প্রতি সেকেন্ডে পৃথিবীর সমান ভর গিলা ব্ল্যাকহোল এর গল্প!

সম্প্রতি একদল জ্যোতিপদার্থবিদ গবেষকেরা সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল একটি ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন।
ব্ল্যাকহোলটি এতটাই দ্রুত বর্ধনশীল যে প্রতি সেকেন্ডে এটি পৃথিবীর সমান বস্তুকে গিলে খাছে। এই অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্যোতিপদার্থবিদরা এই ব্ল্যাকহোলটিকে জে-১১৪৪ নাম দিয়েছেন।
তাঁরা ব্ল্যাকহোলটিকে খুঁজে পাওয়ার ঘটনাকে তুলনা করেন ‘খড়ের গাদায় সুঁই খুঁজে পাওয়া’ প্রবাদে। এছাড়াও তারা ব্ল্যাকহোলটি পর্যবেক্ষণের সকল কাজ করেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি মানমন্দিও হতে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘এই ব্ল্যাকহোলটি বিগত ৯০০ কোটি বছরের মাঝে সবচেয়ে তাড়াতাড়ি বর্ধনশীল এবং এই ব্ল্যাকহোলটির ভর আমাদের সৌরজগতের সূর্যের সমান। অর্থাৎ, সূর্যের মতো ৩০০ কোটি ভর এই ব্ল্যাকহোলের।’
#আরও পড়ুন: হৃদরোগ প্রতিকারে গবেষকরা দেখালো আশার আলো!
দ্য গার্ডিয়ান সংবাদ মাধ্যম তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘এই ব্ল্যাকহোলের চারদিকে গ্যাস বলয় অত্যন্ত উজ্জ্বল। এতটাই উজ্জ্বল যে, ছায়াপথের সব আলোর সম্মিলিত করলে যে উজ্জ্বলতা পাওয়া যায় তারও ৭ হাজার গুন বেশি।’
সর্বপ্রথম জে-১১৪৪ ব্ল্যাকহোলটি দেখতে পান অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষকদের একজন, যার নাম আদ্রিয়ান লুসি। লুসি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে অধ্যয়নরত রয়েছে।
এই ব্ল্যাকহোলটির আবিষ্কারে নেতৃত্ব দেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ক্রিস্টোফার অনকেন। তিনি বলেছেন, ‘গত ৫০ বছরেরও অধিক সময় ধরে এই রকম একটি ব্ল্যাকহোলের সন্ধান করে চলেছিল জ্যোতিপদার্থবিদরা। কিন্তু, আগে তারা যেগুলো পেয়েছিল তা সবই ছিল খুব অনুজ্জ্বল। তবে, আশ্চর্যজনকভাবে এই উজ্জ্বল ব্ল্যাকহোলটিকে কোনো ভাবে এড়িয়ে গেছেন।’
বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন যে, ‘দুইটি বড়ো আকারের গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের একীভূত হওয়ার ফলেই মূলত এই বিশাল ব্ল্যাকহোলটির সৃষ্টি হয়েছে। সাধারনত, অতিরিক্ত ভরের নক্ষত্রগুলোর জ্বালানি ফুরিয়ে বা শেষ হয়ে গেলে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে নিজের ওপরের চুপসে পড়ে; তখনই মূলত এই ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি ঘটে।’
ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি থাকে, যার দরুণ আকারের তুলনায় ভর হয় আশ্চর্যজনক বেশি।
#আরও পড়ুন: মশার কাছে আপনাকে সুস্বাদু করে তোলে যে ভাইরাসগুলো!