা যে কোনো কিছুকেই তখন ‘অতিরিক্ত’ বলে ভাবতে হবে। আর নির্দ্বিধায় সেসব ফেলে দিতে হবে। পিঠে ব্যাগ থাকলে খুলে ফেলতে হবে। পায়ে জুতা থাকলে খুলে ফেলুন তাও। কিন্তু যদি ফিতেবাঁধা জুতা পরে থাকেন তবে সময় নষ্ট না-করাই সমীচীন হবে। কেননা চোরাবালি প্রায় এক মিনিট সময় নেয় তরলিত হওয়ার জন্য।

এমনকি জুতা খুলতে না পারলেও, চেষ্টা করলে চোরাবালি থেকে মুক্তির জন্য মাত্র এক মিনিটই যথেষ্ট সময়।মনে রেখে দিন, পানি থেকে যেহেতু চোরাবালির ঘনত্ব বেশি তাই পানিতে ভেসে থাকা গেলে এখানেও যাবে। বেশিরভাগ চোরাবালির গভীরতা কম হয়। খানিকটা ডোবার পর হয়তো পা তলায় আটকে যেতে পারে।

আরো পড়ুন: ভূমিকম্প কেন হয়? ভূমিকম্প হলে করণীয় কি?

যদি তা না-হয়, যদি চোরাবালি খুব গভীর হয় তাহলেই কেবল পুরোপুরি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।এজন্য পানিতে আমরা যেভাবে সাঁতার কাটি, ঠিক সেভাবেই নিজের শরীরকে যতটা সম্ভব আনুভূমিক করে ফেলতে হবে। তারপর খুব ধীরে ধীরে সাঁতরে চোরাবালির বাইরে আসার চেষ্টা করতে হবে।

সাথে যদি কেউ থাকে তাহলে তাকে বলতে হবে নিরাপদ দূরত্ব থেকে কাপড় বা দড়ি জাতীয় কিছু ফেলতে। এবং তা ধরে ধীরে ধীরে চোরাবালি থেকে উঠে আসা সম্ভব। যদি কেউ না থাকে তবে ঠিক সাঁতারের মতো করেই আস্তে আস্তে নিজেকে তুলে আনতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে শক্ত মাটি পাওয়া যায় কিনা। পাওয়া গেলে সেখানে ধরে নিজেকে টেনে নিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশেরসহ বিশ্বের সকল খবর সবার আগে জানতে অনুলিপির সাথেই থাকুন।

Back to top button

Opps, You are using ads blocker!

প্রিয় পাঠক, আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন, যার ফলে আমরা রেভেনিউ হারাচ্ছি, দয়া করে অ্যাড ব্লকারটি বন্ধ করুন।