অফিসে একটানা বসে কাজ করেন, জেনে নিন সুস্থ থাকবেন যেভাবে
আসুন ১০টি গুরত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য টিপস জেনে নিই, যাতে আপনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ এবং কর্মক্ষম থাকতে পারেন।
আমরা যারা সারাদিন অফিসে বসে কাজ করি, তারা এক ধরনের বসে থাকতে থাকতে নিজেদেরকে অসুস্থ মনে করি। কারণ সারাদিন বসে থাকলে শরীরে রোগের বাসা বাঁধে। দেশে দিন দিন প্রযুক্তি বাড়ছে। কাজের আধুনিকতা বাড়ছে। অফিস মানেই কাজের চাপ। অফিসে আমরা একটানা কাজ করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে অফিসে বসে বসে কাজ করতে হয়। যার কারণে, অল্পদিনেই পিঠ ব্যথা এবং ঘাড় ব্যথা বেড়ে যায়। কোমর-পিঠ ও ঘাড়ের ব্যথা তো এখনকার চাকরিজীবিদের নিত্যসঙ্গী। চিকিৎসকগণ বলেন, একটানা কম্পিউটারের উপর চোখ রাখলে ঘাড় ব্যথা এবং পিঠ ব্যাথা বেড়ে যায়। আর এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে ডাক্তারের দ্বারস্থ হচ্ছে লোকজন। ডাক্তাররা তাদের ব্যথা ভালো করার জন্য রোগীদেরকে দিচ্ছে পেইন কিলার। পেইন কিলার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
তাই আসুন আজ জেনে নেই ডাক্তারের দারস্ত না হয়ে পেইন কিলার থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারি। কারণ, কাজ করতে গিয়ে যতই রোগ হউক। সে কাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে না। সেই কাজ করে আমরা আমাদের জিবীকা নির্বাহ করে থাকি। তাহলে আসুন ১০টি গুরত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য টিপস জেনে নিই, যাতে আপনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ এবং কর্মক্ষম থাকতে পারেন। একটু ঘোরাঘুরি করুন > অফিসে একটানা বসে কাজ না করে। কিছুক্ষণ পর পর বিরতি নিয়ে বাহির থেকে ঘোরাফেরা করে আসোন। তাহলে মন ফ্রেশ হবে। ঘুম ঘুম ভাব চলে যাবে। একটানা বসে কাজ করতে থাকলে আপনার মেরুদন্ডে সমস্যা হতে পারে। মাঝে মাঝে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসার চেষ্টা করুন। চেয়ারে বসে কিছু ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে পারেন।
পানি পান করুন > আমরা অনেক সময় কাজের চাপে থাকলে পানি খেতে ভুলে যাই। তাই আপনার ডেক্সে পানির বোতল নিয়ে বসুন। বোতল খালি হয়ে গেলে অলসতা না করে পানি ভর্তি করে আনুন। আপনি যতক্ষণ অফিসে আছেন, কিছুক্ষণ পরপর পানি পান করুন। এক জায়গায় বসে থাকতে থাকতে শরীরে চর্বি জমে যেতে পারে। তাই এসব থেকে মুক্তি পেতে বেশি বেশি পানি পান করুন। চোখের যত্ন নিন > বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। বেশিরভাগ কাজ এখন অনলাইন ভিত্তিক। যার কারণে সারাদিন আমাদের চোখ পরে থাকে কম্পিউটার মোবাইল ল্যাপটপের উপর। আর এসবের কারণে চোখের সমস্যা,মাথা ব্যথা, ঝাপসা দেখা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই কাজ করার মাঝে মাঝে চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। তাছাড়াও মাঝে মাঝে চোখে মুখে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দিন। চোখে বেশি সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শে চশমা ব্যবহার করুন।
খাবারের দিকে খেয়াল রাখুন > আজেবাজে খাবার থেকে বিরত থাকুন। অফিসে আছেন বলে যখন যা সামনে আসবে তা খেয়ে ফেলবেন তা মোটেও ঠিক নয়। ক্যালোরিযুক্ত খাবার কম খান। মিষ্টি জাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলুন। মাঝেমধ্যে খেলেও খুব সামান্য খাবেন।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান > আপনার ঘুম পরিমাণ মতো না হলে কোন কাজেই মন বসবে না। প্রতিদিন নিয়মিত ছয় সাত ঘন্টা ঘুমাতে হবে। এর চেয়ে কম ঘুমালে আপনার শরীরে অনেক রোগ হতে পারে। রাতে ঘুম না হলে পরের দিন অফিসের কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আর অফিসে গিয়ে ঘুম আসলে তা থেকে মুক্তির জন্য আদার চা, লেবু চা খেতে পারেন। ব্যায়াম করুন > অফিসে বসে কিভাবে আপনি ব্যায়াম করবেন হয়তো আপনি ভাবছেন। অফিসে বসেও ব্যায়াম করা সম্ভব। বিভিন্ন ধরনের আধুনিক ব্যায়াম নিয়ে ইউটিউবে অনেক ভিডিও রয়েছে। ইচ্ছে করলে দেখে শিখে নিতে পারেন। এতে আপনার শরীর প্রতিদিন অন্তত একশো ক্যালোরি বেশি পোড়াতে পারবে। বাইরের খাবার খাবেন না > বাহিরের খাবার স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আমরা অনেক সময় বাসায় নাস্তা না খেয়ে অফিসে তাড়াহুড়া করে চলে যাই। পরে দেখা যায় লাঞ্চ এবং নাস্তা বাহিরেই করা হয় বেশিরভাগ সময়।
আরো পড়ুন: প্লাস্টিকের বোতল পানি পান করলে হতে পারে যেসব ক্ষতি
ফলে আমাদের শরীরে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনি সুস্থ থাকতে যতটা সম্ভব বাহিরের খাবার পরিত্যাগ করুন। সব সময় বাসার খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। বসার ধরন > দীর্ঘক্ষণ সময় ধরে পা ঝুলিয়ে বসে থাকবেন না। এতে আপনার পায়ে ব্যথা হতে পারে। মাঝেমধ্যে পা উপরে তুলে বসুন। আপনার দুই পায়ের পাতা কে আপনার শরীরের দিকে টেনে ১০ মিনিট রেখে দিন। ১০ সেকেন্ড পর দুই পায়ের পাতা সামনের দিকে ঠেলে দিন। আবারও রাখেন ১০ সেকেন্ড। এতে আপনার পায়ের পাতা গুলো ভালো থাকবে। সিঁড়ি ব্যবহার করুন > বর্তমানে বেশিরভাগ অফিসে লিফটের ব্যবহার করে থাকে। আপনি ইচ্ছা করলে লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে পারেন ও নামতে পারেন। যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হবে। অফিস থেকে বাসার দূরত্ব দ্রুত যদি কম হয় রিকশা না নিয়ে পায়ে হেঁটে চলে যান। তাছাড়াও রাতে খাবার-দাবারের পর না ঘুমিয়ে কিছু হাঁটাহাঁটি করুন। এইসব করলে আপনার শরীরের ক্যালরি খুব শীঘ্রই কমবে। এবং খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ সাবলিল হয়ে উঠবেন